Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

নকল সোনা পাচার করে পুলিশ সেজে ‘উদ্ধার’

রবিবার রাতে কাঁকসার বাঁশকোপা টোলপ্লাজায় দু’টি গাড়ি থেকে বারো জনকেই গ্রেফতার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া নকল সোনা। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া নকল সোনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ২২:৩৫
Share: Save:

টোলপ্লাজার কাছে গাড়িটিকে দেখে সন্দেহ হয়েছিল টহলদার ভ্যানের পুলিশকর্মীদের। গাড়ি আটকে তল্লাশি চালাতেই বেরোয় সোনালি একটি বাঁট ও কয়েকটি পাত। ছয় আরোহীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার ফাঁকেই পিছন থেকে এসে হাজির হয় ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটানো একটি গাড়ি। সেটি দেখেও সন্দেহ হয় পুলিশের। ওই গাড়ি থেকে মেলে গোটা কয়েক লাঠি, পুলিশের টুপি ও দু’টি জাল পরিচয়পত্র।

রবিবার রাতে কাঁকসার বাঁশকোপা টোলপ্লাজায় দু’টি গাড়ি থেকে বারো জনকেই গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়ি থেকে উদ্ধার প্রায় দেড় কিলোগ্রাম ওজনের ওই সোনালি বাঁট ও পাতগুলি পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেগুলি আসলে পিতলের। সোনা হিসেবে সেগুলি তারা ধানবাদে বিক্রি করতে যাচ্ছিল বলে জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, দাবি পুলিশের। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘ধৃতদের আরও জেরা করে এই প্রতারণা চক্রে আর কেউ জড়িত কি না জানার চেষ্টা চলছে। ধৃতদের সম্পর্কে বিভিন্ন থানায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’

পুলিশ জানায়, সোনা পাচার করতে কলকাতার দিক থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে একটি গাড়ি আসছে, এমন খবর মিলেছিল। সে জন্য নজরদারি চলছিল। একটি গাড়িকে দেখে সন্দেহ হতেই তল্লাশি চালানো হয়। বারোশো গ্রামের সোনালি বাঁট ও মোট তিনশো গ্রামের পাতগুলি পাওয়া যায়। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানায়, ধানবাদে এক ব্যক্তির কাছে সেগুলি বিক্রি করতে যাচ্ছিল তারা। এরই মধ্যে এসে হাজির হয় ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটা গাড়িটি। জানা যায়, দু’টিই নকল সোনা পাচার চক্রের গাড়ি।

পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জানিয়েছে, প্রথমে তারা কোনও ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ জমায়। তাঁকে সোনার বিষয়ে নানা কাহিনি শোনানো হয়। কখনও বলা হয়, অন্য দেশ থেকে সোনা পাচার করে আনা হয়েছে। আবার কখনও জানানো হয়, মাটির তলা থেকে এক ব্যক্তি সোনার কিছু জিনিসপত্র পেয়েছেন। সেগুলি বাজারের থেকে অনেক কম দরে বিক্রির টোপ দেওয়া হয় ব্যবসায়ীর কাছে। ব্যবসায়ী রাজি হলে তাঁকে একটি নির্জন জায়গায় ডাকা হয়। প্রথমে একটি গাড়ি গিয়ে সোনা দিয়ে টাকা নেয় তার কাছে। তার পরেই পিছন থেকে ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটানো গাড়িটি হাজির হয়ে পাচারের অভিযোগে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ‘সোনা’ উদ্ধার করে নিয়ে পালায়। এ ভাবেই এই কারবার চলছিল বলে ধৃতদের দাবি, জানায় পুলিশ।

তদন্তকারীদের দাবি, নকল সোনা পাচারের এই চক্র সারা রাজ্য জুড়েই সক্রিয়। রবিবার রাতে ধানবাদের এক ব্যবসায়ীকে সোনার জল করা পিতলের জিনিসগুলি তারা বিক্রি করতে যাচ্ছিল বলে জেনেছে পুলিশ। ধৃতেরা হুগলির শেওড়াফুলি, শ্রীরামপুর, উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ, বসিরহাট, স্বরূপনগর ও পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বাসিন্দা। সোমবার তাদের দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে পাঁচ জনকে সাত দিন পুলিশি হেফাজত ও বাকিদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Police Fake Gold
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE