Advertisement
E-Paper

মাপের দ্বিগুণ বালি নিয়ে রাতেই পারাপার

ভোটের মুখে ফের মাথা চাড়া দিয়েছে বালি কারবার। কোন পথে যাচ্ছে বালি, প্রশাসনই বা কী বলছে। খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

An image of Sand

অতিরিক্ত বালি নিয়ে কালনার পথে। —নিজস্ব চিত্র।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৫
Share
Save

রাত নামলেই কারবার শুরু। সকাল হতেই সব হাওয়া।

বালির কারবারের এলাকায় নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের এ দৃশ্য বড়ই চেনা। পরিবহণ দফতর, পুলিশ তল্লাশি চালায়। দফতরের কর্তাদের হেনস্থা, গাড়ি লক্ষ্য করে গুলির মুখেও পড়তে হয়। তাতেও বন্ধ হয় না বালির অবৈধ কারবার। লোকসভা ভোটের মুখে কালনায় বালি কারবারিরা ফের সক্রিয় হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাত থেকে ভোর হওয়ার মধ্যেই নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ, তিনগুণ বালি পৌঁছে যাচ্ছে নির্দিষ্ট ঠিকানায়। এসটিকেকে রোডের পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুর মোড়, কালনার ধাত্রীগ্রাম, বুলবুলিতলা, বৈদ্যপুর মোড়ের মতো এলাকাগুলিতে ভোরে দাঁড়ালেই দেখা যাবে এই ছবি। এলাকাবাসীর দাবি, বারো চাকা, দশ চাকা, ছ’চাকা ট্রাক, ডাম্পারের মতো বড় বড় যানবাহন উপচে নিয়ে যাওয়া হয় বালি। বেশ কিছু বালি ভর্তি ট্রাকের নীচের অংশ থেকে রাস্তায় গড়িয়ে পড়ে জল। রাস্তায় লোক সমাগম হওয়া আগেই নিভুজিবাজার, পাণ্ডুয়া মোড়, বুলবুলিতলা, কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুরের মতো নানা জায়গায় পৌঁছে যায় সেই ট্রাক।

বালি কারবারিদের একাংশের দাবি, ট্রাকে আনা বালি বেলচা ঢুকিয়ে আরও ফাঁপিয়ে, উঁচু করে দেখানো হয়। যাতে গাড়ির উচ্চতা মেপে ব্যবসায়ীদের কাছে বালি বিক্রি করতে বাড়তি সুবিধা হয়।এ বার ছোট গাড়িতেও বালি পাঠানো হচ্ছে ব্যবসায়ীদের গোলায়। জানা গিয়েছে, ছ’চাকা গাড়িতে বৈধ উপায়ে ১২ টন বালি আনা যায়। সেখানে অবৈধ পথে আসছে ৩৬ টন। ১২ চাকার ট্রাকে ২৫ টন পর্যন্ত যেখানে বালি আনা যায় সেখানে আনা হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টন। ১৬ চাকার গাড়িতে নিয়ম মেনে ৩২ টন পরিবহণ করা গেলেও ৫৬ টনের বেশি বালি, পাথর নিয়ে অবৈধ কারবারিরা যাতায়াত করছে বলে অভিযোগ।

বালি কারবারিদের একাংশ জানান, কাটোয়ার একটি ঘাট থেকে চালান ছাড়া মোটা বালি তোলা হয় গাড়িতে। কিছু গাড়ি ভাতার, বলগোনা হয়ে নির্দিষ্ট ঠিকানায় রওনা দেয়। আবার কিছু গাড়ি এসটিকেকে রোড হয়ে নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমানের নানা জায়গায় পৌঁছে যায় সকাল হওয়ার আগে। আবার বড়শুলের মতো কয়েকটি বালিঘাট থেকেও বহু গাড়ি অতিরিক্ত বালি নিয়ে মেমারি হয়ে বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে কালনা ২ ব্লকের বৈদ্যপুর, কালনা ১ ব্লকের বুলবুলিতলার মতো নানা ঠিকানায় পৌঁছে যায়। ঘাট থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে গাড়ি পিছু বালি কিনতে খরচ হয় ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকা। গাড়ি ভর্তি বালি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কিনতে হয় প্রায় তিন গুণ দামে। এক কারবারির কথায়, ‘‘গাড়ির তেল, চালক, খালাসি, নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া এবং বিভিন্ন থানা এলাকা দিয়ে গাড়ি যাওয়ার পুলিশের খরচ মিটিয়ে গাড়ি পিছু লাভ হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বৈধ উপায়ে সেখানে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা লাভ হয়।’’ তবে পরিবহণ দফতরের হাতে ধরা পড়লে গাডি পিছু লক্ষাধিক টাকা।

কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল বলেন, ‘‘খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। দরকারে অভিযানের কৌশল বদলে অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sand smuggling sand Kalna

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}