Advertisement
E-Paper

আস্থা হারাচ্ছে বার বার, শঙ্কা উন্নয়ন নিয়েও

মঙ্গলবারই পুরপ্রধান প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন ১১ জন পুর প্রতিনিধি। তাঁদের দাবি, পুরপ্রধান তাঁদের মান্যতা দেন না। উন্নয়নের কাজও করতে চান না।

দাঁইহাট পুরসভা।

দাঁইহাট পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

প্রণব দেবনাথ

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫২
Share
Save

গত পাঁচ বছরে তিন বার ‘মাথা বদল’। তার পরেও স্থিতি নেই দাঁইহাট পুরসভার।

তৃণমূলের একাধিক পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনছেন দলের পুর-প্রতিনিধিরা। দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যস্তরে দলনেত্রীর নির্দেশে মন্ত্রীরা যুযুধান পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। তার পরেও পরিস্থিতির বদল হয়নি।

মঙ্গলবারই পুরপ্রধান প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন ১১ জন পুর প্রতিনিধি। তাঁদের দাবি, পুরপ্রধান তাঁদের মান্যতা দেন না। উন্নয়নের কাজও করতে চান না। পুরপ্রধানের পাল্টা যুক্তি, আগের আমল থেকেই ঋণের বোঝা, দুর্নীতির বোঝা মাথায় চেপে গিয়েছে তাঁর। আর এই দু’পক্ষের মধ্যে সংশয়ে শহরবাসী। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, নিজেদের লড়াই থামলে তবে তো উন্নয়নের দিকে, পুরবাসীর সমস্যার দিকে চোখ যাবে। গ্রিনসিটি প্রকল্পে উন্নয়ন, নিকাশ ব্যবস্থা, রাস্তার হাল সবই মুখ থুবড়ে পড়ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে পরিবর্তনের পরেও ১৪ আসনের দাঁইহাট পুরসভা অধরা ছিল তৃণমূলের কাছে। ২০১৫ সালে পুরভোটে কংগ্রেস হেরে যায়। ন’জন সদস্যকে নিয়ে পুরসভা দখল করে সিপিএম। ২১ এপ্রিল পুরপ্রধান হন সিপিএমের বিদ্যুৎবরণ ভক্ত। ২০১৮ সালে সিপিএম থেকে পাঁচ জন পুর প্রতিনিধিকে ‘ভাঙিয়ে’ নিয়ে এসে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তৃণমূল অনাস্থা আনে। অনাস্থা পাশ হয়ে যাওয়ায় ওই বছরেরই ১২ মার্চ পুরপ্রধান হন শিশিরকুমার মণ্ডল। করোনার জেরে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আরও দু’বছর পুর-প্রশাসকের দায়িত্ব সামলান তিনি। ২০২২ সালে পুরভোটে বিরোধীশূন্য পুরসভায় ফের শিশির পুরপ্রধান হন। কিন্তু, মাস সাতেক পরেই একটি অশালীন ভিডিয়ো এবং অডিয়ো কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ওই বছরের ৭ নভেম্বর পুরপ্রধানের দায়িত্বে আসেন সিপিএম ছেড়ে আসা প্রদীপ রায়।

কার্যত সেই সময় থেকেই তৃণমূলের পুর প্রতিনিধিদের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছিল বলে দাবি দলেরই একাংশের। ফলে বিক্ষুব্ধ ১১ জন পুরপ্রতিনিধি টানা এক বছর ধরে মাসে মাসে হওয়া বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দিচ্ছিলেন না। বিবাদ মেটাতে প্রথমে জেলা নেতৃত্ব চেষ্টা করে। সপ্তাহ দুয়েক আগে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বৈঠক হলেও তা কাজে আসেনি। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে এই পরিস্থিতি দলের জন্য সুখকর নয়, মানছেন নেতারাও।

দাঁইহাট শহর তৃণমূল সভাপতি রাধানাথ ভট্টাচার্য বলেন, “অনাস্থার পরিবেশ দলীয় নেতৃত্ব ভাল ভাবে নিচ্ছে না। আস্থা আনতে নিশ্চই কিছু একটা পদক্ষেপ নেবে।’’

দাঁইহাটের উপ-পুরপ্রধান অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। আমরা সিদ্ধান্ত থেকে কোনও মতেই পিছিয়ে আসব না।” পুরপ্রধান প্রদীপ রায় বলেন, “যা হচ্ছে তা মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছেন না। এমনও হতে পারে আস্থা বৈঠক ডাকার আগেই নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Daihat

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}