পড়াতে ব্যস্ত। নিজস্ব চিত্র
মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ঝাঁপ পড়েছে ক্লাসে। এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত চালু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। এই পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন যাতে বন্ধ না হয়, সে জন্য অনলাইনে ক্লাসের বন্দোবস্ত করেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। জেলার নানা বেসরকারি স্কুল, নাচের স্কুলের মতো এমন উদ্যোগ হয়েছে কালনা কলেজের তরফেও।
বর্ধমানের নবাবহাটের কাছে একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে লকডাউনের পরেই শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের এই ক্লাস করানো হচ্ছে। স্কুলের অধ্যক্ষ সুশান্তকুমার ঘোষ ও প্রশান্ত রাউথ রায়েরা বলেন, ‘‘সপ্তাহখানেক ধরে এই প্রক্রিয়া চলছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বাড়িতে বোর্ড পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মোবাইলে বিশেষ ‘অ্যাপ’ দেওয়া হয়েছে। বাড়িতেই মোবাইলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাস নিচ্ছেন তাঁরা। বাড়িতে বসে অভিভাবকদের মোবাইলে তা শুনছেন ছাত্র। কী পড়ানো হচ্ছে, চাক্ষুষ করতে পারছেন অভিভাবকেরাও।’’
বর্ধমানে জাতীয় সড়কের পাশে আর একটি বেসরকারি স্কুলেও শুরু হয়েছে অনলাইনে ক্লাস। শুধু দশম শ্রেণির জন্য সোম থেকে শুক্রবার চার ঘণ্টা ধরে চারটি করে বিষয়ের ক্লাস হচ্ছে। স্কুলের ডিরেক্টর রাজেশ সুরানা বলেন, ‘‘এই অনলাইন ক্লাস রেকর্ড করা থাকছে। কোনও ছাত্র যদি ক্লাস করতে না পারে, তাহলে সে পরে রেকর্ড দেখে নিতে পারবে।’’
কালনা মহকুমা হাসপাতাল ঘেঁষা একটি বেসরকারি স্কুলেও ‘লকডাউন’ শুরুর পর থেকে শিক্ষকেরা ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ তৈরি করে সেখানে ক্লাসের তথ্য পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছে বলেও জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের তরফে অভিভাবকদের ফোনে একটি অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে নানা তথ্য। বর্ধমানের আরও দু’টি স্কুলেও অনলাইনে পড়াশোনা শুরুর পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেগুলির কর্তৃপক্ষ।
কালনা কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘লকডাউন’ শুরুর পরেই অধ্যক্ষ তাপসকুমার সামন্ত ই-ক্লাস চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হন। এগিয়ে আসেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। বাড়ি থেকে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন তাঁরা। যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীর বাড়িতে কম্পিউটার রয়েছে, তাঁরা অমনলাইনে ক্লাসে যোগ দিচ্ছেন। যাঁদের সে সুযোগ নেই তাঁদের পড়ানোর রেকর্ডিং বা ভিডিয়ো পাঠানো হচ্ছে। অঙ্ক, ইংরেজি, ইতিহাস, পদার্থবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, রসায়ন, এডুকেশন থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান— নানা বিষয়ের ক্লাস চলছে এ ভাবেই। অঙ্কের শিক্ষক অভিষেক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন কলেজ একেবারে পড়াশোনা বন্ধ করে দিলে দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ সিমেস্টারের ছাত্রছাত্রীদের খুব ক্ষতি হয়ে যেত। ই-ক্লাসে ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে ছাত্রছাত্রীদের তরফে।’’ কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রীকে এই ব্যবস্থার মধ্যে আনা গিয়েছে। বাকিদেরও আনার চেষ্টা চলছে।
অন লাইনে ক্লাস করাচ্ছে বর্ধমানের শালবাগান এলাকার একটি নৃত্য প্রশিক্ষণ স্কুলও। সেটির কর্তৃপক্ষ জানান, সপ্তাহে চার দিন বিভিন্ন ভাগে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হচ্ছে মূলত ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’-এর সাহায্যে। প্রশিক্ষক সৌরভ দাস, সৌমি দত্ত রায়েরা বলেন, ‘‘একই সঙ্গে গ্রুপে ছাত্রছাত্রীদের কিছু ‘ডান্স চ্যালেঞ্জ’ বা ‘টাস্ক’ দেওয়া হচ্ছে, যা তারা বাড়িতেই করে গ্রুপে পোস্ট করছে। এর মাধ্যমে নাচের চর্চা বজায় থাকার পাশাপাশি বাড়িতে আটকে থাকার মধ্যে মনও ভাল থাকছে শিক্ষার্থীদের।’’
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy