— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
প্রায় ২০ ঘণ্টা তল্লাশি। অবশেষে বুধবার মধ্যরাতে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা লোহা ব্যবসায়ী সোহরাব আলির বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান আয়কর আধিকারিকেরা। বুধবার ভোর থেকে সোহরাবের বাড়ি, দফতর-সহ আসানসোলের অন্তত আট জায়গায় তল্লাশিতে নামে আয়কর দফতর। তার মধ্যে কিছু জায়গায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি তল্লাশি।
বুধবার ভোর ৫টা নাগাদ সোহরাবের বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দফতর। রাত ১২টায় শেষ হয় তল্লাশি। ইমতিয়াজের ঘনিষ্ঠ সুজিত সিংহের বাড়ি থেকে আয়কর দফতরের অধিকারিকেরা বেরিয়ে যান বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে নাগাদ। সূত্রের খবর, ব্যবসা সংক্রান্ত বেশ কিছু কাগজপত্র, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি নিয়ে গিয়েছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা। এখনও অভিযান চলছে ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ আহমেদ খান এবং ইমতিয়াজের হিসাবরক্ষক পঙ্কজ আগরওয়াল, শিল্পপতি মহেন্দ্র শর্মার বাড়িতে।
এ দিকে, কয়লা পাচারকাণ্ডে আসানসোলে একাধিক জায়গায় সিবিআই তল্লাশি চলেছে। বার্নপুরের পুরানহাটে দু’টি বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চালায়। স্নেহাশিস তালুকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে সিবিআই। এছাড়া সিআইএসএফের প্রাক্তন কনস্টেবল শ্যামল সিংহের বাড়িতেও হানা দিয়েছে সিবিআই। তিনি কোলিয়ারিতে নিযুক্ত ছিলেন।
কয়লা পাচারকাণ্ডে লালা ঘনিষ্ঠ সৌরভের ভাড়া বাড়িতেও হানা দিয়েছে সিবিআই। দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি আনন্দনগরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন সৌরভ। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে তল্লাশি শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে। সিবিআইয়ের এক মহিলা আধিকারিক-সহ পাঁচ জনকে বেশ কিছু নথিপত্র নিয়ে সৌরভের বাড়ি থেকে বার হতে দেখা যায়।
বুধবার সোহরাবের বাড়ি এবং দফতরের পাশাপাশি আয়কর অভিযান চলে তাঁর হিসাবরক্ষক পঙ্কজ আগরওয়ালের বাড়ি, অফিস, ইস্কো কারখানার ঠিকাদার ও প্রোমোটার বার্নপুরের ধরমপুরের বাসিন্দা সৈয়দ ইমতিয়াজের বাড়ি, অফিস, ইমতিয়াজের কয়েক জন ঘনিষ্ঠের বাড়ি এবং নুন ও নির্মাণ ব্যবসায়ী মহেন্দ্র শর্মার বাড়ি-সহ মোট আট জায়গায়।
শুধু সোহরাবের বাড়ি ও অফিস নয়, এ দিন আয়কর অভিযান চলে তাঁর হিসাবরক্ষক পঙ্কজ আগরওয়ালের বাড়ি ও অফিস, ইস্কো কারখানার ঠিকাদার ও প্রোমোটার বার্নপুরের ধরমপুরের বাসিন্দা সৈয়দ ইমতিয়াজের বাড়ি ও অফিস, ইমতিয়াজের কয়েক জন ঘনিষ্ঠের বাড়ি এবং নুন ও প্রোমোটিং ব্যবসায়ী মহেন্দ্র শর্মার বাড়ি-সহ মোট আট জায়গায়।
মূলত ছাঁট লোহার কারবারি বলে পরিচিত সোহরাব। তাঁর বাবা শেখ আলি প্রথমে পেশায় গাড়িচালক ছিলেন। পরে তিনিই ছাঁট লোহার কারবার শুরু করেন। সেই পেশায় যুক্ত হন সোহরাব। অতীতে সোহরাবের সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের বাম নেতাদের ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে নানা সূত্রের দাবি। ১৯৯৫ সালে আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফের পশ্চিম শাখা তাঁর বিরুদ্ধে রেলের যন্ত্রাংশ চুরির মামলা করে। সোহরাব ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে আরজেডিতে যোগ দেন। সে বার নির্বাচনে আরজেডি ছিল বামেদের জোটসঙ্গি। তৎকালীন হিরাপুর আসনে বাম সমর্থিত আরজেডি-র প্রার্থী হন সোহরাব।
তবে সোহরাবকে প্রার্থী হিসেবে সমর্থন করার বিরোধিতা করেন কিছু সিপিএম নেতা-কর্মী। দলের হিরাপুরের নেতা দিলীপ ঘোষ নির্দল হিসেবে সেই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দিলীপের সঙ্গে দল ছাড়েন বেশ কয়েক জন কর্মী। পরে অবশ্য তাঁদের দলে ফেরানো হয়। ওই ভোটে জিতেছিলেন মলয় ঘটক। ভোটে হারার পরে আরজেডি ছাড়েন সোহরাব। ২০০৪ সালে তিনি আরএসপি-র টিকিটে আসানসোল পুরভোটে প্রার্থী হন। ২০১০ সালে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। ২০১১ সালে রানিগঞ্জ থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। তখন থেকে তৃণমূলের সক্রিয় নেতা হিসেবেই পরিচিত এলাকায়। বুধবার সোহরাবের বাড়িতে আয়কর অভিযান নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সবে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠের বাড়িতে অভিযান শুরু হয়েছে। তৃণমূলের চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়াল, কেউ বাদ যাবেন না। সবাই গরাদে ঢুকবে।’’ বিজেপির কথায় গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘আয়কর অভিযানের খবর শুনেছি। ওঁরা ওঁদের কাজ করছেন। আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy