—প্রতীকী চিত্র।
তিনি তৃণমূলের বিধায়ক। বিধানসভা এলাকার সব পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি তাঁর দলেরই হাতে। তার পরেও মাসের পর মাস পঞ্চায়েত প্রধান বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেটে’র অভাবে থমকে রয়েছে বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবিত কাজ। বেশ কয়েকটি কাজের ‘ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেটও’ (ইউসি) আটকে রয়েছে। যার ফলে এই আর্থিক (২০২৪-২৫) বছরে বিধায়ক তহবিলের প্রস্তাবিত টাকা আটকে গিয়েছে। নতুন করে কাজের তালিকাও জমা দিতে পারছেন না বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য।
মেমারির বিধায়ক তাঁর ক্ষোভের কথা জেলা প্রশাসন, মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ), জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক (ডিপিএলও) ও বিডিওকে (মেমারি ১) জানিয়েছেন। প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিধায়ক তহবিল থেকে উন্নয়নের কাজে কেন ‘বিফল’ হতে হচ্ছে, তা-ও জানতে চান। জেলা প্রশাসন অবশ্য বিধায়ককে কোনও জবাব দেয়নি। বিরোধীদের দাবি, মেমারি ১ ব্লক বা পুরসভায় শাসকদের দু’টি শিবির আড়াআড়ি বিভক্ত। মেমারি ১ ব্লকে সব পঞ্চায়েতেই নেতারা বিধায়ক-বিরোধী শিবির, ব্লক সভাপতি নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী। এমনকি পঞ্চায়েত সমিতিও ব্লক সভাপতির ‘দখলে’। সম্ভবত সেই কারণেই পঞ্চায়েত সমিতি বা পঞ্চায়েত বিধায়ক তহবিলের কাজের অনুমোদন দিতে গড়িমসি করছে। এলাকার উন্নয়নও ‘আটকে’ থাকছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিধায়করা তাঁদের এলাকায় উন্নয়নের কাজের জন্য বছরে দু’টি ধাপে ৬০ লক্ষ টাকা পান। বিধায়ক (মেমারি) গত তিন বছরে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। চলতি আর্থিক বছরে প্রথম ধাপে আরও ৩০ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা বিধায়ক প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজে অনুমোদন না দেওয়ায় জেলা পরিকল্পনা দফতর দরপত্র ডাকা বা কাজের বরাত দিতে পারেনি।
বিধায়কের ক্ষোভ, “গত তিন বছরে মেমারি বিধানসভায় মাত্র ৩৮ লক্ষ টাকার কাজ করতে পেরেছি। বাকি কাজের জন্য নথি জমা দেওয়া আছে। জনস্বার্থে কাজের জন্য এই টাকা আমি খরচ করতে পারছি না। প্রশাসনের সর্বস্তরে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না থাকায় উন্নয়ন আটকে থাকছে। পরবর্তী টাকা পেতেও অসুবিধা তৈরি হচ্ছে।” তাঁর দাবি, বিশ্রামাগার, অ্যাম্বুল্যান্স, রাস্তার ধারে আলো, রাস্তার কাজ আটকে রয়েছে। এমনকী তাঁর গ্রাম, আমাদপুর বাসস্টপে ঘর, আমাদপুর বাজারে শিশুউদ্যানের সৌন্দর্যায়নের কাজও আটকে রয়েছে।
বিডিও (মেমারি ১) শতরূপা দাস বলেন, “কিছু কাজ আটকে ছিল। দু’একটা কাজ বাদ দিয়ে বাকি সব কাজের জন্য প্রধানরা ‘এনওসি’ দিতে শুরু করেছেন। আমরা ডিপিএলও-র কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি।” ডিপিএলও প্রদীপ্ত বিশ্বাস বলেন, “কাজ আটকে রয়েছে বলে বিধায়ক আমাদের কাছে এসেছিলেন। কাজ যাতে আটকে না থাকে তার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি।”
বিধায়কের অভিযোগ, “প্রধানদের কথা মতো অনেক জায়গায় পরিবর্তন করেছি। কাজ আটকে রাখলে বিধায়ক কাজ করেন না, সেটা বলার সুবিধা হবে। কিন্তু নথি কথা বলবে। প্রশাসনিক স্তরে কোথায় গাফিলতি হয়েছে, তদন্ত করলেই জানা যাবে।” বিরোধীদের দাবি নস্যাৎ করে দলের ব্লক সভাপতি বলেন, “নির্বাচনের জন্য কিছু জায়গায় কাজের অনুমতি দিতে দেরি হয়েছে। সব পঞ্চায়েতই অনুমোদন দিচ্ছে। তার পরেও কোনও অসুবিধা থাকলে বিধায়ক তো দলের প্রধানের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy