চিত্তরঞ্জনের একটি জলাধারে পরিযায়ী পাখিদের ওড়াউড়ি। নিজস্ব চিত্র।
পরিযায়ী পাখিদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে নানা ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লিউ)। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বিষয়ে পাখি বিশারদদের মতামত নিয়ে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি কাজও সে অনুযায়ী শুরু হয়েছে।
সিএলডব্লিউ এবং চিত্তরঞ্জন রেল শহরের বাসিন্দাদের জলের চাহিদা মেটাতে এলাকায় সাতটি বিশাল আকারের জলাধার রয়েছে। প্রতি বছরই নভেম্বরের শেষ থেকে মার্চ পর্যন্ত এই জলাধারগুলিতে পরিযায়ী পাখিদের ভিড়ে জমে। পাখি দেখতে শিল্পাঞ্চল তো বটেই, বাইরে থেকেও পাখিপ্রেমীরা শহরে আসেন।
বিষয়টি নজরে রেখেই রেল মন্ত্রক গত বছর কারখানা কর্তৃপক্ষকে ‘প্রকৃতি সংরক্ষণের’ বিষয়ে পরামর্শ দেয়। এর পরেই, পরিযায়ী পাখিদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। কারখানার ডিজিএম অলোক কুমার বলেন, “চিত্তরঞ্জনের জলাধারগুলি এবং এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ পরিযায়ী পাখিদের খুবই পছন্দের এলাকা। তাই শহরকে প্রকৃতিনির্ভর করে তুলতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
কারখানা কর্তৃপক্ষ হিসাবে, গত কয়েক বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই জলাধারগুলিতে ফি বছর কম-বেশি ৭২ হাজার পরিযায়ী পাখির ভিড় জমে। রাঙ্গামুড়ি (রেড ক্রেস্টেড পোচার্ড), নর্দান পিঙ্কটেল, গ্যাঙ্গেরি, গ্রেল্যাক গুজ়-সহ প্রায় ১০১ ধরনের প্রজাতির পাখি এখানে আসে বলে পাখি বিশারদদের সূত্রে
জানা গিয়েছে।
কী ভাবে পাখিগুলির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে? কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, কৃত্রিম উপায়ে পাখিদের বাসা তৈরি করা হচ্ছে। পাখিদের ডিম পাড়ার আদর্শ পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। জলাধার লাগোয়া, ফতেপুর থেকে কারখানা যাওয়ার রাস্তা ও গাঁধী খামার লাগোয়া পাম অ্যাভিনিউতে বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। কর্নেল সিংহ পার্কে পিকনিক বন্ধ করা হয়েছে। শব্দ-দূষণ রোধে জলাধার লাগোয়া এলাকায় সব ধরনের বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
শিল্পাঞ্চলের পাখি বিশারদ তথা পরিযায়ী পাখিদের বিষয়ে কাজ করা সংগঠন ‘ওয়াইল্ড টাস্কার্স’-এর সভাপতি সপ্তর্ষি মুখোপাধ্যায় জানান, এই ধরনের পাখিরা কোলাহল মুক্ত স্থান ও শান্ত জলে থাকতে পছন্দ করে। রেল শহরের এই জলাধারগুলি সংরক্ষিত এলাকায় হওয়ায়, এই ধরনের পরিবেশ রয়েছে। তিনি বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এর ফলে, প্রকৃতি সুন্দর হবে।” সপ্তর্ষি জানান, পরিযায়ী পাখিদের সংরক্ষণের জন্য তাঁরা প্রতিটি জলাধারের কিছু অংশে কচুরিপানা চাষ করার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, কচুরিপানা জলে থাকা শিসা ও অ্যালুমিনিয়াম পরিশোধন করে পাখিদের বসবাস যোগ্য করে। কচুরিপানার গোড়ায় প্রচুর পোকা জন্মায়, সেই পোকা খেয়ে পাখিরা খিদে মেটায়। কচুরিপানার ঝোপে পাখিরা বাসা তৈরি করে। রাতে জল থেকে উঠে বাসায় ফেরে এবং ডিম পাড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy