পুকুরের জলে কাঠামো। উপরে, বর্ধমানের শ্যামসায়রে। নীচে, মেমারির ডাকবাংলো দুধপুকুরে। নিজস্ব চিত্র
খাতায়-কলমে পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন করা নিষেধ। কিন্তু বিধি উড়িয়ে প্রতি বছরই বর্ধমান ও মেমারি শহরের একাধিক পুকুরে চলে প্রতিমা নিরঞ্জন। শহরের বাসিন্দাদের দাবি, বিসর্জন শেষ হওয়ার বহু দিন পরেও পুকুরে জমে থাকে কাঠামো, পুজোর উপকরণ। প্রশাসন যেখানে নির্মল পরিবেশের কথা বলছে বারবার, সেখানে জলাশয় সাফ না হলে দূষণ রোখা মুশকিল, দাবি তাঁদের।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক অপূর্বরতন ঘোষের কথায়, “শহরের পুকুরে বিসর্জনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। তার পরেও যথেচ্ছ হারে বিসর্জন হয়েই চলেছে। পুরপ্রশাসন থেকে পুজো উদ্যোক্তা, কেউ যে দূষণ নিয়ে মাথা ঘামায় না, এটা বোঝা যাচ্ছে।’’ পূর্বস্থলীর জাতীয় শিক্ষক অরূপ চৌধুরীও বলেন, “প্রতিমা জলাশয়ে বিসর্জন দেওয়া মানে ওই জলকে ভয়ঙ্কর ক্ষতির মধ্যে ফেলা।’’
বর্ধমান শহর ঘুরে দেখা যায়, শ্যামসায়র, রানিসায়র-সহ অনেক পুকুর পাড়েই পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামো। মেমারির ডাকবাংলো-দুধপুকুরেও অন্তত ৮-১০টি প্রতিমার কাঠামো ভাসতে দেখা যায়। তার সঙ্গে পচছে খড়, ফুল-সহ পুজোর অন্য উপকরণও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিসর্জনের পরে জল থেকে কাঠামো তোলার ক্ষেত্রে নজর রাখে না কেউ। তার জেরে দূষণ ছড়াচ্ছে। দু’-এক দিনের মধ্যে সাফাই না হলে ভিজে খড়, ফুল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াবে, দাবি তাঁদের।
বর্ধমানের অনেক পুজো কমিটি পুকুরের বদলে বাঁকা নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন করে। নির্দেশ অনুযায়ী, বিসর্জনের পরে প্রতিমার কাঠামো বাঁকা থেকে তুলে ফেলার কথা। কিন্তু পুরসভা বা পুজো উদ্যোক্তা, কেউই তা করেন না বলে অভিযোগ। তার ফলে ‘দূষিত’ বাঁকায় দূষণ বাড়ে আরও। আবার বর্ধমান শহরের পাশ দিয়ে দামোদর গিয়েছে। কিন্তু সেখানে বিসর্জন করতে যেতে চায় না শহরের বেশির ভাগ পুজো কমিটি। মেমারির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গাঙুর নদীর দিকেও পা বাড়াতে অনীহা রয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের। তাঁদের দাবি, শোভাযাত্রা করে শহরের বাইরে যাওয়া মুশকিলের। অগত্যা ভরসা সেই পুকুর।
মেমারির উপপুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্ত বলেন, “প্রতিমা নিরঞ্জনের পরে কাঠামো সরানোর দায়িত্ব পুজো কমিটিরই। তাঁরা সেই দায়িত্ব পালন না করলে পুরসভা পরিষ্কার করে দেবে।’’ বর্ধমান শহরের দুর্গাপুজো সমন্বয় কমিটির অন্যতম কর্তা কাঞ্চন সোমের কথায়, “এ নিয়ে ভাবার সময় হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বিকল্প ব্যবস্থার সন্ধান করতে হবে।’’ কিন্তু বর্ধমানে যেহেতু বর্তমানে পুরবোর্ড নেই, ফলে কাঠামো সরিয়ে নেওয়ার বার্তা পৌঁছয়নি, দাবি উদ্যোক্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy