Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

হাসিমুখেই নতুন কাজে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘লকডাউন’ শুরুর আগে, ওই কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে ব্লক প্রশাসন। তাঁদের জানানো হয়, গ্রামে-গ্রামে করোনা নিয়ে সতর্কতা প্রচারে নামতে হবে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২০ ০২:২৬
Share: Save:

প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা, তাঁদের টিকাকরণ—এ ধরনের কিছু কাজ নিয়ে তাঁরা ব্যস্ত থাকেন বছরভর। আপাতত ছেদ পড়েছে সে রুটিনে। বর্তেছে বড় দায়িত্ব। করোনার সংক্রমণ রুখতে এখন দিন-রাত এক করে গ্রামে-গ্রামে ঘুরে প্রচার সারছেন আশাকর্মী ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। সেই সঙ্গে নজর রাখতে হচ্ছে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা বাসিন্দাদের উপরে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘লকডাউন’ শুরুর আগে, ওই কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে ব্লক প্রশাসন। তাঁদের জানানো হয়, গ্রামে-গ্রামে করোনা নিয়ে সতর্কতা প্রচারে নামতে হবে। এরই মধ্যে ভিন্‌ রাজ্য ও বিদেশ থেকে অনেকে গ্রামে ফিরতে থাকেন। দায়িত্ব বাড়ে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। তাঁরা জানান, এক-একটি গ্রাম সংসদে কোথাও দেড়শো, কোথাও আবার শ’তিনেক পরিবারের বাস। এখন বাড়ি-বাড়ি ঘুরে চালাতে হচ্ছে প্রচার। বিশেষ নজর রাখতে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকা মানুষজনের উপরে। তাঁদের বোঝাতে হচ্ছে, এখন কী করা উচিত, কী উচিত নয়।

পূর্বস্থলী ২ ব্লকের শ্রীরামপুর এলাকার আশাকর্মী সুতপা দেবনাথ বলেন, ‘‘দুপুরের কিছুটা সময় ছাড়া, দিনের বাকি সময়টা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। কারও জ্বর, সর্দি, কাশি হয়েছে কি না খোঁজ নিতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দ্রুত রিপোর্ট পাঠাতে হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরকে।’’ তাঁর দাবি, সম্প্রতি নির্দেশ এসেছে, এলাকা থেকে ভিন্‌ রাজ্য বা বিদেশে গিয়ে কারা আটকে রয়েছেন, তার তালিকা তৈরি করতে হবে। কে, কোথায় কাজ করেন তার ঠিকানা, ফোন নম্বর জোগাড় করা হচ্ছে। সুতপাদেবীর মতো অনেক আশাকর্মীই বলছেন, ‘‘পরিশ্রম হচ্ছে ঠিকই। তবে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর জন্য তা হাসি মুখেই করছি আমরা।’’

তবে এই কাজ করতে গিয়ে তাঁদের স্বাভাবিক কাজে কিছুটা ছেদ পড়েছে বলে দাবি করেন অনেক কর্মী। কালনার এক আশাকর্মীর কথায়, ‘‘আগের মতো নিয়মিত অন্তঃসত্তা ও প্রসূতিদের নিয়মিত খোঁজ রাখা যাচ্ছে না। তবে তাঁদের কারও হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।’’ আশাকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা কারও কারও বাড়িতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের মুখে পড়তে হচ্ছে। করোনা নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তা রয়েছে। তবে মঙ্গলবার জেলার অনেক জায়গায় তাঁদের জন্য ‘মাস্ক’, ‘স্যানিটাইজ়ার’-এর মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছেছে।

আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের একাংশ জানান, বাড়িতেও এখন আগের মতো সময় দিতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় ঘোরায় পরিবারের লোকজনও নানা আশঙ্কায় থাকছেন। তবে তাঁরা জানান, বুঝিয়ে-সুজিয়ে তাঁরা পরিজনদের আশ্বস্ত করছেন। পূর্বস্থলীর এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী কণিকা বীর বলেন, ‘‘এখন বাড়িতে থাকা কতটা জরুরি, তা গ্রামে-গ্রামে ঘুরে বলছি মানুষকে। নিজেদের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রেখেই কাজ করার চেষ্টা করছি।’’

মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা যে ভাবে কাজ করছেন তা প্রশংসনীয়।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown Anganwadi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy