Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

Durga Puja 2021: অসম লড়াইও জেতা যায়, বোঝাতে চান অপরাজিতা

কোভিড-যুদ্ধে গোড়া থেকেই সামনের সারিতে বছর সাতাশের অপরাজিতা। করোনা মোকাবিলায় ‘নীল নকশা’ তৈরির পর থেকেই চিকিৎসকদের কাজের চাপ বাড়তে থাকে।

অপরাজিতা চট্টোপাধ্যায়।

অপরাজিতা চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
মেমারি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৪৯
Share: Save:

কাজের চাপ বেড়েছে দেশে করোনা আসার সময় থেকে। চিকিৎসার পাশাপাশি, এখন টিকাকরণের দায়িত্ব, ব্যস্ততা ক্রমশ বেড়েছে। কাজ করতে-করতে মাস ছয়েকের ব্যবধানে নিজে দু’বার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় সঙ্কটজনক হয়ে পড়া বাবাকে ফিরিয়ে এনেছেন কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে। এত কিছুর মধ্যেও ফোনে রোগীদের পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন। টিকা নিতে ভয় পাওয়া মানুষজনকে লাইনে এনে দাঁড় করিয়েছেন। মেমারির পাল্লা রোড প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক অপরাজিতা চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, “লড়াই এক সময়ে অসম পর্যায়ে চলে গেলেও, জয় পাওয়া কঠিন নয়।’’

কোভিড-যুদ্ধে গোড়া থেকেই সামনের সারিতে বছর সাতাশের অপরাজিতা। করোনা মোকাবিলায় ‘নীল নকশা’ তৈরির পর থেকেই চিকিৎসকদের কাজের চাপ বাড়তে থাকে। পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখাশোনা থেকে জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের সামলানো— স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সব কিছুর ভার পড়েছিল অপরাজিতার উপরেই। সে সব সামলাতে গিয়ে গত বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন নিজেই। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আবার করোনা ধরা পড়ে তাঁর শরীরে। পরপর দু’বার আক্রান্ত হওয়ার পরে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “টিকা নেওয়ার পরেও, কী ভাবে আক্রান্ত হলাম বুঝতে পারছিলাম না। শুধু মনে হচ্ছিল, আমার কথা শুনে টিকা নিতে বেঁকে বসবেন না তো কেউ-কেউ! তবে শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে আমরা টিকার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে পেরেছি।’’

তিনি জানান, নিজে যখন দ্বিতীয় বার করোনা হওয়ার পরে নিভৃতবাসে রয়েছেন, সে সময়েই তাঁর বাবা অচিন্ত্য চট্টোপাধ্যায় করোনা আক্রান্ত হন। বর্ধমানের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। সেখানে কয়েক দিন আইসিসইউ-তে থাকার পরেও অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমতে থাকে। এক সময়ে তা নেমে আসে ৩২-এ। অপরাজিতা বলেন, “তখন আমার করোনা রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ হলেও, নিভৃতবাসে থাকার কথা। বাবার ওই অবস্থা দেখে আমি হাসপাতালে ছুটে যাই। অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই বাবাকে। ঝড়-জলের রাতে পাঁচ-সাত মিনিটের রাস্তাও অনন্ত মনে হচ্ছিল। সেখানে আইসিসিইউ-তে দেওয়ার পরেই বাবার অক্সিজেনের মাত্রা ৯২-এ পৌঁছয়!”

অপরাজিতা জানান, এত ঝঞ্ঝাটের মধ্যে কিছুটা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। তা কাটাতে প্রায় দশ বছর পরে রং-তুলি হাতে তুলে নেন। তখন তাঁর সঙ্গী হয়ে ওঠে আঁকার খাতা। তিনি বলেন, “এর মধ্যেই হাসপাতাল গিয়েছি। ফোনে পরামর্শ দিয়েছি। টিকা দেওয়ার কাজ করতে হয়েছে। আমার হাসপাতালে আমি ছাড়া, তো বলার কেউ নেই। তবে কঠিন সময়ে যাঁরা পাশে থেকেছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’’ টিকাকরণের গোড়ার দিকে এক প্রস্ত সমস্যায় পড়তে হয়, জানান তরুণী চিকিৎসক। তাঁর কথায়, “প্রথম দিকে টিকা নিতে মানুষ খুব কম আগ্রহী ছিলেন। এক প্রকার লড়াই করে তাঁদের টিকার লাইনে দাঁড় করাতে হয়েছে।’’

করোনার তৃতীয় তরঙ্গ আসার সম্ভাবনা দূর হয়নি এখনও। সে কথায় মাথায় রেখে অপরাজিতার পরামর্শ, “নিজের কথা, বাবার কথা তুলে ধরে আমি প্রতিদিন রোগীদের বলি, টিকা নেওয়ার পরেও সতর্ক থাকা দরকার। ন্যূনতম লক্ষণ থাকলে করোনা-পরীক্ষা করাতে হবে। এখনও অনেকে পরীক্ষা করতে ভয় পাচ্ছেন। আমাদের লড়াই জারি রাখতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy