Advertisement
২৫ জানুয়ারি ২০২৫

বিজয়নগরের খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাল পুলিশ, শম্পা বললেন, ‘আসতে চায়নি নয়ন’

দুই অভিযুক্ত শম্পা ও নয়নকে কাটোয়ার বিজয়নগরের পশ্চিম পালপাড়ায় নিহতের দু’কামরার বাড়িতে আনে পুলিশ।

ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য বিজয়নগরে নিহতের বাড়িতে নিয়ে আসা হল শম্পা মণ্ডল ও নয়ন পালকে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য বিজয়নগরে নিহতের বাড়িতে নিয়ে আসা হল শম্পা মণ্ডল ও নয়ন পালকে। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০৫:১৬
Share: Save:

রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ প্রথম ফোন। বেজে যায়। ভোর ৪টেয় ফের ফোন। ফোন কাটোয়ায় নিহত সুজিত মণ্ডলের খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধৃত নয়ন পালকে। সুজিতের স্ত্রী ধৃত শম্পার সেই ফোন পেয়েই সুজিতবাবুর বাড়িতে আসেন নয়ন। শনিবার খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময়ে এমনই দাবি করেছেন শম্পা, জানান তদন্তকারীরা।

এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ দুই অভিযুক্ত শম্পা ও নয়নকে কাটোয়ার বিজয়নগরের পশ্চিম পালপাড়ায় নিহতের দু’কামরার বাড়িতে আনে পুলিশ। বাড়িতে ঢোকার দু’টি দরজা। রাস্তার উপরে থাকা বাড়ির মন্দিরের সামনে মূল দরজা। অন্যটি একটু আড়ালে, মূল দরজা থেকে বাঁ দিকে ছাদে ওঠার সিঁড়ির নীচে। সে দিকে আঙুল তুলেই এ দিন ধৃতেরা জানান, ‘গোপনীয়তা’ রক্ষার জন্য ওই অত্যন্ত ছোট দ্বিতীয় দরজাটি দিয়েই বাড়িতে ঢোকেন নয়ন।

এর পরেই হয় ঘটনার পুনর্নির্মাণ। পুলিশ জানায়, শম্পা দেখিয়েছেন তিনি কী ভাবে ঘরের মেঝেয় ঘুমন্ত স্বামীর হাত-পা চেপে ধরে রাখেন। আর নয়ন দেখান, কী ভাবে তিনি বালিশ চেপে ধরেন সুজিতবাবুর মুখে। তবে এ দিন নয়নকে খানিক ‘আড়াল’ করার চেষ্টা করেন শম্পা, দাবি পুলিশের। পুলিশকে শম্পা বলেন, ‘‘নয়ন তো আসতে চায়নি। ওকে বলি, যে ও না এলে মরে যাব। তাই ও আসে। বর মারধর করত। আর সহ্য হয়নি।’’ নয়নও পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমাকে জোর করে ও ডেকেছিল। আমি যখন আসি, তখন তো সুজিতের শেষ অবস্থা। এখন মনে হচ্ছে, বিরাট পাপ কাজ করেছি!’’

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর নয়ন গৃহশিক্ষকতার পাশাপাশি চাকরির জন্যও পরীক্ষা দিচ্ছিলেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানা যায়। নয়নের দাবি, তিনি আপার প্রাইমারি টেট পাশও করেন। কিন্তু মাসখানেক ধরে পালিয়ে গিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন শম্পা, দাবি নয়নের।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আঁচ করে ‘গৃহশিক্ষক’ নয়নকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করেন সুজিতবাবু। তবে পড়শিদের একাংশ পুলিশকে জানান, প্রায় দিনই সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সুজিবাবুর বাড়িতে ঢুকতে দেখা যেত নয়নকে। সুজিতবাবু বাড়ি ফিরতেন ৯টার আশপাশে।

পুলিশ জানায়, ওই বাড়ি থেকেই এ দিন খুনে ব্যবহৃত বালিশ, কিছু ঘুমের ওষুধ ও চপ্পল উদ্ধার করা হয়েছে। নয়নকে তাঁর বাড়িতেও এ দিন নিয়ে যায় পুলিশ। নয়নের কাকিমা কল্পনাদেবীর দাবি, ‘‘নয়ন রাতে বাড়িতেই থাকত। ওই বাড়ির বাচ্চারা পড়তে আসত আমাদের ঘরে। শম্পার সঙ্গে নয়নের কোনও সম্পর্ক নেই। ও এমন কাজ করতেই পারে না।’’ তবে নিহতের বাবা জ্যোতিষবাবুর দাবি, ‘‘ছেলের খুনিরা শাস্তি পাক, এটাই এখন চাওয়া।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy