ফের তৃণমূলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে।
ব্লক সভাপতির উপস্থিতিতে বুধবার কালনা ১ ব্লকের ন’টি পঞ্চায়েতে অঞ্চল কমিটি ঘোষণা করে তৃণমূল। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই চারটি অঞ্চল কমিটির নামের ভিন্ন একটি তালিকা ছড়িয়ে পড়ল সামাজিক মাধ্যমে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ঘটনায় তৃণমূলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে। কালনার বিধায়ক তথা তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগের দাবি, ‘‘ব্লক সভাপতি অঞ্চল সভাপতি ঠিক করেন। তিনি জেলা সভাপতির অনুমতি নিয়ে কালনা ১ ব্লকের ন’টি অঞ্চলের সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী অঞ্চল সভাপতিরা অঞ্চল কমিটি গঠন করেন। যাঁরা অঞ্চল কমিটি নিয়ে বিভ্রান্ত তৈরি করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে।’’
মাস চারেক আগে কালনা ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সভাপতিদের নাম ঘোষণা করে তৃণমূল। পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের ছয় পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতিকে বদলানো হয় সেই সময়। এর পর থেকেই বাড়তে শুরু করে অন্তর্কলহ। বুধবার কালনা ১ ব্লক সভাপতি শান্তি চাল রানীবন্ধ এলাকায় অঞ্চল কমিটিগুলির কথা ঘোষণা করেন। সেখানে সই ছিল ব্লক সভাপতি এবং অঞ্চল সভাপতিদের। বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে বেলা ১১টার পরে দেখা যায় সুলতানপুর, বেগপুর, কাঁকুরিয়া এবং আটঘড়িয়া সিমলন পঞ্চায়েত এলাকায় অঞ্চল কমিটির নামের তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে। যার সঙ্গে ব্লক সভাপতির ঘোষণা করা কমিটির মিল নেই। সুলতানপুর, বেগপুর এবং কাঁকুরিয়া এলাকায় অঞ্চল কমিটির ওই তালিকায় সাক্ষর রয়েছে গত বারের ঘোষিত অঞ্চল সভাপতিদের। তবে ব্লক সভাপতির সই নেই। দিনভর চাপানউতোর চলে এই নিয়ে।
ব্লক সভাপতি যে অঞ্চল কমিটির কথা ঘোষণা করেছে তাকে মান্যতা না দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণার কথা স্বীকার করেছেন বেগপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা অসীমকুমার মিত্র। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে, এলাকার বিধায়কের সই ছাড়া পঞ্চায়েত সভাপতিদের যে তালিকা প্রকাশ করেছেন ব্লক সভাপতি, তা ত্রুটিপূর্ণ বলে জেনেছি। দলীয় যে কোনও কর্মসূচিতে আমাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত সভাপতি এখনও আছি ধরে নিয়েই অঞ্চল কমিটির তালিকা তৈরি করা হয়েছে।’’ সুলতানপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা রেফাতুল্লা মোল্লাও বলেন, ‘‘আমি দীর্ঘ দিন ধরে এই পঞ্চায়েতের সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছি। ব্লক সভাপতি কোনও আলোচনা না করে অন্য একটি নাম ঘোষণা করেছেন। দিদির দূত-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি দল আমাদের মাধ্যমেই করে। ফলে অঞ্চল সভাপতি রয়েছি ধরে নিয়ে তালিকা তৈরি করেছি। তালিকা সমাজ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।’’
ব্লক সভাপতির অবশ্য দাবি, যে যাই বলুক সামাজিক মাধ্যমে ঘোরা তালিকা অবৈধ এবং বিভ্রান্তিকর। তিনি জানান, ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর জেলা সভাপতির নির্দেশে এই ব্লকের ন’টি পঞ্চায়েতের সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়। তার মধ্যে ছ’টি এলাকায় সভাপতি হিসাবে নতুন মুখ বাছা হয়েছে। কৃষ্ণদেবপুর, বাঘনাপাড়া এবং ধাত্রীগ্রামে আগের অঞ্চল সভাপতিরাই দায়িত্ব পেয়েছেন। সভাপতির দাবি, ‘‘দলের কিছু কর্মী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সামাজিক মাধ্যমে অঞ্চল কমিটির তালিকা প্রকাশ করে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।’’
বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি (কাটোয়া) ধনঞ্জয় হালদারের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলে গোষ্ঠীকলহ নতুন নয়। পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসবে, তৃণমূলের ফাটল তত সামনে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy