মেঝেতে এখানেই পড়েছিল দেহ। ইনসেটে, হত শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র।
সাত মাস আগে বিয়ে। তার পরে স্ত্রীকে নিয়ে বর্ধমান শহরে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন কলেজ শিক্ষক মহম্মদ আখতার হাসিনুর রহমান (৪০)। বুধবার ওই বাড়িতেই রক্তাক্ত দেহ মিলল তাঁর। ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা ওই শিক্ষকের স্ত্রী সুহানা পারভিন। ছেলের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দে পরিবারও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, হয়তো খুন নয় বেকায়দায় পড়ে গিয়ে চোট পেয়ে থাকতে পারেন ওই শিক্ষক। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ওই শিক্ষক আদতে বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার একডালা গ্রামের বাসিন্দা। গত বছর জুলাই মাসে বর্ধমান উদয়চাঁদ মহিলা কলেজের ভূগোলের শিক্ষক হিসেবে যোগ দিন তিনি। বর্ধমান শহর লাগোয়া কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের উল্টো দিকে একটি বাড়ির তিন তলার ওই মাস থেকেই ভাড়া থাকতে শুরু করেন দম্পতি। জুন মাসে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের।
শিক্ষকের বাবা মুজিবর রহমান জানান, বুধবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ বৌমার ফোন পান তাঁরা। বলা হয়, হোসেনুর রহমান বাথরুমে পড়ে গিয়েছেন। নিঃশ্বাস পড়ছে না। তাড়াতাড়ি বর্ধমানে আসতে বলা হয় তাঁদের। ট্রেন ধরে সকালেই বর্ধমানে ছেলের বাড়িতে হাজির হন মুজিবর রহমান ও তাঁর স্ত্রী হাসিনা বিবি। তাঁদের দাবি, তিন তলায় গিয়ে দেখেন দরজা বাইরে থেকে আটকানো। খুলে ভিতরে ঢুকতেই শোওয়ার ঘরে মেঝেতে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন, দাবি তাঁদের। তবে বৌমা ছিলেন না বাড়িতে। ছেলের মাথার পিছনে ক্ষত দেখে উদয়চাঁদ মহিলা কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিড় জমে যায় এলাকায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মার্বেলের মেঝেতে শুধু গামছা চাপা দেওয়া অবস্থায় দেহ পড়ে আছে ওই শিক্ষকের। মাথার পিছনে ক্ষতের জায়গায় চাপা দেওয়া রয়েছে রক্তমাখা কাপড়। ঘরের বিছানায় কিছু জিনিস ছড়ানো থাকলেও আর কোথাও কোনও রক্তের দাগ পায়নি পুলিশ। বাড়ির অন্য ঘরগুলিও ছিল সাজানো গোছানো। সেখানেও অস্বাভাবিক কিছু মেলেনি, দাবি পুলিশের।
ছেলের নিথর দেহের পাশে বসে হাহাকার করছিলেন হাসিনা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘দিন দশেক আগেও ছেলের কাছে এসে কয়েকদিন থেকে গিয়েছি। কিছু টের পাইনি। স্বামী-স্ত্রী মধ্যে সাধারণ ঝুটঝামেলা হলেও বড় সমস্যা ছিল বলে জানি না। কী ভাবে কী হল, বুঝতে পারছি না।’’ মুজিবর রহমানের অভিযোগ, ‘‘যদি সব স্বাভাবিক থাকত, তাহলে বৌমা এমন করে চলে গেল কেন?’’
পুলিশ জানিয়েছে, দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ওই শিক্ষকের স্ত্রীর মোবাইলের লোকেশন চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা হাজারিবাগের বাসিন্দা। তবে পরিবারের তরফে নির্দিষ্ট অভিযোগ না হওয়ায় পুলিশ আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের দাবি, ওই ঘর থেকে সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। ফলে, খুন কি না বলা যাচ্ছে না। ময়না-তদন্তে রিপোর্ট পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy