নজরুল শতবার্ষিকী ভবনের উদ্বোধনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে থেকে দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই সূত্রেই তাঁর যোগ ছিল খনি-শিল্পাঞ্চলের সংস্কৃত জগতের সঙ্গেও। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে তাইশোকের আবহ পশ্চিম বর্ধমানের সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে।
কুলটির বাসিন্দা কবি, সাহিত্যিক তথা সঙ্গীতশিল্পী সমীপেন্দ্র লাহিড়ি জানান, তাঁর সঙ্গে বুদ্ধদেবের যোগাযোগ ষাটের দশকে। কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসে তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সেখানে শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গেআড্ডা দিতে আসতেন বুদ্ধদেব। সমীপেন্দ্র জানান, সেখানেই তিনি বুদ্ধদেবকে বলেছিলেন, ‘আপনি প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র, কবিতা লেখেন, আবৃত্তি করেন এবং সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো। সে কারণে আপনাকে আমার খুব হিংসে হয়।’ বুদ্ধদেব তখনই জবাব দেন, ‘তুমি কবিতা লেখো। ভাল গান করো। তাই তোমাকেও আমার হিংসেহয়।’ আশির দশকে সমীপেন্দ্র দূরদর্শনে একটি অনুষ্ঠান সম্পাদনা ও সঞ্চালনা করতেন। তিনি জানান, তখনও নিয়মিত বুদ্ধদেবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। মুখ্যমন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার পরে প্রায় প্রতি বছরই বুদ্ধদেবের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেছেন। গত বছরও দেখা করে এসেছিলেন।
১৯৯৫ সালে তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রী থাকাকালীন আসানসোল গ্রামেসুভাষ সমিতির সুভাষ গ্রন্থাগারের উদ্বোধনে আসেন বুদ্ধদেব। ওই সংগঠনের সম্পাদক সমর রায়বলেন, ‘‘সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বহিসেবেও তাঁকে আমরা মনে রাখব।’’ জামুড়িয়ায় ২০০৭ সালে নজরুল শতবার্ষিকী ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবু। একই সময়ে কুনস্তরিয়া প্রগতি স্টেডিয়ামে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)এবং ইসিএলের যৌথ ভাবে আয়োজিত খনি উৎসবের সূচনাও করেন তিনি, জানান সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরী। বার্নপুরের বাসিন্দা, গণসঙ্গীত শিল্পী অভিজিৎ মিত্র জানান, গণসংস্কৃতি আন্দোলনের অন্যতম মুখ সাধন দাশগুপ্ত শেষ জীবনে আসানসোলে থাকতেন। মৃত্যুর আগে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। খবর পেয়ে পরদিন বুদ্ধদেব হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।
চুরুলিয়ার নজরুল অ্যাকাডেমির প্রাক্তন সম্পাদক তথা কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাইপো কাজী রেজাউল করিম জানান, চুরুলিয়ার নজরুল মেলায় একাধিক বার এসেছিলেন বুদ্ধদেব। অ্যাকাডেমির মুজফফর আহমেদ ভবনের সংগ্রহশালায় নজরুলের জীবনি উপহার দেন।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণের পরে সেই সব স্মৃতিই ঘুরেফিরে আসছেখনি অঞ্চলের সংস্কৃতিমনস্ক মানুষজনের স্মৃতিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy