Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Dengue

সব পুরসভাতেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি

শুধু বর্ধমান শহর নয়, ডেঙ্গির আতঙ্কে আক্রান্ত পূর্ব বর্ধমানের সব ক’টি পুরসভাই। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরে মশা মারতে কামান দাগা শুরু করেছেন পুর কর্তৃপক্ষগুলি।

মেমারির রাস্তায় জমে জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র

মেমারির রাস্তায় জমে জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৮
Share: Save:

রোগী সামাল দিতে হিমসিম হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বেশিরভাগই এসেছেন ‘অজানা জ্বরে’ আক্রান্ত হয়ে। শুধু বর্ধমান শহর নয়, ডেঙ্গির আতঙ্কে আক্রান্ত পূর্ব বর্ধমানের সব ক’টি পুরসভাই। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরে মশা মারতে কামান দাগা শুরু করেছেন পুর কর্তৃপক্ষগুলি। কিন্তু তাঁদের ভূমিকা নিয়ে খুশি নন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘জুলাই-অগস্ট থেকে ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভাকে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরে তাঁরা নড়েচড়ে বসেছেন। এখনও কিন্তু ঘুম ভাঙেনি!’’

স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, বর্ধমান শহরে পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত বছর ৩৮ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা ৫২। মঙ্গলবারই ১২ নম্বর-সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে নতুন করে জ্বরের প্রকোপের খবর মিলেছে। বেসরকারি ল্যাবের রিপোর্টে এক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মেলার কথাও জানানো হয়েছে। তবে বর্ধমান মেডিক্যালে এলাইজা পরীক্ষার পরেই ওই রোগীর ডেঙ্গি হয়েছে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে, জানায় স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন শহরের কালীবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকায় মশা মারার তেল স্প্রে করতে ও ধোঁয়া দিতে দেখা যায় পুর-কর্মীদের।

গুসকরা পুরসভায় গত বছর কারও ডেঙ্গি ধরা পড়েনি। স্বাস্থ্য দফতর জানায়, এ বার দু’জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেওয়ার পরে পুর-কর্তাদের এলাকায় ব্লিচিং ছড়াতে দেখা গিয়েছে। অথচ, ডেঙ্গি রোগী রয়েছে এমন এলাকায় নর্দমা বা আবর্জনা সাফাই চোখে পড়েনি। গুসকরার ১৬টি ওয়ার্ডে মশা মারতেও দেখা যায়নি পুরকর্মীদের। স্থানীয় বাসিন্দা মুন্নি মুড্ডা, সুনীল মুর্মুদের অভিযোগ, ‘‘নর্দমার হাল দেখেই তো বুঝতে পারছেন, পুরসভা থেকে কেউ এসেছিলেন কি না!’’

প্রায় একই পরিস্থিতি মেমারিতেও। শহরের ভিতরে রয়েছে মেমারি ১ বিএমওএইচ দফতর। তারাই শহর ও ব্লকে ৮ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পেয়েছে। শহরের বড় অংশের মানুষের অভিযোগ, মেমারিতে বেহাল নিকাশি। বড় নর্দমা থেকে পুকুর ঠিকমতো সাফ হয় না। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এলআইসি-র কাছে সারা বছর জল জমে থাকে। রাস্তার ধারে আবর্জনা পড়ে থাকায় মশার উৎপাত বাড়ছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। এমনকী, পুরসভার বড় কর্তাদের ওয়ার্ডেও জল জমে থাকার ছবি দেখা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত সব ওয়ার্ডে মশা মারার দল পৌঁছায়নি বলেও অভিযোগ।

দাঁইহাটেও দু’জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। শহরবাসীর ক্ষোভ, এলাকায় নিকাশি-ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। রাস উপলক্ষে কিছু জায়গা সাফ করা হলেও বেড়া ঘোষ পাড়া, মোকামপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকা রয়েছে তিমিরেই। শহরবাসীর দাবি, এখনও পর্যন্ত মশা মারতে দাঁইহাট পুরসভা উদ্যোগী হয়নি।

কাটোয়া ও কালনা, দু’টি শহরেই গত বছরের চেয়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কম বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। কাটোয়ায় গত বছর আক্রান্ত ছিল ৭, এ বছর ৫। কালনাতে গত বছর ছিলেন ৫ জন, এ বার মোটে এক জন। তবে এই দুই পুরনো পুরসভায় মশার উৎপাত লেগেই রয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কাটোয়ার সার্কাস ময়দান, বিদ্যাসাগরপল্লি বা মাধবীতলার মতো কালনার পুরনো বাসস্ট্যান্ড, কোর্ট চত্বরে মশার উৎপাতে দাঁড়ানো দায় বলে জানান তাঁরা।

পুর কর্তৃপক্ষগুলি অবশ্য নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের সকলেরই দাবি, মশা মারার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চলছে সচেতনতা শিবিরও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy