বর্ধমানে গান গাইছেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
কোথাও খাবার বিলি। কোথাও বাড়ি-বাড়ি ওষুধ পৌঁছনো। আবার কোথাও গান গেয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা। করোনা-পরিস্থিতিতে এমন নানা ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে পুলিশের কর্মী-আধিকারিকদের।
পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের একটি গ্রামে এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের প্রমাণ মিলেছে। শনিবার থেকে ওই গ্রামের তিনটি দিক বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দিয়েছে পুলিশ। ব্যারিকেড টপকে যাতায়াত নিষিদ্ধ। বাড়ির বাইরে পা রাখতে নিষেধ করছে পুলিশ। হাত-মাইকের সাহায্যে চলছে সচেতনতা প্রচার। সোমবার থেকে ওই এলাকার প্রায় আড়াইশো পরিবার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পেতে সমস্যায় পড়ে। এর পরেই পুলিশের তরফে প্রতিটি পরিবারকে সিভিক ভলান্টিয়ার, খণ্ডঘোষ থানার নম্বর দিয়ে আসা হয়। তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ। সেই সঙ্গে রান্না করা খাবার দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।
মঙ্গলবার পুলিশ ৫৫টি পরিবারের হাতে রান্না করা খাবার তুলে দিয়েছে। খণ্ডঘোষ থানা জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধান মেনে গ্রামে গিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা খোঁজ নিচ্ছেন। প্রয়োজনীয় জিনিস ব্যারিকেডের বাইরে রেখে দিচ্ছে পুলিশ। সেখান থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বাসিন্দাদের সমস্যার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
জেলার বিভিন্ন শহর এলাকায় অকারণে ভিড় এড়াতে পুলিশ বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাটোয়া ও কালনা থানা থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া জেলার সব শহর অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ। মেমারি থানা ১০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারের একটি দল তৈরি করেছে। বর্ধমান থানাও মঙ্গলবার প্রচার করেছে, হোয়াটস্অ্যাপ নম্বরে প্রেসক্রিপশন পাঠিয়ে দিলে, দোকান থেকে ওষুধ কিনে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। পুলিশ সুপার জানান, বাড়ির বাইরে মানুষজন যাতে কম বেরোন, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত। জেলার ছ’টি পুর এলাকায় এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।
এ সবের মধ্যেই করোনা নিয়ে সাবধান করতে পাড়ায়-পাডায় গিয়ে গানও গাইছেন পুলিশকর্মীরা। বর্ধমান শহরে মহিলা পুলিশ কর্মীদের দেখা যাচ্ছে এই কর্মসূচিতে। বর্ধমানের মহিলা থানার আইসি নন্দিতা সাহা মজুমদার বলেন, ‘‘অফিসার্স কলোনি থেকে আমরা গানের মাধ্যমে মানুষকে করোনা-সচেতনতা শুরু করেছি। অনেকেই এ নিয়ে বিদ্রুপ করছেন। তবু আমরা দমে না গিয়ে প্রচার চালাচ্ছি।’’ তিনি জানান, পরিচিত গানের সুরের কথা বসিয়েছেন তাঁরাই। সেই গানের সঙ্গে করোনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা গানও গাইছেন মহিলা থানার এসআই মিঠু বিশ্বাস, কমলা গঙ্গোপাধ্যায়েরা। বর্ধমানের সঙ্গীতশিল্পী মনিকা ঠাকুর বলেন, ‘‘করোনা দেখিয়ে দিল, পুলিশ সমাজকে কী ভাবে আগলে রাখে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy