—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে রবিবার কলকাতায় ১৫ দফা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে পুলিশের উচ্চ কর্তৃপক্ষের তরফে। তার মধ্যে রয়েছে হাসপাতালে পাহারার ব্যবস্থার কথা। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় আটটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। তার মধ্যে মাত্র দু’টিতে এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার পাহারায় থাকেন। অন্য কেন্দ্রগুলিতে তা-ও নেই। ফলে, কার্যত বিনা নিরাপত্তাতেই কাজ করতে হয় বলে অভিযোগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির কর্মীদের।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জের আলুগড়িয়া ও বারাবনির কেলেজোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। কেলেজোড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাঝে মধ্যেই রোগীর পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের দাবি, এক বছরের মধ্যে তিন বারের বেশি ভাঙচুর হয়েছে। গোলমালের আভাস পেলেই সিভিক ভলান্টিয়ারের দেখা মেলে না। আলুগড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে রোগীর পরিবারের হামলায় কাচ ভেঙে জখম হন দু’জন নার্স। এরপর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবেদনের ভিত্তিতে রানিগঞ্জ থানা থেকে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়।
অন্ডালের খান্দরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ পরিতোষ সোরেন জানান, প্রায় ছ’মাস আগে রোগীকল্যাণ সমিতির তরফে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। একাধিক বার এ নিয়ে মৌখিক আবেদনও করা হয়েছে। জামুড়িয়ার পুর এলাকায় আখলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পঞ্চায়েত এলাকায় বাহাদুরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। আখলপুরের বিএমওএইচ অবিনাশ বেসরা বাহাদুরপুরের দায়িত্বেও রয়েছেন। তিনি জানান, আখলপুরে ছ’জন ও বাহাদুরপুরে ১৪ জন নার্স রয়েছেন। বছরখানেকের মধ্যে হামলার ঘটনা না ঘটলেও, রাতে মাঝে মধ্যে রোগীর পরিবারের সঙ্গে বচসার ঘটনা ঘটে। রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে একাধিক বার পুলিশকে রক্ষী নিয়োগের জন্য জানানো হয়েছে। লিখিত প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।
প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত নিরাপত্তারক্ষী এবং নিয়মিত পুলিশের টহলদারি জরুরি। কেন্দ্রগুলিতে সিসিটিভি থাকলেও, তা ঠিক আছে কি না প্রশাসনের নিয়মিত পরীক্ষা করা দরকার।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্র জানা গিয়েছে, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে অতিরিক্ত রক্ষী নিয়োগের জন্য নির্দেশিকা জারি করে। তাতে জানানো হয়, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীদের নিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর বাহিনী তৈরি করা হোক। জেলার সিএমওএইচ শেখ মোহাম্মদ ইউনুস জানান, চলতি বছরের গোড়ায় জেলা স্বাস্থ্য সমিতির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়। তার পরে সেই প্রস্তাব জেলা প্রশাসন ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কাছে পাঠানো হয়। আসানসোল জেলা হাসপাতালে ২৪ জন, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ১৬ জন এবং প্রতিটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঁচ জন করে রক্ষী নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
ডিসিপি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস জানান, পুলিশ-প্রশাসন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিরাপত্তা নিয়ে সর্বদা সতর্ক। স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলা হয়। জেলা হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প আছে। বাকি প্রস্তাব খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy