এই ইউনিট নিয়ে বিতর্ক। ফাইল চিত্র
বড় কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে চিনের প্রযুক্তির সহযোগিতা দরকার হয় ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’-এর (ডিপিএল) সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী সপ্তম ইউনিটটির। লাদাখে ভারত-চিন সংঘাতের পরে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সে দিকে তাকিয়ে রাজ্য সরকারের সংস্থা ডিপিএল-এর কর্মীরা।
সপ্তম ইউনিটটি তৈরি করে চিনের সংস্থা ‘ডং ফ্যাং ইলেকট্রিক্যাল কর্পোরেশন’। ইউনিটটি চিন থেকে ইঞ্জিনিয়ার ও কারিগরি বিভাগের লোকজন এসে তৈরি করেছিলেন। খরচ হয় প্রায় ১,৩৫০ কোটি টাকা। ২০০৮-এর ৩১ মার্চ ইউনিটটির উদ্বোধন করেন রাজ্যের তৎকালীন বিদ্যুৎমন্ত্রী প্রয়াত মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডিপিএল-এর কর্মীরা জানান, বড় কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে, অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে চিনের প্রযুক্তির সাহায্য। ফলে, এই মুহূর্তে কোনও ত্রুটি দেখা দিলে, কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে, সে দিকে নজর দেওয়ার কথা জানান কর্মী ও আধিকারিকেরা।
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে উৎপাদন হয় সপ্তম ও অষ্টম ইউনিটে। সপ্তম ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৩০০ মেগাওয়াট। অষ্টম ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ২৫০ মেগাওয়াট। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে ‘পারফর্ম্যান্স গ্যারান্টি টেস্ট’ (পিজি টেস্ট) করতে হয়। এই পরীক্ষায় ইউনিটের প্রকৃত ক্ষমতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। কিন্তু ‘পিজি টেস্ট’ না করেই ২০০৮-এর ৩০ এপ্রিল থেকে সপ্তম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়।
ডিপিএল সূত্রে জানা যায়, সপ্তম ইউনিটটি নিয়ে আগে বিপত্তি ঘটেছে। ২০১০-এর ৩০ মে ‘পিজি টেস্ট’ চলাকালীন আচমকা ইউনিটের টার্বাইনে আগুন ধরে যায়। বন্ধ হয়ে যায় সপ্তম ইউনিটটি। সেই সময়ে চিনের সংস্থাটি জানায়, সে দেশে তাদের কারখানায় নিয়ে গেলে তবেই ‘টার্বো জেনারেটর’ মোরামত করা সম্ভব। দেশের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও সুরাহা না পেয়ে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী প্রয়াত নিরুপম সেনের উদ্যোগে শেষমেশ জাহাজ ভাড়া করে টার্বো জেনারেটর চিনে পাঠানো হয়। প্রায় এক বছর পরে সেটিকে ফেরানো হয়। আরও মাস তিনেক পরে শেষ পর্যন্ত ফের উৎপাদন শুরু হয় ওই ইউনিটে। মেরামতির জন্য খরচ হয় প্রায় ২১ কোটি টাকা। তা ছাড়া, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকারও বেশি লোকসান হওয়ার কথা জানিয়েছিল ডিপিএল।
তবে এর পরে আর বড় কোনও গোলমাল হয়নি ইউনিটটিতে। কিন্তু এই মুহূর্তে সমস্যা হলে কী হবে, তা নিয়ে ভাবনায় কর্মীদের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মী বলেন, ‘‘সংস্থার মূল কাজ এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন। কোনও রকমে আমাদের চাকরি টিকে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তেমন কিছু হলে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।’’ আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাস বলেন, ‘‘সপ্তম ইউনিট নিয়ে অতীত অভিজ্ঞতা মোটেও ভাল নয়। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক।’’
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তম ইউনিটের মতো সমস্যা এড়াতে অষ্টম ইউনিট গড়ার দায়িত্ব পায় দেশীয় সংস্থা ‘ভেল’। সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, ‘‘চিন থেকে টার্বো জেনারেটর মেরামত করে আনার পরে আর বড়সড় কোনও গোলমাল হয়নি। ছোটখাটো যা হয়েছে, আমাদের ইঞ্জিনিয়ারেরাই সারিয়েছেন। তবে ফের যদি তেমন কিছু হয়, তা হলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী এগোতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy