অনাময় হাসপাতালের ভিতরে জমায়েত বিক্ষোভকারীদের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
ঠিকদারের মাধ্যমে উপযুক্ত কর্মীকে নিয়োগ করা হয়নি, এই অভিযোগ তুলে তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র পতাকা হাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি শাখা ‘অনাময়’ হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাল কিছু লোক। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই বিক্ষোভের জেরে তটস্থ হয়ে পড়েন চিকিৎসক-কর্মী থেকে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের অনেকে। পরিষেবাও বিঘ্নিত হয় বলে হাসপাতাল সূত্রের দাবি। পরে শক্তিগড় থানার পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘অনাময়ের ভিতরে গিয়ে বিক্ষোভকারীরা ঠিক করেননি। প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলব।’’ অনাময় হাসপাতালের সুপার শকুন্তলা সরকার বলেন, ‘‘পুরো ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি হালকা ভাবে নিচ্ছি না।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উপ-অধ্যক্ষ প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ঘটনা জানার পরে, সবার সঙ্গে কথা বলেছি। সতর্কও করা হয়েছে।’’ যদিও আইএনটিটিউসি-র জেলা সভাপতি পাপ্পু আহমেদের দাবি, ‘‘বিক্ষোভকারীরা সংগঠনের কেউ নয়। অনুমোদন ছাড়াই পতাকা নিয়ে কয়েকজন হাসপাতালে গিয়েছিল।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ আচমকা এক দল লোক তৃণমূল এবং আইএনটিটিইউসি-র পতাকা হাতে সোজা সুপারের ঘরের সামনে পৌঁছে যায়। সেখানে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ চলে। আর এক দল বাইরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ঠিকাদারের অধীনে হাসপাতালে কাজ করার সময়ে গত ২৫ মার্চ উত্তম দে নামে এক কর্মীর মৃত্যু হয়। সে জায়গায় উত্তমবাবুর বড় ভাইকে কাজ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। কিন্তু তা না মেনে অন্য এক জনকে নিয়োগ করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিক্ষোভের সময়ে বহির্বিভাগ ও ভিতরে চিকিৎসা করছিলেন ১৪ জন ডাক্তার। এই হাসপাতালে মূলত শিরা ও হৃদরোগের চিকিৎসা হয়। এক ডাক্তারের কথায়, ‘‘এখানে আসা সব রোগীই গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালে ৭০টি শয্যাতেই রোগী ভর্তি। বহির্বিভাগেও রোগীরা ছিলেন। আমরা তো ভয় পেয়েইছি। রোগী বা তাঁদের আত্মীয়েরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।’’ বিক্ষোভকারীদের একাংশ চিকিৎসকদের ঘিরে রেখেছিলেন, অভব্য আচরণ করছিলেন বলেও অভিযোগ।
এ দিন এই ঘটনার আঁচ এসে পড়ে সংস্কৃত লোকমঞ্চেও। সরকারি এক অনুষ্ঠানের পরে, মন্ত্রী স্বপনবাবুকে ঘিরে শ্রমিক সংগঠনের কিছু কর্মী-সমর্থক ক্ষোভ জানাতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগের তির ছিল মূলত বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিকের দিকে। গোটা ঘটনায় বিধায়কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। কিন্তু এক সঙ্গে এত জন জড়ো হয়ে ক্ষোভ জানানোয় বিরক্তি প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কথা সব শুনব। কিন্তু এ ভাবে অভিযোগ করতে এসেছেন কেন?’’
পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘মানবিক কারণে ওঁদের আর্জির বিষয়টি দেখব।’’ বর্ধমান উত্তর বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আমার কোনও ভূমিকাই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy