Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

তারের জট, বিদ্যুতের খোলা বাক্স নিয়েই চলছে বাজার, ব্যবস্থা নেই আগুন নেভানোর

কাছারি রোডে ওই বইয়ের দোকানে আগুন নেভাতে আড়াই ঘণ্টা লেগেছিল দমকলের দুটি ইঞ্জিনের। ভাঙতে হয় দোকানঘরের দেওয়াল।

কাটোয়া নিচুবাজারের সরু গলিতে প্লাস্টিকের ছাউনি। নিজস্ব চিত্র

কাটোয়া নিচুবাজারের সরু গলিতে প্লাস্টিকের ছাউনি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৩
Share: Save:

কোথাও বেমালুম খোলা বিদ্যুতের বাক্স, কোথাও ঝুলছে কুণ্ডলি পাকানো তার। পরপর দোকানে ঠাসা অধিকাংশ বাজারেই নেই অগ্নিনির্বাপণের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। শুক্রবার বিকেলে কাটোয়ার কাছারি রোডে অগ্নিকাণ্ডের পরে বেসরকারি ও পুর-বাজারগুলির সুরক্ষা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

কাছারি রোডে ওই বইয়ের দোকানে আগুন নেভাতে আড়াই ঘণ্টা লেগেছিল দমকলের দুটি ইঞ্জিনের। ভাঙতে হয় দোকানঘরের দেওয়াল। চোখের সামনে পরিস্থিতি দেখে আতঙ্কিত অনেক ব্যবসায়ীরাই। তাঁদের দাবি, বেশির ভাগ দোকানেই আগুন নেভানোর ব্যবস্থা নেই। ‘ফায়ার লাইসেন্স’ও নেই। আসলে নিয়মের বাধ্যবাধকতা না থাকাতেই খরচসাপেক্ষ ওই লাইসেন্স নিতে ‘অনীহা’ দাবি পুরসভার।

পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ‘ট্রেড লাইসেন্স’ বাধ্যতামূলক হলেও ‘ফায়ার লাইসেন্স’ নয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের বোঝা উচিত, আগুন লাগলে পাশাপাশি অনেক দোকানে ক্ষতি হতে পারে। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেসরকারি বাজারগুলিতে নজরদারি চলছে। বেহাল নিউ মার্কেটটি অনেক দিন ধরে পুরসভাকে হস্তান্তর করতে চাইছেন না মালিক। ওটা পুরসভা পেলে ঢেলে সাজা সম্ভব হবে।’’ দোকানিদের নিজেদের সুরক্ষায় ফায়ার লাইসেন্স রাখা উচিত, বলেও জানান তিনি।

কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডের নেতাজি পুর-বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খোলা বিদ্যুতের বাক্স। তা থেকে ইতিউতি বেরিয়ে রয়েছে তার। বাজারের সিলিং থেকে ঝোলা তার যেন মাথায় ঠেকে যাবে! আবার বড়বাজারের নিউ মার্কেটের টিনের আচ্ছাদন ফুটো হয়ে যাওয়ায় অস্থায়ী ভাবে চট, প্লাস্টিকের চাদর দিয়ে দোকান ঢেকেছেন ব্যবসায়ীরা। কোনও ভাবে আগুন লাগলে তা সহজেই ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অগ্নি নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই বলে জানান বিক্রেতা সুরজ শেখ, কিশোর দাসেরাই। ওই বাজারের আশপাশে জলের উৎস বলতে ছিল মিঁয়াপুকুর। তা-ও ‘ভরাট’ হয়ে যাওয়ায় ভরসা ভাগীরথী। কিন্তু সেখান থেকে জল এনে আগুন নেভাতে নেভাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নিচুবাজারে আবার সরু রাস্তার দু’ধারে বাজার বসায় সকাল থেকেই যানজট লেগে থাকে। ফলে আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢোকাই মুশকিল। কাছারি রোডে দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারলেও ঘোরানোর জায়গা নেই। এ ছাড়া, কাছারি রোডের হাজি নওয়াজ, দীনবন্ধু মার্কেটে ছাদ নেই। অস্থায়ী টিনের ছাউনি দিয়ে চলে বাজার। যত্রতত্র কুণ্ডলি পাকিয়ে থাকে বিদ্যুতের তার। স্টেশনবাজার থেকে গোয়েঙ্কা মোড় অবধিও প্রায় ছ’শো দোকানের সামান্য কয়েকটির লাইসেন্স আছে বলে জানা যায়।

মহকুমার দমকল বিভাগের কাছেও কতগুলি দোকানের ফায়ার লাইসেন্স রয়েছে সে তথ্য নেই। মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির মুখপাত্র বিদ্যুত নন্দীর দাবি, ‘‘ছোটখাটো দোকানিদের পক্ষে ফায়ার লাইসেন্স রাখা হয়ত সম্ভব হয় না। তবে বেশির ভাগ বাজারে জেনারেটর, বিদ্যুৎ ও কেব্‌লের খোলা তার জট পাকিয়ে থাকে। ওগুলি রীতিমতো বিপজ্জনক।’’ বাজারের মালিক বা পুরসভাকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy