Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
potato farmers

আলু চাষের ক্ষতি মেটাতে বাদামে ঝোঁক মানাচরের

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর সংলগ্ন বাঁকুড়ার বড়জোড়া পঞ্চায়েতের দামোদরের চরে দেশ ভাগের সময়ে পূর্ববঙ্গ থেকে অনেকে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

ঝাড়াই বাছাই করে বস্তায় ভরা হচ্ছে আলু। পল্লিশ্রীতে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

ঝাড়াই বাছাই করে বস্তায় ভরা হচ্ছে আলু। পল্লিশ্রীতে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ০৮:২১
Share: Save:

আলু চাষ করে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। এই দাবি করেছেন মানাচরের চাষিরা। খেতে পড়ে আছে বস্তা বস্তা আলু। এক দিকে দাম কম। অন্য দিকে, ফলনও কম হয়েছে বলে দাবি। চাষিরা জানান, এই ক্ষতি মেটাতে এ বার তাঁরা বাদাম চাষে মন দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর সংলগ্ন বাঁকুড়ার বড়জোড়া পঞ্চায়েতের দামোদরের চরে দেশ ভাগের সময়ে পূর্ববঙ্গ থেকে অনেকে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বাড়িঘর বানিয়েছেন। সেই সঙ্গে নদের পাশের উর্বর জমিতে কৃষিকাজ শুরু করেন। আলু, বেগুন, পটল, মুলো থেকে শুরু করে গাঁদা ফুল। বাদ যায় না কিছুই। দুর্গাপুরের বাজারে বড় অংশের আনাজের জোগান আসে মানাচরের এই সব এলাকা থেকেই। মানাচরে প্রতি বছর বিঘার পর বিঘা জমিতে আলু চাষ করে থাকেন চাষিরা। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চাষিরা জানিয়েছেন, আলুর বীজ, সার, অনুখাদ্য, শ্রম— সব মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে গড়ে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। ‘লিজ়ে’ জমি নিয়ে চাষ করলে খরচ আরও ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বেশি পড়ে। এখন ৫০ কেজির আলুর বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তাঁরা জানান, সেই হিসাবে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে হাতে আসছে মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তা ছাড়া অন্য বছরের তুলনায় ফলনও এ বার কম বলে দাবি চাষিদের। এই পরিস্থিতিতে চাষিদের অনেকেই আলু তুলে বাড়িতে না এনে মাঠেই গাদা করে রাখছেন।

চাষি বড় মানার ঢাকা পাড়ার বীরেন সরকার আট বিঘা এবং স্বপন সরকার নয় বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছেন। তাঁরা বলেন, “পরিস্থিতি খুবই খারাপ। চরম ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা।”

এই ক্ষতি পোষাতে আলুর জমিতে চলছে বাদাম চাষের তোড়জোড়। তাঁরা জানান, আলুর জমিতে বাদাম চাষ করলে খরচ কম পড়ে। কারণ, আলুর জমিতে যে সার দেওয়া হয়, আলু তোলার পরেও জমিতে অংশ বিশেষ রয়ে যায়, যা বাদাম চাষে কাজ দেয়। ফলে সারের খরচ কমে। আলুর খেতে চাষ দিয়ে জমি তৈরি করে বাদামের বীজ পোঁতা হয়। বাদাম ওঠে তিন মাস পরে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে। প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম বীজ লাগে প্রায় ২০ কেজি হারে। এ ছাড়া, সেচের ব্যবস্থা করতে গড়ে ডিজেল লাগে প্রায় ৬০ লিটার। বিঘা প্রতি ফলন হয় প্রায় চার থেকে সাড়ে চার কুইন্টাল হারে। বাদাম বীজ, জলসেচ, অনুখাদ্য প্রভৃতি বাবদ বিঘা প্রতি খরচ হয় ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা। বাদাম উৎপাদনের পরে ন্যূনতম ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও, বিঘাতে ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকার বাদাম বিক্রি হবে। সে ক্ষেত্রে লাভের সম্ভাবনা রয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।

মাঝের মানার পল্লিশ্রী কলোনির কার্তিক হালদার, বড় মানার জয়দেব মণ্ডল, বরিশাল পাড়ার ভজন সরকারেরা বলেন, “বাদামের ভাল ফলন হলে আলু চাষের ক্ষতি কিছুটা অন্তত পুষিয়ে যাবে।“ বাঁকুড়া কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে বাদাম চাষ করছেন মানাচরের চাষিরা। কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে সহযোগিতাও করা হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

potato farmers Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy