Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

ঘুমের ওষুধ কোথা থেকে, খোঁজ পুলিশের

শম্পা জেরায় পুলিশকে জানায়, বছর তিনেক আগে সাংসারিক অশান্তির জেরে বারদুয়েক কীটনাশক খান।

এই দোকান থেকে ওষুধ কেনা হত বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

এই দোকান থেকে ওষুধ কেনা হত বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০৩:০৭
Share: Save:

যে ‘ঘুমের ওষুধ’ চপে মিশিয়ে কাটোয়ার সুজিত মণ্ডলকে (৩৮) খুনের অভিযোগ উঠেছিল, সেই ‘ওষুধ’ নিয়েই এ বার নতুন তথ্য হাতে এসেছে বলে জানালেন কাটোয়া থানার তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, জেরায় নিহতের স্ত্রী শম্পা তাঁদের কাছে জানিয়েছেন, তাঁর ‘বন্ধু’ নয়ন পালই এক পরিচিতের দোকান থেকে ওই ওষুধ কিনে এনেছিলেন! তবে এমন ওষুধ আগে শম্পা নিজেও কিনেছেন।

ধৃত শম্পা ও তাঁর ‘প্রেমিক’ নয়নকে দিয়ে কাটোয়ার বিজয়নগর পশ্চিম পালপাড়ার ওই ঘটনার এ দিন পুনর্নির্মাণ করায় পুলিশ। সেই সময়েই পুলিশ জানতে পারে, নিহতের কোন দিকের ঘরের তাক ও টেলিভিশনের উপরে রাখা থাকত ঘুমের ওষুধের বেশ কয়েকটি পাতা। মূলত ‘০.৫’ মিলিগ্রাম মাত্রার গেরুয়া ও গোলাপি রঙের দু’রকমের ঘুমের ওষুধ কিনতেন নয়ন, দাবি পুলিশের। তদন্তকারীদের দাবি, গত ছ’মাস ধরে শম্পা ফোন করে নয়নের কাছে ওই ওষুধ চাইতেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কাটোয়া-করুই রাস্তার বিজয়নগর ফুটবল ক্লাব মোড়ে একটি ওষুধের দোকানের মালিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব রয়েছে নয়নের। তাই কোনও রকম ‘প্রেসক্রিপশন’ ছাড়াই ঘুমের ওষুধ পেতেন নয়ন। এ দিন নয়নকে ওই ওষুধের দোকানেও নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও ওই দোকান মালিক পুলিশকে বলেন, ‘‘এমন কোনও ওষুধ দোকানে রাখি না। প্রায় দিনই দোকানই খুলি না। এক সপ্তাহ আগে শেষ দোকান খুলেছিলাম।’’

শম্পা জেরায় পুলিশকে জানায়, বছর তিনেক আগে সাংসারিক অশান্তির জেরে বারদুয়েক কীটনাশক খান। তিনি বেঁচে গেলেও ডাক্তার তাঁকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কথা জানিয়ে প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। সেই পুরনো প্রেসক্রিপশন দেখিয়েই তিনিও কখনও ওই ওষুধের দোকান থেকে, কখনও বা কাটোয়ার বিভিন্ন ওষুধের দোকান থেকে ওই দু’ধরনের ঘুমের ওষুধ কিনতেন।

শনিবারও নিহতের বাড়ি থেকে ঘুমের ওষুধের বেশ কিছু পাতা উদ্ধার করে পুলিশ। সুজিতের বাবা জ্যোতিষবাবুর অভিযোগ, ‘‘ছেলেকে তো বটেই, এমনকি, নাতি ও নাতনিকেও ঘুমের ওষুধ খাওয়াত বৌমা। নাতিও মাঝেসাঝে কাটোয়া থেকে মায়ের কথামতো ঘুমের ওষুধ নিয়ে যেত।’’

চিকিৎসকেরা জানান, ওই দু’রকমের ঘুমের ওষুধের জেনেরিক কম্পোজ়িশন হল ‘অ্যালপ্রাজোলাম’। ০.২৫, ০.৫ ও ১ এই তিন মাত্রার ওই দু’ধরনের ওষুধ বেশি সংখ্যায় ব্যবহার করলে মানুষ সাময়িক ভাবে ঝিমিয়ে বা ঘুমিয়ে পড়ে। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাটোয়া শাখার সম্পাদক শমীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রেসক্রিপশন ছাড়া এমন ওষুধ বিক্রি অবৈধ। এর ফলে উক্ত দোকানের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।’’ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দোকানদারকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানায় পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy