আনাজের পসরা। সেন মার্কেটে। নিজস্ব চিত্র।
দিন দিন যেন ‘আগুন’ লাগছে আনাজে, সে দুর্গাপুর হোক বা আসানসোল মহকুমার বাজার। এই পরিস্থিতিতে থলি ভর্তি বাজার করা এখন যেন তাঁদের দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, জানাচ্ছেন জেলার আমজনতা। কবে স্বস্তি ফিরবে, তা-ও বলতে পারছেন না আড়তদারেরাও। এই দাম বৃদ্ধির কারণ হিসাবে অতিবৃষ্টি ও পরিবহণ খরচকেই দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতাদের দাবি, প্রতি বছর উৎসবের মরসুমে আনাজের দাম নাগালের মধ্যেই থাকে। কিন্তু এ বছর ছবিটা একটু অন্য। রবিবার দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে দেখা গেল, প্রতিটি আনাজের দামই বেড়েছে। বিক্রেতারা জানালেন, অন্য বছর বাঁধাকপি ও ফুলকপি বাদ দিয়ে অন্য আনাজের দাম নাগালের মধ্যেই থাকে। যেমন, গত বছর এই সময়ে পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শের মতো আনাজের কেজি প্রতি দাম ছিল ২০-৩০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এ বছর সেই আনাজেরই দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা প্রতি কেজি। শুধু এগুলিই নয়। এখন বাজারে যে সব আনাজ রয়েছে, তার বেশির ভাগেরই দাম ৬০ টাকা কেজির উপরেই। দুর্গাপুরের তুহিন রায়, শুভজিৎ ঘোষেরা বলেন, “এখন ৬০ টাকার কমে কিছু নেই। ফলে, অনেকেই কম পরিমাণে আনাজ কিনছেন।” দুর্গাপুরের বড় বাজার সেন মার্কেট। এ দিন সেখানে বেগুন, পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়সের মতো আনাজের খুচরো দর ছিল ৬০ টাকা প্রতি কেজি। আবার বাঁধাকপি ৪০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হয়েছে। টোম্যাটোর কেজি ৮০ টাকা ছুঁয়েছে। গাজরের দামও একই। আলু বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকা প্রতি কেজিতে। ব্যবসায়ী শচীনচন্দ্র দাস ও নিঠুর মজুমদাররা জানালেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি অনেকটাই কমেছে।
এ দিন আসানসোল বাজারে সপ্তাহ খানেক আগের তুলনায় প্রত্যেক আনাজে কেজিতে পাঁচ থেকে দশ টাকা বেড়েছে, জানালেন ক্রেতারা। আসানসোল ও বার্নপুর বাজারে যেমন, পেঁয়াজ ৩০, শসা ৩০, আদা ৪০, রসুন ৫০, টোম্যাটো ৫০, পেঁপে ১৬, মুলো ২০, সিম ৪০, করলা ৪০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আসানসোলের ক্রেতা তুষারকান্তি মণ্ডল, সৌরভ রায়রা বলেন, “আনাজের দাম বেশ চড়া। তাই হেঁশেলে ও পকেট বুঝে প্রয়োজনের তুলনায় কম মাত্রায় আনাজ
কিনতে হচ্ছে।”
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুর্গাপুরের আড়তদাররা জানান, দুর্গাপুজোর আগেই বৃষ্টিতে বাঁকুড়া, কাঁকসার মতো নদের পাড়ের এলাকা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছিল। ফলে, অনেক আনাজ নষ্ট হয়েছে। স্থানীয় চাষিদের কাছ থেকে জোগান কমে গিয়েছে। এখন বেঙ্গালুরু, মহারাষ্ট্র, রাঁচি থেকে আনাজ আসছে। ফলে, পরিবহণ খরচও অনেকটাই বেড়েছে। এই সব নানা কারণে আনাজের দান বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সেন মার্কেটের ব্যবসায়ী সাগর সাহা। একই বক্তব্য আসানসোল বাজারের খুচরো ব্যবসায়ী লছমন মোদী, বিজয় ভগৎ। পাইকারি ব্যবসায়ী সুরেশ সাও, তরুণ ভগতের। আসানসোল আনাজ বাজার কমিটির সভাপতি নন্দদুলাল পাল জানান, আনাজের দাম এক রকম থাকে না। এখন চড়া ঠিকই। কালীপুজো, ছটপুজো পেরিয়ে গেলেই দাম আবার কম হয়ে যাবে, বলে তিনি আশাবাদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy