আক্রান্ত এক পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চিকিৎসকের কাছে। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’ সাফ করতে গিয়ে কেউ পেয়েছেন ‘হুমকি’। ওই কেন্দ্র তাঁদের পাড়ায় হওয়ায় কেউ বা মুদির দোকানে গিয়ে জিনিসপত্র পাননি! মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানের চুরুলিয়ায় ‘জন-তাণ্ডবের’ পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন নানা জন। গ্রামবাসীর একটা বড় অংশের দাবি, গ্রামে ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’ তৈরির আগে সে ভাবে সচেতনতা-প্রচার করা হয়নি প্রশাসনের তরফে। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।
চুরুলিয়া গ্রামের মাঝামাঝি ‘যুব আবাসে’ করা হয়েছে ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’। কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভিটে থেকে মেরেকেটে একশো মিটার দূরে এই কেন্দ্র। শেখপাড়ার জনৈক বাসিন্দা মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, “এক মুদির দোকানে গিয়েছিলাম। কিন্তু দোকানদার জানালেন, তোমাদের পাড়ায় করোনা আক্রান্তেরা রয়েছেন। তাই তোমাদের কাউকে দোকানে ঢুকতে দিলে অন্য পাড়ার ক্রেতারা দোকানে আসবেন না। প্রশাসনের কোয়রান্টিন কেন্দ্র নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা দরকার ছিল।’’
পাশাপাশি, ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’-এ সাফাইয়ের কাজ করতে গিয়ে ‘হুমকি’র অভিযোগ করেছেন চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শনিবার জামুড়িয়া ব্লক প্রশাসনের নির্দেশে পঞ্চায়েত যুব আবাসে সাফাইয়ের কাজ করে। কিন্তু সোমবার রাতে এলাকারই কয়েকজন ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্রের অনুমতি কেন দেওয়া হল? ফল ভাল হবে না’, এই বলে ফোনে হুমকি দেন।’’
প্রদীপবাবুর দাবি, তিনি তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যুব আবাস পঞ্চায়েতের অধীনে নয়। প্রশাসন থেকে সাফাইয়ের নির্দেশ দিলে তা পঞ্চায়েত মানতে বাধ্য। তবে, তাঁর অভিযোগ, যাঁরা ফোন করেছিলেন, তাঁদের এ সব বলে কোনও লাভ হয়নি। তবে এ সব বিষয়ে তিনি পুলিশ, প্রশাসনের কাছে রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ করেননি বলেই জানান।
এই পরিস্থিতিতে চুরুলিয়া নজরুল আকাডেমির সম্পাদক কাজি রেজাউল করিম বলেন, ‘‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র শুরুর আগেই যাঁদের তাঁদের আপত্তি আছে, তা নিয়ে প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। তা না করে পুলিশের উপরে হামলা মানা যায় না।’’
তবে সচেতনতা-প্রচারে খামতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও (জামুড়িয়া) কৃশাণু রায়ের দাবি, ‘‘সারা রাজ্যের মতোই করোনা-পরিস্থিতি ও কোয়রান্টিন কেন্দ্র নিয়ে এখানেও প্রচার চলছে। তাই সচেতনতা প্রচার না চলার অভিযোগ ঠিক নয়। কেউ মুদির দোকান থেকে জিনিস পাচ্ছেন না, এমন অভিযোগ পাইনি।’’ পাশাপাশি, বিএমওএইচ (আখলপুর) অবিনাশ বেসরা বলেন, ‘‘কোয়রান্টিন কেন্দ্রে কাউকে নিয়ে যাওয়া মানে তিনি করোনা-আক্রান্ত, এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। এটা একটা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।’’
এ দিকে, গ্রামে পুলিশের উপরে হামলার ঘটনার পর থেকেই দেখা যায়, কার্যত সমস্ত বাড়ির দরজা বন্ধ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’-এ বহিরাগতদের রাখা যাবে না। প্রয়োজনে গ্রামের কেউ বাড়ি ফিরলে, তাঁকে সেখানে রাখা যেতে পারে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy