প্রতীকী ছবি।
কোথাও সহনমাত্রার তুলনায় ১৩ গুণ, কোথাও আবার ৮-৯ গুণ। রাজ্যের নানা জায়গায় ভাগীরথী নদীর জলের নমুনা পরীক্ষা করে ‘ফিকাল কলিফর্ম ব্যাকটিরিয়া’র পরিমাণ মিলেছে এমনই, জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওয়েবসাইটে। ‘লকডাউন’ চলাকালীনও নদীতে দূষণের হার এ রকম থাকে কি না, তা দেখতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে পর্ষদ।
করোনা-মোকাবিলায় ‘লকডাউন’ ঘোষণার দিন কয়েক পরে যমুনা নদীর একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, যমুনার কালো জল উধাও, টলটল করছে স্বচ্ছ্ব নীল জল। কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক সে নিয়ে টুইট করেছে, ‘অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্য’। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘লকডাউনের ফলে গঙ্গার দূষণের কী চিত্র, আমরা খুঁজতে শুরু করেছি।’’
কলকারখানা বন্ধ থাকার ফলে শিল্পাঞ্চল এলাকায় নদীতে দূষণ কমার সম্ভাবনা থাকলেও, গ্রামীণ এলাকায় দূষণ কতটা কম হবে তা নিয়ে পর্ষদের কর্তারা সন্দিহান। পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, ‘ফিকাল কলিফর্ম’-এর উৎস নানা প্রাণীর মল এবং কীটনাশক। এ রাজ্যে প্রায় চারশো জনপদে কয়েক কোটি মানুষের বাস হল গঙ্গা তথা ভাগীরথীর ধারে। সেখান থেকে বর্জ্য এসে সরাসরি মিশছে নদীতে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ অপূর্বরতন ঘোষের মতে, ‘‘সে কারণে নানা জায়গায় গঙ্গার জলে অম্লত্ব ও ক্ষারত্বের পরিমাণ বেশি দেখা গিয়েছে। আবার ‘ফিকাল কলিফর্ম’ বা ই-কোলাইয়ের দাপাদাপি বিপদসীমার অনেক উঁচুতে রয়েছে।’’ তাই অনেক এলাকাতেই গঙ্গা বা ভাগীরথী স্নানের উপযুক্ত নয় বলে মনে করেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা।
পরিবেশবিদদের অবশ্য আশা, ‘লকডাউন’-এর ফলে গঙ্গার দূষণ প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যাবে। তাঁদের দাবি, গঙ্গায় মানুষ থেকে পশুর স্নান করার প্রবণতা কমেছে। নদীর ধারে মলমূত্র ত্যাগ করার পরিমাণও কমেছে। গ্রামীণ এলাকায় বাড়ির বর্জ্য নিষ্কাশনও তুলনামূলক কম হচ্ছে। কল-কারখানা বন্ধ থাকায় সেখানকার বর্জ্যও জলে মিশছে না।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন-আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় মনে করছেন, কারখানার বর্জ্য থেকেই গঙ্গার ৪০ শতাংশ এবং অন্য নানা বর্জ্য থেকে আরও ১০ শতাংশ দূষণ কমবে। তবে তাঁর সতর্কবাণী, ‘‘লকডাউনের জেরে দূষণ কমলে উচ্ছ্বাসের কারণ নেই। তার পরেও দূষণ নিয়ন্ত্রণে নজর
দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy