শনিবার বিজেপির আসানসোল জেলা অফিসে বিশেষ বৈঠক করতে আসেন মিঠুন। ফাইল চিত্র ।
চল ভাগ! বলিউড তথা টলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা তথা পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কোর কমিটির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীর মুখে শোনা গেল নতুন সংলাপ। আসানসোলের জেলা বিজেপি দফতরে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বেরোনোর সময় এক দল বাচ্চাকে দেখে মিঠুন ওই মন্তব্য করেন। যাকে প্রত্যক্ষদর্শীরা ‘খেদিয়ে দেওয়া’ বলতে চাইছেন।
সিনেমায় মিঠুনের বলা এক একটি সংলাপ বিভিন্ন সময়ে জনপ্রিয় হয়েছে। তাঁর সংলাপে বহু বার সিনেমা হলের আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে হাততালি দিয়েছেন গুণমুগ্ধরা। তবে তাঁর ‘‘চল ভাগ!’’ সংলাপে হাততালি পড়ল না। বরং সেই সংলাপ জন্ম দিল নতুন বিতর্কের। এ নিয়ে শোরগোলও শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপির অবশ্য দাবি, ওই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি! মিঠুন নিজেও পরে ওই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার। ওই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। বিজেপির আসানসোল জেলা অফিসে বিজেপির মণ্ডল প্রেসিডেন্ট, জেলা কমিটির সদস্য এবং আসানসোল পুর নিগমের কাউন্সিলরদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করতে আসেন মিঠুন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। মিঠুন এসেছেন শুনে জেলা অফিসের বাইরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল কিছু কচিকাঁচা। তাদের আবদার ছিল প্রিয় অভিনেতার সঙ্গে হাত মেলানোর।
এ দিকে বৈঠকের পর পাণ্ডবেশ্বরে দলীয় জনসভার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল মিঠুনের। আসানসোলের বৈঠক শেষে মিঠুন দফতরের বাইরে আসতেই বাচ্চারা হইহই করে চিৎকার শুরু করে। কিন্তু মিঠুন তাদের পাত্তা দেননি। তিনি স্রেফ বলেন, ‘‘চল ভাগ!’’ বাচ্চারা হতচকিত হয়ে সেখানেই থমকে যায়। মিঠুন তাদের সামনে দিয়ে সোজা গটগটিয়ে গাড়িতে উঠে যান। কালক্ষেপ না করে রওনা দেন পাণ্ডবেশ্বরের উদ্দেশে। মিঠুন বৈঠকে ঢোকার সময় কচিকাঁচাদের কেউ কেউ তাঁর সঙ্গে হাত মেলাতে পেরেছিল। তবে তিনি বেরিয়ে আসার পর কেউ আর তাঁর সঙ্গে হাত মেলাতে পারেনি। ওই পুরো ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে (যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
শিশুদের প্রতি মিঠুনের ওই ব্যবহার প্রসঙ্গে রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা আসানোল-দুর্গাপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণ বাচ্চাদের সঙ্গে হাত মেলাতে এবং স্পর্শ করতে যাদের রুচিতে বাধে, তারা রাজ্যবাসীর সেবা করবে কী ভাবে। মিঠুন চক্রবর্তী উচ্চমাপের অভিনেতা। এটাই হয়তো তাঁর কাজ। তিনি নিজের মতো করেই সেটা করেছেন।’’ মিঠুনের ব্যবহারের নিন্দায় সরব হয়েছেন তৃণমূলের অন্য নেতারাও।
তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। মিঠুন চক্রবর্তী সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেল্ফি তোলা থেকে হাত মেলানো— সবই করেন। রাজ্যের যে যে জায়গায় তিনি গিয়েছেন, সেই সমস্ত জায়গাতেই তাঁকে মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেখা গিয়েছে। যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা পুরোপুরি অসত্য। বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাতে দস্তানা পরে আদিবাসীদের সঙ্গে নৃত্যে অংশ নিয়েছেন। যাতে তাঁকে আদিবাসীদের স্পর্শ করতে না হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy