অণ্ডাল বাজারে লকডাউনের মধ্যেও ভিড়। নিজস্ব চিত্র
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা। কুলটির নিয়ামতপুর নিউরোড থেকে পূর্ব দিকে জিটি রোড ধরে লছিপুর। উত্তর দিকে সীতারামপুর স্টেশন রোড ধরে উদ্বাস্তু কলোনি ও শিবমন্দির মাঠ। দক্ষিণ দিকে লিথুরিয়া রোড ধরে সুন্দরচক ডাকঘর মোড়, এই বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে এক বারের জন্যও মনে হল না ‘লকডাউন’ চলছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে রাস্তায় বেরিয়েছেন মানুষজন। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই চলছে দোকান-বাজার। একই ছবি ধরা পড়েছে অণ্ডালেও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘লকডাউন-এর চতুর্থ দিনে জটলা রুখতে বিভিন্ন থানার পক্ষ থেকে কড়াকড়ি অবস্থান নেওয়া হয়েছিল। তার পরে এলাকার অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। এর পরে ‘গাঁধীগিরি’ করে মানুষজনকে ঘরের বাইরে না বেরনোর অনুরোধ করা হয়েছিল। মানুষজনের হুঁশ ফিরছে না!’’
সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ নিয়ামতপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পুলিশের তিনটি গাড়ি গোটা অঞ্চলে টহল দিচ্ছে। তার একটিতে বাঁধা মাইকে অনর্গল ‘লকডাউন’-এর বিধিনিষেধ ঘোষণা চলছে। কখনও গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ ভিড় সরাতে উদ্যোগী হচ্ছে। জনতাকে সতর্ক করতে দেখা গিয়েছে ‘নিয়ামতপুর চেম্বার অব কমার্স’-এর সদস্যদেরও। অভিযানে ভিড়ের মাত্রা কিছুটা কমলেও পুলিশ চলে যেতেই সেই পুরনো ছবি ফিরে আসতে শুরু করল।
চেম্বার অব কমার্সের সদস্যদের অভিযোগ, এ সময়ে বাড়িতে থাকা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আবেদনও করা হচ্ছে। অথচ, কিছু মানুষ কোনও প্রয়োজন ছাড়াই শুধু আড্ডা দিতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে জটলা করছেন। ভিড় করছেন বাজারেও। এলাকার কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ মীর হাশিম এ দিন এলাকায় ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের ফের বাড়িতে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সব সময়ে পুলিশ দিয়ে জোর করে হবে না করোনা সংক্রমণ রোখা যাবে না। মানুষকেই সচেতন হতে হবে।’’
এ দিন সকালে নিয়ামতপুর চৌমাথায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে ভিড়ে দাঁড়িয়েছিলেন সুন্দরচকের বাসিন্দা অশীতিপর সুবোধ হাড়ি। ‘লকডাউন’-এ বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন কেন? তিনি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে জনধনের টাকা এসেছে। সে জন্য লাইন দিয়েছি।’’ দেবী মন্দির লাগোয়া একটি রেশন দোকানের সামনে বছর দশেকের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছেন নুরজাহান বিবি। তিনিও বলেন, ‘‘রেশন তুলতে বেরিয়েছি। বিনা পয়সার এই চাল আটা না পেলে খাবার জুটবে না।’’ তবে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়ানো বা মাস্ক পরেননি কেন? সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি।
নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিদিন সকালে বাজার অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে অপ্রয়োজনীয় ভিড় সরানো হচ্ছে। বিশেষ করে দোকানের সামনে কঠোর ভাবে সামাজিক দূরত্ব পালন করানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy