খেতের পরিস্থিতি ঘুরে দেখছেন কর্তারা। নিজস্ব চিত্র
বুলবুলের প্রভাবে চাষাবাদের কী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রবিবার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করলেন জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। তবে ক্ষতির পরিমাণ কতখানি, এখনই নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেননি তিনি। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় আলু ও পেঁয়াজ চাষ পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে, দাবি কৃষি আধিকারিকদের।
এ দিন বর্ধমান থেকে কালনা আসার পথে রাস্তার দু’পাশে ধান চাষের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন জগন্নাথবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও চার সহ কৃষি অধিকর্তা হাকিমুল কবির, পার্থ ঘোষ, শুভেন্দু মণ্ডল এবং ভাস্কর দত্ত। ধাত্রীগ্রামের বেলকুলি এলাকায় বেশ কিছু আমন ধানের জমি এবং পেঁয়াজের বীজতলা ঘুরে দেখেন তাঁরা। কালনা ২ ব্লকেও কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখেন। খেতজমিতে নেমে দফায় দফায় চাষিদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে কি করণীয়, তার উপায়ও বাতলে দেন। জগন্নাথবাবু বলেন, ‘‘বুলবুলের প্রভাবে খুব বেশি বৃষ্টি হয়নি। তবে যেখানে বাদামি শোষক পোকার হামলা হয়েছে, নিচু জমিতে ধান চাষ হয়েছে সেখানে কিছুটা ক্ষতি হবে। যদিও এ ধরনের এলাকা কমই রয়েছে।’’ বৃষ্টি ছেড়ে যাওয়ার পরে শীত নামলে চাষিরা বাদামি শোষক পোকার হাত থেকে রেহাই পাবেন, দাবি তাঁর।
বেলকুলি গ্রামের এক চাষি মোহিত ঘোষ বলেন, ‘‘বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়ায় বেশ কিছু জমিতে ধান লুটিয়ে পড়েছে। কেটে রাখা পাকা ধান জমির কাদা-জলে পড়ে থেকেও নষ্ট হয়েছে।’’ উপ-কৃষি অধিকর্তা তাঁকে এবং ওই এলাকার চাষিদের পরামর্শ দেন, যে সমস্ত প্লটে ক্ষতি হয়েছে দ্রুত তার ছবি তুলে বিমা কোম্পানিকে পাঠাতে হবে। তারা ক্ষতির পরিমাণ দেখে যাবেন। এর সঙ্গেই দ্রুত জমি থেকে জল বের করে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। দুর্যোগ কেটে চড়া রোদ উঠলে ক্ষতির আশঙ্কা করেছেন পেঁয়াজ চাষিরাও। কৃষি আধিকারিকেরা তাঁদের জমিতে ব্লাইটক্স, রেডমিন গোল্ড, ডাইথিন এম-৪৫ জাতীয় ছত্রাকনাশক ছড়ানোর পরার্মশ দেন।
কৃষি দফতরের দাবি, বর্তমানে জেলার পাঁচ শতাংশ জমিতে ধান কাটা হয়েছে। কাটা ধান জলে পড়ে থাকলে নীচের অংশে কিছুটা ক্ষতি হবে। পেঁয়াজ এবং আনাজ চাষে কতটা ক্ষতি হয়েছে আরও কয়েকটা দিন না গেলে বলা সম্ভব নয়, তাঁদের দাবি। তবে অসময়ের এই নিম্নচাপে আলু এবং পেঁয়াজ চাষ পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, দাবি কর্তাদের। নভেম্বরে ধান ওঠার পরেই আলু চাষের জমি তৈরি শুরু হয় এই জেলায়। এ বারের বৃষ্টিতে জমিতে জমা জল বার করে, ভিজে ভাব কাটার পরে আলু চাষ শুরু করা যাবে। এর ফলে অন্তত সপ্তাহ দুয়েক চাষ পিছিয়ে যাবে বলে ধারণা তাঁদের। এক আলু চাষি বিমল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘আগের বার তৈরি ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। এ বার তো চাষই পিছিয়ে যাচ্ছে।’’ কালনা মহকুমায় সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ হয় বহু জমিতে। চাষিদের দাবি, গত এক মাসে তিন বার বৃষ্টির মুখে পড়েছে চাষ, নষ্ট হয়েছে বীজতলা। চাষ বেশি পিছিয়ে গেলে পর্যাপ্ত শীত না পেলে ফসলে ক্ষতির আশঙ্কাও করেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy