প্রতীকী ছবি
অনেক ক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার রিপোর্ট মিলছে না ‘আরটি-পিসিআর’ পরীক্ষার সঙ্গে। তাই করোনা নির্ণয়ে ‘অ্যান্টিজেন’ পরীক্ষার ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মধ্যে। সে কারণে ‘অ্যান্টিজেন’ পরীক্ষার হার কমিয়ে ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্রে পরীক্ষা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, দাবি পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। কর্তাদের দাবি, তাতে ভুল (ফল্স) রিপোর্ট কম হওয়ার সম্ভাবনা। গত সপ্তাহখানেক ধরে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার হার কমতেই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও তুলনায় কমতে শুরু করেছে।
পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “জেলায় করোনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে। হাসপাতালগুলিতেও জরুরি ভিত্তিতে ছাড়া, অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে না। তার বদলে আরটি-পিসিআর যন্ত্রে পরীক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এখন জেলায় করোনা আক্রান্তের হার ৩.৯ শতাংশ। সুস্থতার হার প্রায় ৯০ শতাংশ। তবে মৃত্যুর হার সামান্য বেড়ে ১.৫১ শতাংশ হয়েছে।
জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় প্রতিদিন দেড় হাজারের বেশি ‘অ্যান্টিজেন’ পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্রের জন্য নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ছ’শোর আশপাশে। পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে আশির কাছাকাছি। বেশ কয়েকবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ‘সেঞ্চুরি’ও পার করেছে। অথচ, দেখা যাচ্ছে, তুলনামূলক ভাবে পূর্ব বর্ধমানের থেকে এগিয়ে থাকা করোনা-আক্রান্ত জেলায় ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্টের হার কমতে শুরু করেছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এ নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কথা বলা হয়। বেশ কয়েকটি উদাহরণ তুলে জানানো হয়, ‘অ্যান্টিজেন’ পরীক্ষার রিপোর্টের সঙ্গে ‘আরটি-পিসিআর’ পরীক্ষার রিপোর্ট মিলছে না। তাতে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তখনই ‘অ্যান্টিজেন’ পরীক্ষার হার কমানোর কথা বলা হয় বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত জেলায় প্রতিদিন প্রায় ১,৮০০ নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে তা দাঁড়ায় প্রায় দেড় হাজারে। এখন সেটা এক হাজারে নেমে এসেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে জেলায় করোনা পজ়িটিভের গড় কমতে শুরু করেছে। সে দিন জেলায় ৫০ জন আক্রান্তের সন্ধান মেলে। তার পর থেকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০-এর ঘরেই ঘোরাফেরা করেছে আক্রান্তের সংখ্যা। শুক্রবার ৩৯ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। শনিবার অবশ্য ৯৮ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়েছে হাজার থেকে এগারোশোর মধ্যে। শুক্রবার সেই সংখ্যা ছিল ৮১৫। তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে উপসর্গ থাকা এবং না থাকা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সমান। যেমন, ২৭ সেপ্টম্বর ৫০ জন আক্রান্তের মধ্যে উপসর্গ ছিল ২৪ জনের। তার আগের দিন ৬৭ জনের মধ্যে উপসর্গ ছিল ৩৩ জনের। আবার শুক্রবারের রিপোর্টে ৩৯ জনের মধ্যে উপসর্গ-যুক্ত ১৭ জন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘করোনা আক্রান্তদের মধ্যে উপসর্গহীনের সংখ্যা বেশি ছিল। অ্যান্টিজেন পরীক্ষার হার কমতেই উপসর্গহীনের সংখ্যাও কমছে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy