জল বেড়েছে দামোদরে। বর্ধমানের ইদিলপুরে রবিবার। নিজস্ব চিত্র
একটি গেট ভেঙে হু-হু করে জল বেরিয়ে গিয়েছে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে। শনিবার ভোরে ব্যারাজের সেই ৩১ নম্বর গেট ভাঙার পরে সব জল বার করে গেট সংস্কারে হাত দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সেচ দফতর। এই ব্যারাজ থেকেই ১২টি খালের মাধ্যমে পূর্ব বর্ধমান, হুগলিতে রবি ও বোরো চাষের জল পাঠানো হয়। সব জল বার করে দেওয়ার ফলে দুর্গাপুরে পানীয় জলের সমস্যার আশঙ্কার মতো চাষের জলেও সঙ্কট দেখা দেবে কি না, প্রশ্ন তুলছেন পূর্ব বর্ধমানের চাষিদের বড় অংশ।
চাষিদের দাবি, বছর তিনেক আগে ব্যারাজের গেট ভেঙে যাওয়ায় রবি ও বোরো চাষের জন্য জল মেলেনি বললেই চলে। যদিও এই দাবির সঙ্গে একমত নন সেচ দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানান, ব্যারাজের জলের সঙ্গে চাষের জলের কোনও সম্পর্ক নেই। ২০১৭ সালে বৃষ্টি কম হওয়ার জন্যই রবি ও বোরো চাষে কম জল দেওয়া গিয়েছিল।
ডিসেম্বরে রবি চাষের জন্য ও ফেব্রুয়ারিতে বোরো চাষের জন্য জল ছাড়ে সেচ দফতর। সেচ ও কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ১ ও ২ ব্লক, ভাতার, জামালপুর, বর্ধমান ১ ও ২, গলসি ১ ও ২, আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে মোট ১১টি ব্লকে সাধারণত বোরো চাষের জল দেওয়া হয়। গোটা জেলায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার হেক্টরের মতো জমিতে বোরো চাষ হয়। তার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ জমিতে সেচখালের মাধ্যমে জল পৌঁছয়। গত বছর ওই সব এলাকার মোট ৩৬,৩০০ হেক্টর জমির জন্য জল ছেড়েছিল সেচ দফতর। ২০১৭ সালে জল মিলেছিল ১২ হাজার হেক্টর জমির জন্য। ২০১৭ সালের নভেম্বরে জল ছাড়ার আগেই দুর্গাপর ব্যারাজের একটি গেট ভেঙে পড়ে। ওই এলাকার বাসিন্দা নীরদ দারি, বাবুরাম ঘোষেদের কথায়, ‘‘সে বার ব্যারাজের গেট ভেঙে যাওয়ায় হঠাৎ সেচখাল উপচে জল চলে আসে। পাকা আমন ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আবার বোরোতেও জল মেলেনি। এ বারও জল না পাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে কি না, আশঙ্কায় রয়েছি!’’
গলসির ইড়কোনা গ্রামের তাপসকুমার হাজরা, রামনগরের শেখ নাসিরুদ্দিনের দাবি, ‘‘শ্রমিক পাওযা নিয়ে সমস্যায় গত বছর বোরো চাষে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল। দুর্গাপুর ব্যারাজের ইডেন ক্যানালের জলে আমাদের চাষ হয়। গত বারের লোকসান এ বার পুষিয়ে নেব ভেবেছিলাম। সেচের জল না পেলে কী ভাবে চাষ করব, এটাই চিন্তা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’ একই চিন্তা বর্ধমান ২ ব্লকের সুপ্রভাত ঘোষের মতো অনেকে চাষির। তাঁদের কথায়, ‘‘সেচখালের জলের উপরে নির্ভর করে আমাদের চাষ হয়। এখানে কোনও গভীর নলকূপ বা সাবমার্সিবল পাম্প নেই। চিন্তায় রয়েছি।’’
জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘‘সেচের জলের যাতে অভাব না হয়, সে জন্য ইতিমধ্যে সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন, সমস্যা হবে না।’’ সেচ দফতরের ‘দামোদর ইরিগেশন ক্যানাল’-এর এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ভাস্করসূর্য মণ্ডল বলেন, ‘‘চাষিদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। মাইথন ও পাঞ্চেতের জল সেচের জন্য ছাড়া হবে। সেখানে যথেষ্ট পরিমাণে জল মজুত রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy