প্রতীকী ছবি
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রেশন দোকান থেকে মাথা পিছু কেরোসিনের পরিমাণ কমিয়ে দিল খাদ্য দফতর। বৃহস্পতিবারই এ সংক্রান্ত নির্দেশ জারি করা হয়েছে দফতরের তরফে। তাতে জানানো হয়েছে, জুন থেকে গ্রাহকদের ৬০০ মিলিলিটারের বদলে ৫০০ মিলিলিটার কেরোসিন দেওয়া হবে। রেশন ডিলার সংগঠনের দাবি, ‘ফুড কুপন’ প্রাপকদের কেরোসিন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে জন্যই সম্ভবত মাথা পিছু বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এ বার রেশনে ‘জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা’য় (এনএফএসএ) কার্ড থাকা উপভোক্তারা চালের সঙ্গে ডালও পাবেন বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
রেশন ডিলারেরা জানান, সম্প্রতি কেরোসিনের দাম এক ধাক্কায় ১২ টাকা কমে গিয়েছে। ফলে, উপভোক্তাদের মধ্যে কেরোসিন সংগ্রহের চাহিদা বেড়েছে। ডিলারদের দাবি, কয়েকমাস আগে প্রতি লিটার কেরোসিনের দাম ছিল ৪১.৫০ টাকা, যা খোলা বাজারের সমান। ধীরে-ধীরে সেটা কমে দাঁড়ায় ৩০ টাকায়। গত মাসে এক ধাক্কায় তা নেমে আসে ১৮ টাকায়।
এই জেলায় প্রতি মাসে ৩,২১৬ কিলোলিটার কেরোসিন বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত বিক্রি হত না। প্রতি মাসেই প্রায় ৮০০ কিলোলিটার তেল বেঁচে যেত। রেশন ডিলারদের একাংশের দাবি, এক সময়ে কেন্দ্র বরাদ্দ কমানোর কথাও ভেবেছিল। এর মধ্যে গত মাস থেকে ‘ফুড কুপন’ প্রাপকদেরও কেরোসিন দেওয়ার নির্দেশ জারি হয়েছে। তাতে জেলায় অতিরিক্ত আড়াই লক্ষ মানুষকে কেরোসিন সরবরাহ করতে গিয়ে বরাদ্দে টান পড়তে শুরু করেছে। সে কারণেই ৬০০ মিলিটারের জায়গায় ৫০০ মিলিলিটার কেরোসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার, মনে করছেন ডিলারেরা।
পূর্ব বর্ধমানে কেরোসিন রেশন দোকান থেকে দু’রকম দামে বিক্রি হয় বলে উপভোক্তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। রেশন ডিলারদের দাবি, এই জেলায় রেশন ডিলারদের সমান্তরাল ভাবে ‘এজেন্ট’ ও ‘বিগ ডিলার’রা কেরোসিন সরবরাহ করে। এজেন্টরা সাধারণত শহর এলাকায় থাকেন। গ্রামীণ এলাকার রেশন ডিলারেরা কেরোসিন পান ‘বিগ ডিলার’দের কাছ থেকে। অন্য নানা জেলায় ‘বিগ ডিলার’ পদ্ধতি উঠে গেলেও, পূর্ব বর্ধমানে তা এখনও রয়ে গিয়েছে। এজেন্টদের মাধ্যমে যে কেরোসিন পৌঁছয়, তার এখন প্রতি লিটার দাম ১৭.৬৯ টাকা। আর যে সব ডিলার ‘বিগ ডিলার’দের কাছে কেরোসিন নেন, তাঁদের দোকান থেকে উপভোক্তাদের কেরোসিন কিনতে হবে প্রতি লিটার ১৯.৫৮ টাকায়। রেশন ডিলারদের সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক পরেশনাথ হাজরার দাবি, ‘‘এই বিভ্রান্তি কাটাতে না পারলে উপভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক। এই মাস থেকে প্রতি লিটারের দাম দেড় টাকা বাড়ল। আবার মাথা পিছু কেরোসিনের বরাদ্দও কমল।’’
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের (এনএফএসএ) আওতায় রয়েছে অন্ত্যোদয়, অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবার (পিএইচএইচ), বিশেষ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত পরিবারগুলি (এসপিএইচএইচ)। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে এনএফএসএ কার্ড রয়েছে প্রায় ৮ লক্ষ ৪২ হাজার পরিবারের। নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতি পরিবার বিনামূল্যে এক কেজি ডাল পাবে। সে জন্য জেলায় প্রতি মাসে ৮৪২ টন ডাল প্রয়োজন। তিন মাস ধরে ডাল দেওয়া হবে। প্রতি মাসের ১৬ তারিখ থেকে রেশন দোকান থেকে ডাল পাবেন উপভোক্তারা। জুনে মুসুর, জুলাই ও অগস্টে মুগ ডাল দেওয়ার কথা রয়েছে। রেশন ডিলার সংগঠনের নেতা পরেশনাথবাবু বলেন, ‘‘ডাল দেওয়ার নির্দেশিকা এসেছে। কিন্তু এখনও ডাল আমাদের কাছে এসে পৌঁছয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy