মাস্ক নেই অনেকেরই। বাঁ দিক থেকে, বর্ধমান শহরের কাছারি রোডে। কাটোয়ায় ও পূর্বস্থলীর চুপিতে। —নিজস্ব চিত্র
বর্ষশেষে ‘বিধি ভাঙা’ও চলেছে, মাস্ক পরা নিয়ে বিশেষ প্রচারে নেমেছে পুলিশও। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে বিধি ভাঙার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। পিকনিক বা অনুষ্ঠানে সাউন্ড বক্স বাজানো নিয়েও কড়া ভূমিকা নেয় পুলিশ। বর্ধমান শহরের অনেক বাসিন্দারই দাবি, পুলিশের নজরদারিতে দিনভর সাউন্ড বক্সের দাপাদাপি তেমন ছিল না। তবে রাত বাড়তেই বাড়ে বিধি ভাঙা।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) প্রিয়ঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘আমরা ফের করোনা প্রতিরোধে কড়াকড়ি শুরু করেছি। পুলিশকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’ পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনও বলেন, ‘‘বিভিন্ন পিকনিক-স্পটে হানা দিয়েছি। আমি নিজে বাঁকুড়া মোড়ে গিয়ে পিকনিক করতে যাওয়া মানুষজনকে সতর্ক করেছি। বছরের প্রথম দিনও আমাদের কড়াকড়ি থাকবে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র বর্ধমান থানায় মাস্ক না পড়া, মত্ত অবস্থায় থাকার অভিযোগে ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শুক্রবার মত্ত অবস্থায় ঘোরাঘুরি করার অভিযোগে জেলা পুলিশ ৬০ জনকে গ্রেফতার করে।
এ দিন পথেঘাটে কাউকেই তেমন মাস্ক পরে দেখা যায়নি। তরুণ-তরুণীদের অনেককেই লাগামছাড়া গতিতে মোটরবাইক বা স্কুটি চালাতে দেখা যায়। পারবীরহাটা মোড়ের কাছে দাঁড়িয়ে এক যুবক বলেন, ‘‘রাস্তায় তো কেউ মাস্ক পরছে না। খামোকা আমিই বা পরব কেন?’’ মাস্ক পরলে জোরে মোটরবাইক চালাতে অসুবিধা হয় বলেও দাবি করেন তিনি। পিছনে বসা তরুণীও সম্মতি দেন তাঁর কথায়। তবে শহরের বেশির ভাগ হোটেল ও ‘ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা’ বর্ষ বরণের উৎসব বন্ধ রেখেছে। কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কাছে একটি হোটেলে অবশ্য বর্ষ বরণের অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে হাজির লোকজনের দাবি, ‘‘করোনার ভয়ে কী ঘরে বসে থাকব! হুল্লোড় করতে গেলে অত নিয়ম মানা যায় না।’’
কাটোয়া শহরেও শপিংমল, বাজারে অন্য দিনের তুলনায় বেশি ভিড় ছিল। সন্ধ্যায় ভিড় বাড়ে রেস্তরাঁয়। তবে বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। পুলিশ, প্রশাসনের তরফে টোটোয় মাইক বেঁধে প্রচার করা হলেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়নি। কালনা শহরের ১০৮ শিবমন্দির, রাজবাড়ি চত্বরে সকাল থেকেই পর্যটকদের ভিড় ছিল। পিকনিক দলের কেনাকাটায় ভিড় বেশি ছিল চকবাজার, ধাত্রীগ্রাম, পারুলিয়া বাজারেও। চুপির পাখিরালয়ে বহু দল পিকনিক করে। দূরত্ববিধি, স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি বেশির ভাগ দলকেই। কালনা শহরের এক বাসিন্দা রাকেশ ঘোষ বলেন, ‘‘এলাকায় করোনা নেই। তাই মাস্ক পরছি না।’’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘‘মাস্ক পরা ও জমায়েত এড়ানোর বিষয়ে মানুষকে আরও সতর্ক হতে হবে। আরও কঠোর হতে হবে প্রশাসনকেও।’’ চিকিৎসকদের একাংশের কথায়, ‘‘অতিমারির তৃতীয় ঢেউ যে আছড়ে পড়তে শুরু করেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশাসনের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে আমরা কোভিড-বিধি উড়িয়ে বেপরোয়া মনোভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াব, এটা হতে পারে না। সাধারণ মানুষকেও সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিকের পরিচয় দিতে হবে।’’ পূর্বস্থলী ২ ব্লকে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় করোনা-সচেতনতা নিয়ে একটি বৈঠক হয়। ছিলেন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়, বিএমওএইচ প্রশান্ত সরকার। প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকা ধরে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy