Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Court

বর্ধমান জিআরপির ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন, হাওড়া জিআরপির সুপারকে বলল আদালত

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ মার্চ বর্ধমান স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে অজয়কুমার বর্মাকে আটক করে জিআরপি। তল্লাশিতে তার কাছ থেকে প্রায় ১৫ কেজি রূপো উদ্ধার হয়।

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৪ ২৩:২১
Share: Save:

গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন না মানার জন্য বর্ধমান জিআরপির ওসি ও তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হাওড়া জিআরপির সুপারকে নির্দেশ দিলেন বর্ধমানের জেলা জজ সুজয় সেনগুপ্ত। এছাড়াও ওসি ও তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা কলকাতা হাই কোর্টে করার বিষয়ে ধৃতকে স্বাধীনতা দিয়েছেন জেলা জজ। এই ঘটনায় পুলিশ মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ধৃতের আইনজীবী পার্থ হাতি বলেন, ‘‘জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাজেয়াপ্ত হওয়া রূপো ফেরত দেওয়ার জন্য জিআরপিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশ মানা হয়নি। এফআইআর না করেই জেনারেল ডায়েরির ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ দেওয়া সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা রয়েছে তাও মানা হয়নি। এমনকি জেলা জজের নির্দেশও অমান্য করা হয়েছে। তাই, জিআরপির ওসি ও তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন জেলা জজ। হাওড়া জিআরপির সুপারকে দু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন জেলা জজ। এ ছাড়াও গ্রেফতারির ক্ষেত্রে নির্দেশিকা না মানার জন্য আদালত অবমাননার মামলা হাই কোর্টে দায়ের করার স্বাধীনতাও ধৃতকে দিয়েছেন বিচারক।’’

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ মার্চ বর্ধমান স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে অজয়কুমার বর্মাকে আটক করে জিআরপি। তল্লাশিতে তার কাছ থেকে প্রায় ১৫ কেজি রূপো উদ্ধার হয়। রুপোর বৈধ কোনও কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তা চুরির অনুমান করে ডায়েরি নথিভুক্ত করে তাকে গ্রেফতার করে জিআরপি। পরের দিন আদালতে পেশ করা হলে ধৃতের জামিন মঞ্জুর করে সিজেএম আদালত। এর পরেই বাজেয়াপ্ত হওয়া রূপো ফেরত চেয়ে আদালতে আবেদন করেন অভিযুক্ত। জিআরপিকে বাজেয়াপ্ত হওয়া রূপো ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় আদালত। যদিও সেই নির্দেশ মানেনি জিআরপি। জিআরপির ওসি ও তদন্তকারী অফিসার আদালতে আবেদন করে জানান, বাজেয়াপ্ত হওয়ার রূপোর মালিকানা সংক্রান্ত বৈধ কোনও কাগজপত্র পেশ করতে পারেনি অভিযুক্ত। মালিকানা প্রমাণও হয়নি। সেই কারণ দেখিয়ে রূপো ফেরত দেয়নি জিআরপি। এরপরই জেলা জজের আদালতে আবেদন করে অভিযুক্ত। এসবের মধ্যেই নিম্ন আদালতের বাজেয়াপ্ত হওয়া রূপো ফেরত দেওয়ার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে জেলা জজের আদালতে পৃথক একটি আবেদন করে জিআরপি। সেই আবেদনের বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। শুক্রবার দু’টি আবেদনেরই শুনানি হয়। অভিযুক্তের আইনজীবী গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা না মানা, গ্রেপ্তারের বিষয়ে ধৃতের নিকট আত্মীয়কে না জানানো এবং জিআরপি আবেদনের বিষয়ে জেলা শাসকের অনুমতি নেয়নি বলে সওয়াল করেন। অন্যদিকে, সরকারি আইনজীবী অজয় দে তাঁর সওয়ালে বলেন, গ্রেপ্তারের কারণের বিষয়ে উল্লেখ করে চেক লিস্ট তৈরি হয়। কিন্তু তা হারিয়ে গিয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বাজেয়াপ্ত হওয়া রূপোর মালিকানার বিষয়ে নিশ্চিত না হয়েই এবং তদন্তের অগ্রগতির আগেই বাজেয়াপ্ত হওয়া রূপো ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। বাজেয়াপ্ত হওয়া রূপো চুরির কিনা তাও নির্ধারিত হয়নি। রূপোর মালিকানা সংক্রান্ত নথিপত্র পরীক্ষিত হয়নি। তার আগেই তা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পর এফআইআর রুজু না করে গ্রেপ্তার করা এবং গ্রেপ্তারির ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা না মানার বিষয়টি উল্লেখ করে জেলা জজ ধৃতকে জিআরপির ওসি ও তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করার অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Court Bardhaman Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy