৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে রানিগঞ্জ ও মেজিয়ার মাঝে রয়েছে এই সেতু। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় সেতু বেহাল হয়ে পড়েছে, মাঝেমাঝেই অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই মেজিয়া সেতু দেখভালের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বিধানসভায় রাজ্য সরকারকে আর্জি জানালেন রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত।
পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ ও বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের মধ্যে দামোদরের উপরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায় আড়াই দশক আগে তৈরি হয়েছিল সেতুটি। সাধারণের ব্যবহারের জন্য আটশো মিটার লম্বা সড়ক সেতু ও মেজিয়ায় নিজেদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুবিধায় রেলসেতুটি তৈরি করেছিল ডিভিসি। আসানসোল মহকুমা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অসংখ্য গাড়ি ও মোটরবাইক ছাড়া, এই সেতু দিয়ে দৈনিক শ’খানেক দূরপাল্লার বাস ও পাঁচশোর বেশি পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুর উপরে বিভিন্ন অংশে গর্ত তৈরি হয়েছে। একাংশে রডের কাঠামো বেরিয়ে গিয়েছে। সেতুর এক দিকে ফুটপাত থাকলেও রেলিংয়ের বেশ কয়েক জায়গায় ঢালাই ভেঙে যাওয়ায় পথচারীদের অনেকে ব্যবহার করেন না। বিধায়ক রুনুবাবু জানান, এই সেতু পশ্চিম বর্ধমানের সঙ্গে বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর-সহ নানা জেলার যোগাযোগের অন্যতম বড় ভরসা। ডিভিসি ১৯৮৯ সালে সেতু তৈরিতে উদ্যোগী হয়। তবে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ সেতু তৈরির আগেই জানিয়ে দেন, তাঁরা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করবেন না। বছর দশেক আগেও ডিভিসি-র তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেতু রক্ষণাবেক্ষণে তাঁদের কোনও দায়িত্ব নেই।
রুনুবাবুর অভিযোগ, ‘‘তার পরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বা রাজ্য সরকার—কোনও তরফেই সেতু রক্ষণাবেক্ষণে পদক্ষেপ করা হয়নি। সেতু লাগোয়া এলাকা থেকে যন্ত্রের সাহায্যে বেআইনি ভাবে বালি কেটে পাচার করছে দুষ্কৃতীরা। তাতে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে সেতুটি। সোমবার বিধানসভায় রাজ্য সরকারের কাছে এই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেওয়ার লিখিত আবেদন জানালাম।’’
সেতু সংলগ্ন বাঁকুড়ার অর্ধগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মলয় মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, সিমেন্টের খুঁটিতে লোহার সকারের উপরে ঢালাই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সেতুটি। প্রতি তিন বছর অন্তর রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। কিন্তু সেতু তৈরি হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত তা হয়নি। তার জেরে সেতু দুর্বল হয়ে পড়ছে। মলয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পঞ্চায়েতের তরফে শাসনের নানা স্তরে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।”
মেজিয়ার বিডিও অনিরুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। আমি সেতু পরিদর্শন করেছি। জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy