Advertisement
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Nabanna

হারানো ‘নবান্ন’ ফিরল মিড-ডে মিলে, বাঙালিয়ানায় ভরল পড়ুয়াদের মনও

ফিরে এল হারিয়ে যেতে বসা বাঙালির পার্বণ ‘নবান্ন’। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন আয়োজনে পেট ও মন যে ভালই ভরেছে, তা ধরা পড়ল খুদেদের হাসি মুখে।

খাবারের তালিকায় ছিল জিভে জল আনা পনেরো রকমের পদ।

খাবারের তালিকায় ছিল জিভে জল আনা পনেরো রকমের পদ। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০২:২৯
Share: Save:

মিড-ডে মিলের খাবারে সাপ, টিকটিকি, ইঁদুর বা আরশোলা পড়ার খবরে হইচইয়ের ঘটনা নতুন নয়। সেই আবহে মিড-ডে মিলের মেনুতে চমক দিল পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের জয়রামপুর ত্রিপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই সঙ্গে ফিরে এল হারিয়ে যেতে বসা বাঙালির পার্বণ ‘নবান্ন’। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন আয়োজনে পেট ও মন যে ভালই ভরেছে, তা ধরা পড়ল খুদেদের হাসি মুখে।

ডাল, ভাত, তরকারি বা ডিমের বদলে এ দিন ‘নবান্ন’ উদ্‌যাপনে খাবারের তালিকায় ছিল নলেন গুড়, সুগন্ধী চালের পায়েস, পিঠেপুলি-সহ জিভে জল আনা পনেরো রকমের পদ। ছিল বিভিন্ন ফল মেশানো সুস্বাদু চাল মাখা, নলেন গুড়ের পায়েস, গুড়পিঠে, কলাই ডালের বড়া, ভাত, পনির, ফুলকপির তরকারি ও নানা রকমের ভাজা। শেষ পাতে ছিল চাটনি ও রসগোল্লা। খাবারের সঙ্গে বাড়তি পাওনা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ও প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে গল্পের ছলে গ্রাম বাংলার ‘নবান্ন পার্বণের’ তাৎপর্যের কথা শোনা।

রাজ্যের শস্যগোলা হিসাবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা। এক সময় কৃষি নির্ভর এই জেলার অন্যতম প্রধান পার্বণ ছিল নবান্ন। জমি থেকে আমন ধান ঘরে তোলার পরে তা থেকে তৈরি ‘অন্ন’ প্রথমে দেব-দেবীকে নিবেদন করার নিয়ম প্রচলিত ছিল জেলার কৃষিজীবী পরিবারগুলির মধ্যে। রীতি অনুযায়ী শুরু হয় ‘নবান্ন পর্বণ’। তবে কৃষি ক্ষেত্র থেকে শুরু করে সমাজ জীবন- সবেতেই প্রযুক্তির নির্ভরতা বাড়ায় এই পরব এখন লুপ্তপ্রায়। তবে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতি যাতে নতুন প্রজন্ম ভুলে না যায়, তার জন্যই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই অভিনব আয়োজন। বিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রীপর্ণা চট্টোপাধ্যায় ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় সহ-অন্য শিক্ষকেরা নিজের হাতে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের খাবার পরিবেশন করেছেন।

আয়োজন প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমাদের বিদ্যালয়ে গরিব, দিনমজুর পরিবারের ছেলে-মেয়েরাই পড়াশোনা করে। অভাব-অনটনের কারণে তাদের বাড়ির ‘নবান্ন’ অনুষ্ঠান আয়োজনের সামর্থ নেই। তাই পড়ুয়াদের কাছে তাৎপর্য হারাচ্ছিল এই পার্বণ। সে কথা মাথায় রেখে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বাংলার এই পর্বণের সঙ্গে পরিচয় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর তার জন্য মিড-ডে মিলকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল।’’

অবর বিদ্যালয়ের পরিদর্শক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের ‘নবান্ন পার্বণ’- এর তাৎপর্য বোঝানোর জন্য এই বিদ্যালয়ের উদ্যোগ সত্যিই অভিনব। খুবই শিক্ষনীয় একটি বিষয়। পড়ুয়াদের আনন্দদানের মধ্য দিয়ে শিক্ষকেরা যে ভাবে এই পার্বণকে তুলে ধরেছেন,তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal school Primary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy