Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West bengal

সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গেই বাড়ছে মাস্কে অনীহা

প্রায় প্রতিদিনই একশোর আশপাশে করোনা আক্রান্ত ধরা পড়ছে জেলায়। তার পরেও কতটা সতর্ক সাধারণ মানুষজন, হাসপাতালের ‘সারি’ ওয়ার্ডে দেখা যাচ্ছে কেমন চিত্র, খোঁজ নিল আনন্দবাজার।প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, মাস্ক পরা ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করার জন্য নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে। তার পরেও যে হুঁশ ফিরছে না অনেকের, প্রতিদিন বিসি রোডে চোখ রাখলেই তা ধরা পড়ে।

মুখ না ঢেকেই বাসে যাত্রা।ছবি: উদিত সিংহ

মুখ না ঢেকেই বাসে যাত্রা।ছবি: উদিত সিংহ

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২০ ০২:৪২
Share: Save:

আক্রান্তের সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়ছিল। কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা ছিল রাজ্যের অন্য বেশ কিছু জেলার থেকে কম। অক্টোবরে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে তা-ও। কিন্তু তা সত্ত্বেও হুঁশ ফিরছে না পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের, মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা থেকে ডাক্তারেরা। রাস্তাঘাট থেকে বাজার-দোকান, মুখে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা, দূরত্ব-বিধির বালাই না রাখার ছবি দেখা যাচ্ছে জেলা জুড়েই। নজরদারিও ঢিলেঢালা, অভিযোগ বাসিন্দাদের অনেকের।

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীও মেনে নিচ্ছেন, করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এই জেলায়। গত পাঁচ মাসে করোনা-সংক্রমিত হয়ে যত জন মারা গিয়েছেন, প্রায় সমসংখ্যক মৃত্যু ঘটেছে গত মাসখানেকে। মৃতদের তালিকায় নাম রয়েছে জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষেরও। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমাদের আরও কড়া হতে হবে। জেলার আধিকারিকদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করে পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মতে, মানুষ সচেতন না হলে করোনা-সংক্রমণ ঠেকানো প্রায় অসম্ভব। পরীক্ষা বেশি হলে সংক্রমণের সংখ্যা আরও বাড়বে, মনে করছেন তাঁরা।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে জানাচ্ছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার যে বাড়ছে, তা সরকারি রিপোর্টেই উঠে আসছে। বুধবার পর্যন্ত মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১.৫৬ শতাংশে। সংক্রমণের হার মাঝে-মধ্যেই ৫ শতাংশ অতিক্রম করছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, শুধু পুজোয় ভিড় নয়, সংক্রমণ বৃদ্ধির পিছনে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক কর্মসূচিগুলিও অনেকটা দায়ী। ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে যোগ দিতে গিয়ে শাসক দলের অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভিড় হয়, এমন সব রকম কর্মসূচি বন্ধ করা উচিত। এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘প্রশাসনিক ঢিলেমি বন্ধ করতে হবে। মানুষকেও সচেতন হতে হবে। তবেই এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারব আমরা।’’

দোকান-বাজারে ভিড় হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকের মাস্ক পরার বিষয়ে অনীহা দেখা গিয়েছে জেলার নানা প্রান্তেই। তেমনই দূরপাল্লার বাসের চালক, কর্মচারী ও যাত্রীদের মধ্যেও মাস্ক পরার উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। সচেতন যাত্রীদের অভিযোগ, এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেই চালক-খালাসিরা চড়া মেজাজে জবাব দেন, ‘‘ও সব পরে বাস চালানো কত ঝক্কির, বুঝবেন না। যাত্রীরা মাস্ক না পরলে আমরা কী করব? বাসে তুলব না, এ কথা কি বলা যায়?’’ মাস্ক না পরার বিষয়ে নানা অজুহাত শোনা যায় যাত্রীদের মুখেও। অথচ, বাসে উঠতে হলেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছিল পরিবহণ দফতর।

প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, মাস্ক পরা ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করার জন্য নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে। বর্ধমান পুরসভা জানায়, কার্জন গেটের কাছে পুরসভার তরফেও ক্রমাগত প্রচার চালানো হচ্ছে। তার পরেও যে হুঁশ ফিরছে না অনেকের, প্রতিদিন বিসি রোডে চোখ রাখলেই তা ধরা পড়ে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West bengal Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy