রবিবার দুর্গাপুরের পার্কে। নিজস্ব চিত্র
শেষমেশ রবিবার দুর্গাপুরের কুমারমঙ্গলম পার্কের দখল নিল দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট (ডিএসপি)। পার্ক পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থার মেয়াদ শেষ হলেও সংস্থাটি পার্ক ছেড়ে যায়নি। যা নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। দীর্ঘ আইনি লড়াই ও টানাপড়েনের পরে এ দিন মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে ও পুলিশের উপস্থিতিতে পার্কের দখল নেয় ডিএসপি।
আটের দশকের মাঝামাঝি ডিএসপি কর্তৃপক্ষ শহরের কেন্দ্রে ৮০ একর জায়গায় বিশাল একটি জলাশয়কে (‘লেক’) কেন্দ্র করে পার্কটি তৈরি করে। দেশের প্রথম ইস্পাতমন্ত্রী মোহন কুমারমঙ্গলমের নামে পার্কের নামকরণ করা হয়। বিশেষ আকর্ষণ ছিল ‘মিউজ়িক্যাল ফাউন্টেন’। নব্বই দশকের গোড়ায় ডিএসপি-র আর্থিক সঙ্কটের কারণে ১৯৯৪-এ বন্ধ হয় পার্কটি। পরে অবশ্য ২০০৬-এ পার্কটি ফের চালু করতে উদ্যোগী হয় ডিএসপি। পার্কের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি বেসরকারি সংস্থাকে।
চুক্তি নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ডিএসপি কর্তৃপক্ষ বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের প্রাথমিক রায় ডিএসপি-র পক্ষে যাওয়ায় কারখানার তরফে জলের লাইন, বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বন্ধ হয় মিউজিক্যাল ফাউন্টেন। তার পরে থেকে জল কিনে, বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা করে পার্ক, রেস্তরাঁ চালাতে শুরু করে বেসরকারি সংস্থাটি। সংস্থার বিরুদ্ধে কখনও ছট পুজো করতে বাধা দেওয়া, কখনও পার্কের কর্মীদের বেতন না দেওয়া, রাজনৈতিক কাজে পার্ক ব্যবহার করতে দেওয়া-সহ নানা অভিযোগ ছিল। ফেব্রুয়ারিতে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ঘিরে পার্কের ভিতরে মারধর, রেস্তরাঁয় ভাঙচুর, এমনকি প্রকাশ্যে গুলি চলার অভিযোগও ওঠে। পার্কের ভিতরে সন্ধ্যায় অসামাজিক কাজকর্ম চলারও অভিযোগ রয়েছে।
ডিএসপি কর্তৃপক্ষ জানান, আসানসোল জেলা আদালতের গত ৫ ফেব্রুয়ারির নির্দেশ মেনে রবিবার পুলিশ নিয়ে গিয়ে পার্কের দখল ফিরিয়ে নেওয়া হয়। পার্কে ঢোকা-বার হওয়ার সব গেট, অফিসঘর, রেস্তরাঁ, সব ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। তার আগে বেসরকারি সংস্থা তাঁদের কিছু কাগজপত্র, কম্পিউটার ইত্যাদি বার করে নিয়ে যায়। কোনও অশান্তি বা বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। সংস্থার কর্ণধার দেবাশিস রায় সেই সময়ে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি নথিতে সই করতে চাননি বলে জানা গিয়েছে। বিতর্ক এড়াতে পুরো ঘটনাটি ভিডিওগ্রাফ করা হয় বলে জানান ডিএসপি-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায়।
দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘আমরা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছি। এক বার শুনানিও হয়েছে। তার মাঝেই সরকারি সম্পত্তি দখলের আইনে জেলা আদালত থেকে নির্দেশ এনে বেআইনি ভাবে দখল নিয়েছে ডিএসপি। পার্কে প্রায় ছ’কোটি টাকা লগ্নি করেছি আমরা। তার ভবিষ্যৎ কী জানি না। সব দিক খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy