বেহাল দুর্গাপুরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য বাজেট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেন জেলার শিল্পোদ্যোগীদের একাংশ। খনি, শিল্পাঞ্চলের জন্য এ বারের বাজেটে কার্যত কিছুই নেই বলে দাবি বিরোধীদেরও। যদিও শাসক দল, তৃণমূল এই অভিযোগ মানতে চায়নি।
শিল্পপতিদের একাংশের অভিযোগ, শিল্পতালুকগুলির রাস্তা বেহাল। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ইস্পাত অনুসারী শিল্প হিসেবে এক সময়ে রমরমা ছিল ক্ষুদ্র ইঞ্জিনিয়ারিং, ফেব্রিকেশন, রিফ্যাক্ট্রি শিল্পের। ১৯৬৮-তে ‘দুর্গাপুর রুরাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল’ প্রজেক্টের আওতায় প্রায় ১২ একর জমিতে সগড়ভাঙায় গড়ে ওঠে আরআইপি প্লট। পরে, আরআইপি প্লটের কাছে রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্পোন্নয়ন নিগম আরও একটি শিল্পতালুক গড়ে তোলে। দু’জায়গাতেই রাস্তাঘাট, জল, পথবাতি, নিকাশি প্রভৃতি পরিকাঠামো নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, এক সময়ে এখানে কারখানার সংখ্যা ছিল শ’খানেক। এখন কোনও রকমে অর্ধেক চালু রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ২০ থেকে ২৫টি ভাল চলছে। বাকিগুলি ধুঁকছে। ‘দুর্গাপুর স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনে’র প্রাক্তন সভাপতি সুব্রত লাহা বলেন, “শিল্পতালুকগুলি নানা সমস্যায় জর্জরিত। পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কোনও চেষ্টা নেই। বাজেটেও তার কোনও উল্লেখ দেখতে পেলাম না।”
জানা গিয়েছে, ২০১৬-এ বীরভানপুরের বন্ধ উড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রায় সাড়ে ১৩ একর জায়গায় গড়ে ওঠে ‘দুর্গাপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ফেজ়-২’। সেখানকার পরিকাঠামো নিয়েও বিস্তর সমস্যা রয়েছে বলে দাবি শিল্পোদ্যোগীদের একাংশের। রাতুরিয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকে দেখা গেল, রাস্তা বেহাল। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আয়রন অ্যান্ড স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সভাপতি শঙ্করলাল আগরওয়াল বলেন, “ইস্পাত ও ইস্পাত অনুসারী শিল্পের অবস্থা খুব খারাপ। গত কয়েক বছরে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিছু কারখানা নামেই চালু রয়েছে। বিভিন্ন শিল্পতালুকের পরিকাঠামোও বেহাল।” যদিও আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, শিল্পতালুকের রাস্তাঘাট সংস্কারের জন্য কিছু প্রকল্পের অনুমোদন এসে গিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। ধাপে ধাপে সব শিল্পতালুকেই পরিকাঠামোর উন্নয়নের কাজ হবে।
বাজেট নিয়ে রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়েছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “পর পর কারখানা বন্ধ হচ্ছে। অথচ, শিল্প গড়ার নাম করে প্রতি বছর শিল্প সম্মেলন করে মোচ্ছব হচ্ছে। নতুন শিল্প কোথায়?” তাঁর অভিযোগ, বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা খোলার বিষয়েও কেন্দ্রের উপরে চাপ সৃষ্টি করার সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না রাজ্য সরকারের। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের মন্তব্য, “বর্তমান রাজ্য সরকার সব দিক থেকে দিশাহীন। দুর্নীতি ও কাটমানি ছাড়া আর কোনও দিকে মন নেই। আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের চরম সর্বনাশ করেছে এই সরকার।” বিরোধীদের অভিযোগে আমল দেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “পানাগড়ে বিশাল শিল্পতালুক গড়ে উঠেছে। শিল্পপতিদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। দুর্গাপুরে নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা হয়েছে। বিরোধীরাই দিশাহীন। তাই শুধু সমালোচনার জন্যই সমালোচনা করেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy