প্রতীকী ছবি।
গত বছরের চেয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে পূর্ব বর্ধমানে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অন্তত তাই বলছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিল ২৬২ জন। এ বছর ওই সময়ের মধ্যে জেলায় ১৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডেঙ্গি প্রতিরোধে অনেকটাই সাফল্য এসেছে।
জেলার স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদারের দাবি, ‘‘পরিকল্পনা, নজরদারি ও সমন্বয়, এই তিন মন্ত্রে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ অনেকটা করা গিয়েছে।’’ স্বাস্থ্যকর্তারা মানছেন, করোনার জেরে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য-সচেতনতা বেড়েছে। আবার লকডাউনের ফলে দীর্ঘ সময় মানুষকে বাইরে বেরতে হয়নি, সেটাও সংক্রমণ না হওয়ার কারণ।
স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, অতীতের ত্রুটি-বিচ্যুতি যাতে এ বছর না ঘটে, সেই জন্য প্রথম থেকেই পরিকল্পনা তৈরি করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জেলার হস্তক্ষেপ থাকলেও পুরসভাগুলিতে তা করা যেত না। এ বার প্রথম থেকেই বৈঠক করে পুরসভাগুলিকেও নজরে আনা হয়। সমন্বয়ে জোর বাড়ার সঙ্গে ‘ভেক্টর কন্ট্রোল টিম’(ভিসিটি) তৈরি করা হয়। দল গড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পর্যায়ক্রমে সচেতনতার কাজ করা হয়। এর সঙ্গেই প্রতিটি মহকুমা, ব্লক ও পঞ্চায়েতে ‘নোডাল অফিসার’ নিয়োগ করা হয়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের যুক্ত করা হয় এ কাজে। ফলে স্থানীয় ভিত্তিতে নজরদারি ও পরিকল্পনা তৈরিতে সুবিধা হয়, যা ডেঙ্গি প্রতিরোধের সাফল্যের অন্যতম সিঁড়ি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। নিয়মিত এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, মশা মারার স্প্রে বা ধোঁয়াও দেওয়া হয়।
পুরসভাগুলিরও দাবি, জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ভাবে বাড়ি ঘোরা, এলাকার উপরে নজর দেওয়ার কাজ করা হয়। নিয়মিত নজরদারির ফলে বাড়িতে, রাস্তায় জল জমে থাকলে তা পরিষ্কার করা হয়। আবাসনগুলিও যাতে জল জমা না রাখে, তা দেখা হয়। পালন করা হয় ‘ডেঙ্গি বিজয় অভিযান’ও।
করোনা-আবহে অনেকে রক্ত পরীক্ষা করাতে হাসপাতাল বা বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে যাবেন না বলে ভেবেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই কারণে জ্বরের উপসর্গ থাকা যে কোনও রোগীর ডেঙ্গি পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (জনস্বাস্থ্য) বাগবুল ইসলাম বলেন, ‘‘২১৫টি পঞ্চায়েতের জন্য ৩১৭০টি ভেক্টর কন্ট্রোল টিম তৈরি করা হয়। তাঁদের দেখভালের জন্য প্রত্যেক পঞ্চায়েতে একজন করে সুপারভাইজার রয়েছেন। তাঁরাই গ্রামীণ এলাকায় ঘুরে তথ্য তুলে আনছেন। সেই মত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘সবাই মিলে চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা দলগত সাফল্য। লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy