পুজোর তদারকিতে ব্যস্ত গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েক বছরে বারবার বৈঠক হলেও চেষ্টা সফল হয়নি। এ বারের তেমনই এক বৈঠকে নাসের আলি, শেখ হান্নানেরা আশ্বাস দেন, ‘আমরা আছি। এ বার গ্রামে পুজো হবেই।’’ আর তার পরেই দেবী দুর্গা এই প্রথম বারের মতো পা রেখেছেন মেমারির ঝিকড়া গ্রামকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামের তিনশোটি বাড়ির মধ্যে সাতটি পরিবার হিন্দু। রয়েছে কয়েকটি আদিবাসী পরিবার। ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যায় এখানে বেশি। মেমারি থেকে মন্তেশ্বর যাওয়ার রাস্তার ধারেই পুজোর মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। নাসের আলি, চঞ্চল পালেরা মেমারি থেকে প্রতিমা এনেছেন। প্রতিমার সাজ, পুজোর বাজারও এক সঙ্গে করেছেন সুকলাল শেখ, প্রবীর মণ্ডলেরা। চাঁদা সংগ্রহে বেরিয়ে স্থানীয় যুবক নাসের আলির অভিজ্ঞতা, ‘‘গ্রামে ৯০ শতাংশ মানুষই ইসলাম ধর্মাবলম্বী। চাঁদা চাইতে গেলে কেউই কিন্তু ফেরাননি।’’
আসলে এ বার জেদ চেপেছিল, পুজো হবেই, জানান মিণ্টু শেখ, নারায়ণ প্রামাণিকেরা। কিন্তু জেদ কেন? পুজো কমিটির সম্পাদক সুকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘সাত বাড়ি হিন্দুদের নিয়ে পুজো শুরু সম্ভব নয়। তাই গত কয়েক বছর বৈঠক হলেও লাভ হয়নি। এ বার বৈঠক চলাকালীন মহম্মদ ইসমাইলের কথামতো নাসের, হান্নানরা পুজোর আয়োজনের কথা বলেন। ওঁরা পাশে না থাকলে পুজোই হত না।’’
এক সঙ্গে এমন পুজো আয়োজনের কারণটিও জানান পুজো কমিটির সভাপতি মহম্মদ ইসমাইল। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের ছেলেরা পুজোর ক’দিন মনমরা থাকত। এ বার তাই ঠিক হয় পুজো হবেই। বিসর্জনেও আমরা সবাই থাকছি। তবে এই শুরু, গ্রামে আর কোনও দিন পুজো বন্ধ হবে না।’’ এই অঙ্গীকার নিয়েই এ বার দেড় লক্ষ টাকা বাজেটের পুজো। পাশাপাশি, থাকছে সাংস্কৃতিক নানা অনুষ্ঠান। সেখানে এলাকাবাসীর পাশাপাশি, বাউল, বাইরের শিল্পীরাও অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন।
পুজোয় গ্রামে আলো জ্বলবে, এই ভেবেই তাঁরা খুশি বলে জানান আরজু খাতুন, রেঁনেসা খাতুনেরা। আর এ গ্রামে এ বার পুজোর রোশনাই একটু বেশিই, জানান শেখ আব্দুল। পাশেই থাকা চঞ্চল মণ্ডল বলেন, ‘‘রোশনাই বেশি হবে না। এ যে আমাদের সবার, গ্রামের পুজো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy