নিজস্ব চিত্র।
যে স্টেশনে লক্ষাধিক টিকিট বিক্রি হয় প্রতিদিন, সেখানে ২৫ জোড়া ট্রেন চালিয়েও সাতশোর বেশি টিকিট বিক্রি হল না প্রথম দিন। বুধবার, প্রায় সাড়ে সাত মাস পরে, সাধারণ যাত্রী নিয়ে চাকা গড়াল লোকাল ট্রেনের। স্টেশনে সমস্ত বিধি মানা, ট্রেনে উঠে নজরদারির পরেও কিছু দূর যাওয়ার পরে দূরত্ববিধি শিকেয় উঠেছে বলেও অভিযোগ করেন যাত্রীদের একাংশ।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নীলাদ্রি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাত্রী-সহ সবাইকে আমাদের ধন্যবাদ। যাত্রীরা রেলের অনুরোধে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলেছেন। তবে তুলনামূলক ভাবে যাত্রী সংখ্যা কম ছিল।’’ জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) এনাউর রহমানও বলেন, ‘‘ট্রেন চলাচলের বিধি সব জায়গাতেই মানা হয়েছে। প্রত্যেক স্টেশনে আইসোলেশন-ঘর, অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা, থার্মাল-চেকিংয়ের বন্দোবস্ত ছিল।’’
রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, তুলনামূলক ভাবে মেমারি, হুগলির বৈঁচি, পাণ্ডুয়া স্টেশনে ভিড় বেশি ছিল। ছোট স্টেশনগুলিতেও ভালই ভিড় হয়। ভোর ৩টেয় হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনে প্রথম ট্রেন ছাড়ে। তার পাঁচ মিনিট পরে ছাড়ে মেন লাইনের ট্রেন। শীত শুরুর ভোরেও কর্ড লাইনের জন্য ১৭ জন ও মেন লাইনে ২৩ জন টিকিট কাটেন। যাত্রী ছিল আরও কিছুটা বেশি। স্টেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৯টা পর্যন্ত বর্ধমান স্টেশন থেকে পাঁচশোর মতো টিকিট বিক্রি হয়েছে।
বর্ধমান স্টেশনে ঢোকার মূল দরজার সামনে ও বুকিং কাউন্টারের কাছে সিঁড়ির মুখে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ‘থার্মাল গান’ দিয়ে যাত্রীদের পরীক্ষা করেন। স্টেশনে চক্কর দেন আরপিএফ কর্মীরা। প্রতিটি ট্রেনে উঠে, যাত্রীদের মুখে মাস্ক আছে কি না, তাও দেখেন তাঁরা। যাঁদের মাস্ক নেই, তাঁদের পরতে বলা হয়। মাস্কহীন কয়েকজনকে বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন থেকে নামিয়েও দেওয়া হয়। তবে ট্রেন ছাড়ার পরে, অনেকে স্বাস্থ্য-বিধি মানেননি বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদও করেন একাংশ যাত্রী।
কর্ড লাইনের যাত্রী সুনীত মুখোপাধ্যায়, শান্তনু রায়েরা বলেন, ‘কেউ মাস্ক খুললেই প্রতিবাদ করেছি। তখন তাঁরা শুনেছেন। তবে পাল্লা রোডের পরে, যাত্রী সংখ্যা বাড়তেই বিধি উড়ে যায়।’’ মেন লাইনের এক যাত্রী, কেশবগঞ্জ চটির বাসিন্দা রাজীব গায়েনও বলেন, ‘‘বর্ধমানে সব ঠিক ছিল। মেমারি ছাড়াতেই ক্রস দেওয়া সিটেও লোকে বসে পড়ে। অনেকে দাঁড়িয়েও যান।’’ ট্রেন না বাড়ালে সোমবার থেকে চাপ আরও বাড়বে বলেও তাঁদের আশঙ্কা।
হাওড়া থেকে বর্ধমানে প্রথম ট্রেন আসার পরে দেখা যায়, গাদাগাদি করে যাত্রীরা নামেন। মাস্ক ছিল না অনেকেরই। বর্ধমান থেকে বারুইপুরগামী এক দল মহিলারও মুখে মাস্ক ছিল না। তাঁদের দাবি, ‘‘এক সঙ্গে গল্প করতে করতে যাব। মাস্ক ব্যাগে রেখে দিয়েছি।’’ তবে আরপিএফ আসছে শুনে তাঁরা মাস্ক পরেন। পরের কামরায় এক হিন্দিভাষী যুবককে মাস্ক পরতে বলেন আরপিএফ কর্মীরা। তিনি না শোনায় সহযাত্রীদের সঙ্গে বচসা বাধে। তাঁকে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয় আরপিএফ। আবার হাওড়া থেকে বর্ধমানে এসে বাড়ি ফেরা নিয়ে বিপাকে পড়েন সাঁইথিয়ার বাসিন্দা রাকেশ বসু, বিকাশ মণ্ডল, দুর্গাপুরের বাসিন্দা শুচিস্মিতা সাহা, গোলাম সিদ্দিকরা। পরে নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডের দিকে রওনা দেন তাঁরা।
রেলের দাবি, সব ট্রেন সময়ে চলেছে। কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়নি। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সব জায়গাতেই সুষ্ঠু ভাবে যাত্রীরা যাতায়াত করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy