—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল মেমারি ২ ব্লকে। শুক্র ও শনিবার রাতে ব্লকের বোহার ১ পঞ্চায়েতের বিটরা গ্রামে পরস্পরের বিরুদ্ধে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলের দু’টি পক্ষ। গত দেড় মাসের মধ্যে এই ব্লকে শাসক দলের দ্বন্দ্বের ঘটনা বার তিনেক প্রকাশ্যে এসেছে। এ নিয়ে দলীয় নেতৃত্বও বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না হালদার টুডুর অনুগামী বলে পরিচিত অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অনাথবন্ধু রায়ের নেতৃত্বে বিটরা গ্রামে শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একটি মিছিল হয়। অভিযোগ, সেই মিছিলে ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জিন্নাত আলির অনুগামীরা হামলা চালান। মারধরে তিন জন জখম হন। অভিযোগ, পাল্টা আক্রমণও করা হয়। শনিবার থানায় অভিযোগ করে দু’পক্ষ। এর পরে আবার জিন্নাতদের অভিযোগ, শনিবার রাতে অনাথবন্ধুর লোকজন গ্রামে ‘বোমাবাজি’ করে।
ময়নার অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার রাতে ওই গ্রামে অনাথবন্ধুর নেতৃত্বে মোটরবাইক মিছিল হচ্ছিল। তখন আমাদের দলেরই কয়েক জন হামলা চালায়। তাতে অনাথবন্ধু-সহ তিন জন জখম হন। রাহুল শেখ নামে এক জনকে রাস্তায় মারধর করা হয়েছে।’’ উপপ্রধান জিন্নাতের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ওরা এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। তোলাবাজি করছে। সন্ধ্যার পরে বোমাবাজি করছে। শনিবার রাতে একটি বোমা ফাটানোর সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামের লোকজন বাড়ি ছেড়ে বেরোলে ভয়ে ওরা পালিয়ে যায়।’’
বিটরায় যে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বাধে, তারা এলাকার বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর অনুগামী বলেই পরিচিত। সম্প্রতি তিনটি গোলমালের ঘটনাই সিদ্দিকুল্লা অনুগামীদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বলে তৃণমূলের নানা সূত্রের দাবি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না ৫ ডিসেম্বর কুচুট পঞ্চায়েতে গিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানান, ঠিকাদারেরা সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন। সে জন্য তাঁকে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। থানায় দলের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। কুচুট পঞ্চায়েতের প্রধান মদনমোহন দাস ময়নার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত অফিসে লোকজন নিয়ে গিয়ে হামলা চালানোর পাল্টা অভিযোগ করেন। এর সপ্তাহ তিনেক পরেই, ২৬ ডিসেম্বর সাতগেছিয়া ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সুশীলা কিস্কুর সঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্যদের প্রকাশ্যে হাতাহাতি হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ জানান।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বিটরা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ সূত্রের দাবি, বিটরা গ্রামে বাইক মিছিলে যোগ দিতে যেতে না দেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়েছিল। পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে। শনিবার রাতে বোমাবাজির খবর পেয়ে তদন্ত করে দেখা গিয়েছে, তা গাছবোমা। মেমারি ২ ব্লকের একটি বড় অংশ মন্তেশ্বর বিধানসভার মধ্যে পড়ে। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী মন্তেশ্বরের বিধায়ক হওয়ার পরে স্থানীয় তৃণমূলে আলাদা গোষ্ঠী তৈরি হয় বলে অভিযোগ। প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মহম্মদ ইসমাইল শেখ ও তাঁর অনুগামী বলে পরিচিতেরা পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পাননি। একতরফা ভাবে সিদ্দিকুল্লার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দলের ব্লক সভাপতি হরিসাধন ঘোষের লোকজন টিকিট পেলেও, বার বার দ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে জেলা তৃণমূলের মধ্যেও। সিদ্দিকুল্লাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বাইরে রয়েছি। এ নিয়ে পরে কথা বলব।’’ হরিসাধনের বক্তব্য, ‘‘সমন্বয়ের অভাব হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। ঠিক কী কারণে এই গোলমাল, তা জানার জন্য বৈঠক করার কথা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy