Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

কলকাতা-ফেরতদের নিয়ে বিশেষ সতর্কতা

জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, কলকাতা থেকে পূর্ব বর্ধমানে ঢোকার পথে জামালপুর, পালশিটের মতো জায়গায় স্বাস্থ্য-শিবির করা হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০৩:২৭
Share: Save:

এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ছ’জনের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ এসেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কলকাতা বা তার সংলগ্ন এলাকার যোগ মিলেছে। তাই এ বার ওই সব এলাকা থেকে আসা মানুষজনের বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার কথা জানাল জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকা থেকে কেউ আসছেন কি না, তা নিয়ে আমরা সতর্ক। একদম নিচু স্তর পর্যন্ত গ্রামে-পাড়ায় পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। জেলায় সব করোনা-পজ়িটিভের সঙ্গে কলকাতার যোগ থাকছে। সে জন্য ফের বাড়ি-বাড়ি খোঁজ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার ভাবনা রয়েছে।’’ জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানান, কলকাতা থেকে পূর্ব বর্ধমানে ঢোকার পথে জামালপুর, পালশিটের মতো জায়গায় স্বাস্থ্য-শিবির করা হবে। সাইকেলে, হেঁটে বা ব্যক্তিগত গাড়িতে এলে, সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তবেই জেলায় ঢুকতে দেওয়া হবে।

খণ্ডঘোষের বাসিন্দা, পেশায় দর্জিশিল্পী থাকতেন কলকাতায়। ‘লকডাউন’-পর্বে মোটরবাইকে সস্ত্রীক গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। তার পরেই তাঁর শরীরে করোনার প্রমাণ মেলে। তাঁর নিকটাত্মীয় এক বালিকাও আক্রান্ত হয়। কাঁকসার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার পরে তাঁরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর পরেই কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালের নার্সের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে পরীক্ষার পরে। তার দু’দিন আগে তিনি বর্ধমান শহরের সুভাষপল্লির বাড়িতে ফেরেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মেমারির দু’জন কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। মেমারি শহরের এক যুবক কাঁকসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মেমারির পাহাড়হাটির এক মহিলা কলকাতার ঢাকুরিয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মেমারির যুবকের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে থাকা সবার লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। এখনও পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি।

জেলায় করোনা-আক্রান্তের তালিকায় শেষ সংযোজন হয়েছে কেতুগ্রাম ১ ব্লকের রতনপুর। এই গ্রামের এক তরুণী রাজারহাটে একটি ক্যানসার হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্সের সহ-চালক ছিলেন। সেখানে লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য দিয়ে রবিবার গ্রামে ফেরেন। রাতে জানা যায় তাঁর রিপোর্ট ‘পজিটিভ’।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই পরিস্থিতিতে কলকাতা তো বটেই, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা ও হাওড়া থেকে কেউ এসেছেন শুনলেই পাড়া বা গ্রামের বাসিন্দারা অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে যাচ্ছেন। সোমবারই বর্ধমানের দিঘিরপুল, কালীবাজার, মঙ্গলকোট, রায়না, জামালপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় ওই সব এলাকা থেকে লোকজন এসে ‘লুকিয়ে’ রয়েছেন দাবি করে বাড়ি পর্যন্ত ঘেরাও করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পুলিশ গিয়ে ‘লুকিয়ে’ থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠায়। প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে জেলায় ঢোকার পরেও কাউকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যায় কি না, সে প্রশ্ন তোলেন কেউ-কেউ। জেলাশাসক বলেন, ‘‘এক জনের জন্য অন্যদের সমস্যায় ফেলা যায় না। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে সাত দিনের জন্য পাঠানো হবে।’’

এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে বিশেষ ট্রেনে বেঙ্গালুরু থেকে পূর্ব বর্ধমানের ১২৬ জন যাত্রী ফিরেছেন। বাঁকুড়া স্টেশনে নামার পরে, তাঁদের একপ্রস্ত স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। তার পরে ছ’টি বাসে করে বর্ধমানের নবাবহাটে আনা হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, সেখানে অভ্যর্থনা জানিয়ে ফের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তাঁদের গৃহ-নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিন বিকেলে ভেল্লোর থেকে ১১৩ জনের একটি দল হাওড়া স্টেশনে নামে। সেখান থেকে তাঁদের রাতে নবাবহাটে আনা হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy