কাটোয়াতে বন্ধ ফেরি চলাচল। নিজস্ব চিত্র
‘বুলবুলের’ দাপটে শনিবার সকাল থেকেই ফুঁসছে অজয়, দামোদর। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে শনিবার দুপুর থেকে কাটোয়া ও দাঁইহাটে ফেরিঘাটগুলি বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানাল প্রশাসন। কিন্তু আগাম কিছু না জানিয়ে ফেরি বন্ধ করায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে নৌকা চালানোর দাবি জানান তাঁরা। এ নিয়ে যাত্রীদের একাংশের সঙ্গে মাঝি ও ইজারাদারদের বচসাও হয়।
তবে মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল বলেন, ‘‘বিপদ এড়াতে মহকুমার প্রতিটি ফেরিঘাট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্ভোগের থেকে মানুষের জীবনের দাম অনেক বেশি। আবহাওয়ার উন্নতি হলে ফের ফেরিঘাটগুলি খুলে দেওয়া হবে।’’
পুলিশ জানায়, কাটোয়া মহকুমার মধ্যে বল্লভপাড়া, শাঁখাই ও মাটিয়ারি ফেরিঘাট দিয়ে সব থেকে বেশি মানুষ নদী পারাপার করেন। এর মধ্যে আবার বল্লভপাড়ার ফেরিঘাটটি সব থেকে ব্যস্ত। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফি দিন নদিয়া ও পূর্ব বর্ধমান, এই দুই জেলার নানা প্রান্তের প্রায় হাজার চারেক মানুষ ফেরি-পথ ব্যবহার করেন। তা ছাড়া, ভারী যানবাহনকেও এই পথ দিয়েই পার করানো হয়। এ দিকে, অজয় ও ভাগীরথীর সঙ্গমস্থল শাঁখাই ফেরিঘাট দিয়েও সকাল থেকে রাত অনেকে যাওয়া-আসা করেন। দাঁইহাটের মাটিয়ারি ফেরিঘাটও অত্যন্ত ব্যস্ত। নদিয়ার নানা এলাকার বাসিন্দারা এই ঘাটটি ব্যবহার করেন।
প্রতিদিনের মতো শনিবার সকাল থেকে এই ঘাটগুলিতে ভিড়ও জমান এলাকাবাসী। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশে বেলা ১২টার পরে থেকে সব কটি ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর পরেই সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। কেতুগ্রামের নলিয়াপুরের বাসিন্দা দেবাশিস রাজ বলেন, ‘‘কাটোয়া থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার জন্য দুপুরে শাঁখাই ফেরিঘাটে যাই। কিন্তু নৌকা বন্ধ থাকায় প্রায় ২৫ কিলোমিটার ঘুরে বাড়ি পৌঁছতে হয়েছে।’’ শাঁখাই গ্রামের টোটোন বর্মণ নামে এক বাসিন্দা জানান, ফেরি বন্ধে সব থেকে সমস্যায় পড়েন রোগীরা। এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা জানান, নৌকা না চলায় তাঁকে প্রায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার ঘুরে কাশিরাম দাস সেতু পেরিয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আসতে হয়েছে।
একই ভাবে বল্লভপাড়া ফেরিঘাটে দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে আটকে পড়েন কালীগঞ্জের জেসমিন বিবি। তিনি বলেন, ‘‘নৌকা ছাড়বে বলে প্রায় তিন ঘণ্টা ঘাটে অপেক্ষা করলাম। পরে বাধ্য হয়ে শহরের কেশিয়াপাড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠতে হল।’’
কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, যাত্রী-নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত। তবে, ফেরিঘাট লাগোয়া পুরসভার যাত্রিনিবাস শনিবার খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান রবীন্দ্রনাথবাবু।
একই ভাবে শনিবার দুপুর থেকে কালনা ফেরিঘাটেও লঞ্চ-সহ যাবতীয় ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় মহকুমা প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বেলা ১টা নাগাদ ফেরিঘাটের ইজারাদারদের পরিষেবা বন্ধের বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy