পদ্ম বিক্রি। দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায়। ছবি: বিকাশ মশান।
বিভিন্ন পুজোতে প্রয়োজন হয় পদ্মফুলের। কাজেই বছরভর চাহিদা রয়েছে পদ্মের। তবে দুর্গাপুজোর মরসুমের দিকেই বেশি তাকিয়ে থাকেন পদ্মফুল চাষিরা। কিন্তু গত কয়েক বছরের থেকে এ বছর দাম বেশি পাওয়ার আশায় রয়েছেন চাষিরা। কারণ, লাগাতার বৃষ্টির ফলে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই জোগান যেমন কমবে, তেমনি চাহিদাও বাড়বে বলে মনে করছেন চাষিরা। এ সবের মাঝে ফুল সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন জেলার চাষিরা। তাঁদের আক্ষেপ, জেলায় কোনও হিমঘর নেই। এই সমস্যা দূর করার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে জেলা পরিষদ।
বাঙালিদের বারো মাসে তেরো পর্বণ। সারা বছর ধরে নানা পুজো-পার্বণ থাকলেও, দুর্গাপুজোর উপরে বহু মানুষের রুজিরুটি বেশি জড়িয়ে থাকে। দুর্গাপুরের নন্দ মার্কেট মূলত ফুলের বাজার হিসেবেই পরিচিত। পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাশাপাশি, প্রতিবেশী জেলা বীরভূম, বাঁকুড়া থেকে প্রতিদিন বহু চাষি এই বাজারে ফুল নিয়ে আসেন। আর এই সময়ে সব থেকে বেশি আসে পদ্মফুল। ফুল বিক্রেতা ও সহ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, অন্য বছর এই সময় থেকেই পদ্মফুলের চাহিদা বাড়তে থাকে। তবে কয়েক দিন লাগাতার বৃষ্টিতে জোগান কিছুটা হলেও কমেছে এই ফুল বাজারে। পূর্ব বর্ধমানের গলসি এলাকার পদ্মফুল চাষি উত্তম হাজরা জানান, এখন ২৫টি সাদাপদ্মের বান্ডিলের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। গত বছর ১০০ টাকার মধ্যেই এর দাম ছিল। লালপদ্ম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। তিনি বলেন, “এই সময়ে বৃষ্টির জেরে অনেক পুকুর, জলাশয় ভরে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে অনেক পদ্মগাছ ও ফুল। কাজেই পুজোর আগে আগে দাম আরও বাড়বে।”
দুর্গাপুরেরও বেশ কয়েকজন চাষি পুকুর ‘লিজ়ে’ নিয়ে পদ্ম-চাষ করেন। তাঁরা জানান, পদ্মফুলের চাষে খরচও বেড়েছে। চাষিদের দাবি, এখন পুকুর লিজ় নিতে গেলে আয়তন অনুযায়ী টাকা দিতে হয়। যেমন পাঁচ বিঘা একটি পুকুরের এক বছরে প্রায় ১০ হাজার টাকা লাগে। তা ছাড়া সেটি রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় সারা বছর ধরে। তার পিছনেও একটা খরচ হয়। তবে পদ্মফুল চাষে কোনও রাসায়নিক বা সার কিছু ব্যবহার করতে হয় না। দুর্গাপুরের এক চাষি মধুসূদন কোনার জানান, এ বছর তিনি প্রায় ১৫টি পুকুরে পদ্ম চাষ করছেন। প্রায় দিনই ফুল তুলে বাজারে বিক্রি করতে যান। অনেক সময় উপযুক্ত দাম মেলে না বলে দাবি। তিনি বলেন, “কিন্তু ফুল রাখার উপযুক্ত জায়গা না থাকায়, বাধ্য হয়ে কম দামে হলেও বাজারে বিক্রি করে আসতে হয়।” একই সমস্যার কথা জানান আর এক চাষি কালু ঘোষ। তিনি বলেন, “জেলায় কোনও হিমঘর নেই। তাই আমাদের ফুল রাখতে হলে পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়ার মতো জায়গায় যেতে হবে। এতে খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে।” তাঁরা জানান, জেলায় শুধু ফুল চাষই নয়। অনেকে আনাজ চাষও করেন। তাই একটি হিমঘর তৈরি হলে, এই সমস্যা অনেকটাই মিটবে।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (কৃষি, সেচ ও সমবায়) সমীর বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করব। চাষিদের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy