Advertisement
E-Paper

কয়েক দশকের আবর্জনা জমে, বিপদের আশঙ্কা

১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে, আসানসোলের কালিপাহাড়ি এলাকায় রয়েছে দু’টি ডাম্পিং গ্রাউন্ড। পাহাড়ের মতো আবর্জনা জমে রয়েছে সেখানে।

জাতীয় সড়কের পাশে ডাম্পিং গ্রাউন্ড।

জাতীয় সড়কের পাশে ডাম্পিং গ্রাউন্ড। ছবি: পাপন চৌধুরী।

সৌমিত্র গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ০৮:২৯
Share
Save

শহরের প্রায় চার দশকের জঞ্জাল জমে রয়েছে এক জায়গায়। আসানসোলের কালিপাহাড়িতে সেই ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে ক্ষোভ অনেক দিনের। সম্প্রতি হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ে পাহাড় সমান আবর্জনার জায়গায় ধস নামায়, আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে আসানসোলের এই জঞ্জালের জায়গা নিয়েও। এমনিতেই খনি অঞ্চল হওয়ায় ধসপ্রবণ এলাকা। তার পরে, জমে থাকা আবর্জনার জেরে ধস নামলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের পাশ দিয়ে জাতীয় সড়ক যাওয়ায়, বেড়েছে চিন্তা।

১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে, আসানসোলের কালিপাহাড়ি এলাকায় রয়েছে দু’টি ডাম্পিং গ্রাউন্ড। পাহাড়ের মতো আবর্জনা জমে রয়েছে সেখানে। এলাকাবাসীর অনেকের দাবি, প্রায় ৪০ বছর ধরে এখানে জঞ্জাল জমা হচ্ছে। হাওড়ায় ভাগাড়ে ধস নেমে আশপাশের বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কালিপাহাড়িতেও লাগোয়া এলাকায় রয়েছে জনবসতি। এখানে তেমন কিছু ঘটলে বসতির পাশাপাশি, গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কের ক্ষতির আশঙ্কাও থাকবে, দাবি বাসিন্দাদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে কালিপাহাড়ির কাছেই বড়সড় ধসের ঘটনা ঘটেছিল। তার প্রভাবে জাতীয় সড়কেও একাধিক ফাটল দেখা দিয়েছিল। রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম পুরসভা আসানসোল। পুরসভা সূত্রের খবর, আসানসোলের ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪০টির আবর্জনা ফেলা হয় এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। প্রতিদিন প্রায় ১২০টি গাড়িতে ৪০টি ওয়ার্ড থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে ফেলা হয় এখানে। স্থানীয় বাসিন্দা জ্যোৎস্না সরকার, রাহুলকুমার সিংহেরা বলেন, ‘‘হাওড়ার ঘটনার কথা শুনে ভয় লাগছে। বাসিন্দাদের কী হবে, প্রশাসন সে নিয়ে উদাসীন।’’

শহরের শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুন্ডু জানান, ২০০৭ সালে দুর্ঘটনা ঘটেছিল এখানে। তবে তার পিছনে মিথেন গ্যাস তৈরি হওয়া না কয়লা খনন, কী কারণ ছিল, তা জানা যায়নি। এমন অনেক জিনিস এখানে ফেলা হয়, যা থেকে পচন ধরে মিথেন গ্যাস তৈরি হতে পারে। তা থেকে বিস্ফোরণের আশঙ্কা থাকে। চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা খুব ভাল ভাবে চালাতে হবে। বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরি করে বিক্রির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণ করা প্রয়োজন। তা না হলে বিপদের আশঙ্কা বাড়বে।’’

আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ, ‘‘আসানসোল খনি এলাকা। মাটির তলা এমনিতেই ফাঁপা, যে কোনও সময়ে ধসের সম্ভাবনা থাকে। হাওড়া হোক বা আসানসোল, যেখানেই এমন সমস্যা তৈরি হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কিন্তু আমাদের এখানে প্রাণের কোনও দাম নেই।’’

আসানসোল পুরসভার অন্যতম ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক যদিও আশঙ্কার কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘তেমন কোনও সমস্যা হওয়ার পরিস্থিতি আসানসোলে নেই। কারণ, ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পুরসভার নির্দিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা সারা বছর পরিদর্শন করেন। কোনও অঘটন যাতে না ঘটে, সে জন্য আমরা সব সময় তৎপর রয়েছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol Dump Yard

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}