Advertisement
E-Paper

ধান কিনতে পরচা দেখার অনুরোধ

সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে গিয়ে সরকার দেখছে, ওই প্রকল্পে নাম রয়েছে এমন এক তৃতীয়াংশ চাষি সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে ‘উৎসাহী’ নন।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০০
Share
Save

প্রাথমিক ভাবে তিন লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল খাদ্য দফতরের জেলা স্তরের মনিটরিং কমিটি (ডিএলএমসি)। মঙ্গলবার সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যেতেই সহায়ক মূল্যে ধান কেনার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে তারা। তবে এর জেরে ধান কেনার গতি কিছুটা শ্লথ হবে বলে মনে করছেন অনেকে। চাষিদের একাংশের অভিযোগ, রেজিস্ট্রেশনের পরে কবে ধান বিক্রি করতে পারব, সেটা খাদ্য দফতরের পারচেজ অফিসারেরা ঠিক ভাবে জানাতে পারছেন না। ফলে ধান বিক্রি নিয়ে হয়রানির সম্ভাবনা বাড়ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এখনও পর্যন্ত ৮৮ হাজারের সামান্য বেশি চাষির কাছ থেকে ধান কিনেছে জেলা খাদ্য দফতর। তাতেই সাড়ে তিন লক্ষ টনের কাছাকাছি ধান কেনা হয়ে গিয়েছে। ধান বিক্রির জন্যে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন ১ লক্ষ ১০ হাজারের বেশি চাষি। তার মধ্যে ৯০ হাজারের বেশি চাষি ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে রয়েছেন। বাকিরা মূলত ভাগচাষি বা ঠিকাচাষি।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭৫৯ জন চাষি রয়েছেন। এর অর্ধেকও ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হননি। আবার সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে গিয়ে সরকার দেখছে, ওই প্রকল্পে নাম রয়েছে এমন এক তৃতীয়াংশ চাষি সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে ‘উৎসাহী’ নন। সেই কারণে খাদ্য দফতরের কর্তারা মনে করছেন, ‘অভাবী’ ধান চাষির ঘরে পড়ে থাকার সম্ভাবনা কম।

এক ঝলকে

সহায়ক মূল্যে সাড়ে তিন লক্ষ টনের কাছাকাছি ধান কেনা হয়েছে এখনও পর্যন্ত।

ধান দিয়েছেন ৮৮ হাজারের সামান্য বেশি চািষ।

নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন এক লক্ষ ১০ হাজার চাষি। তার মধ্যে ৯০ হাজার চাষি কৃষকবন্ধু আওতায় রয়েছেন।

জেলায় মোট চাষি ৪ লক্ষ ৫৫ হাজারের বেশি।

চাষিদের দাবি

খোলা বাজারের থেকে সরকার ধানের দাম বেশি দিচ্ছে। কিন্তু নাম নথিভুক্তিকরণের পরে কবে ধান কেনা হবে স্পষ্ট জানানো হচ্ছে না।

জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার খাদ্য দফতর থেকে জেলা প্রশাসনকে সরাসরি চিঠি দিয়ে ধান কেনার প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। ওই চিঠিতেই জানানো হয়েছে, অনেক চাষিই দ্বিতীয়বার সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির আবেদন করতে পারেন বা শেষ মূহুর্তে অনেকে ধান বিক্রি করতে পারেন। চাষিদের জমির পরচা অনুযায়ী ফসলের উৎপাদন দেখার কথা বলা হয়েছে। ডিএলএমসি বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। খাদ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “খোলা বাজারে দাম কম থাকায় অনেক চাষিই সহায়ক মূল্যে ধান দেওয়ার কথা ভাবছেন। সে জন্য তাঁরা ধান গোলায় রেখে দিয়েছেন। সরকার যে সব ধান কিনতে পারবে না, সেই বার্তাও চাষিদের স্পষ্ট ভাবে দেওয়া জরুরি।’’

বর্তমানে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করে প্রতি কুইন্টালে চাষি পাচ্ছেন ১৮৩৫ টাকা। সেখানে খোলা বাজারে দাম ১৫০০-১৫৩০ টাকা (বুধবারের দাম)। অর্থাৎ সরকারকে ধান দিলে প্রতি কুইন্টালে ৩০০ টাকার বেশি পাচ্ছেন চাষি। গলসির বেলান গ্রামের চাষি নারায়ণ হাজরা, কুরকুবার আয়েশ মোল্লা, মেমারির সঞ্জয় দাসদের কথায়, “সহায়ক মূল্যে ধানের দাম অনেক বেশি। তাই খোলা বাজারে ধান বিক্রি করিনি। আমাদের বিশ্বাস, সরকার ফের আমাদের ধান কিনবে।’’ আবার বর্ধমান ১ ব্লকের কিসান মান্ডিতে নাম নথিভুক্ত করাতে আসা আনসার খান, অঞ্জলি হাজরাদের অভিযোগ, “কাউকে ধান বিক্রি করার জন্য লম্বা সময় দেওয়া হচ্ছে তো কাউকে কবে ধান বিক্রি করতে পারবে সেটাও জানানো হচ্ছে না। এতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’’

খাদ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “ডিএলএমসির বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত ধান কেনার গতি কিছুটা শ্লথ হবে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে।’’ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলেন, “কৃষকবন্ধু পোর্টালেই চাষিদের জমির পরিমাণ থেকে যাবতীয় তথ্য মিলবে।’’

DLMC Rice Subsidy Framers Jyotipriya Mallick Paddy

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}