— প্রতীকী চিত্র।
পর পর হনুমানের মৃত্যু পরিকল্পিত ভাবে ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করলেন বন দফতরের আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার কেতুগ্রামের শাঁখাই গ্রামে যান তাঁরা। তদন্তের পরে সাগর দাস নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার নামে থানায় অভিযোগও হয়। আধিকারিকদের দাবি, খাবারে মিশ মিশিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে হনুমানগুলিকে। যদিও ওই নেতার দাবি, ‘‘আমার নামে পুরোপুরি মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। পুরোটাই বিজেপির চক্রান্ত।’’
এ দিন যে কোনও বন্যপ্রাণীর উপরেই অত্যাচার না করার জন্য সচেতনতা প্রচার করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এলাকা ছেড়ে না যেতেও বলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, দোষী যেন কোনও ভাবেই ছাড়া না পায়। পশুপ্রেমী তথা প্রাক্তন বিধায়ক অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়ও উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিনে দশটি হনুমানের মৃত্যু হয়েছে ওই এলাকায়। ময়না তদন্তে তাদের দেহে বিষক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে। মৃত হনুমানগুলির মধ্যে ছ’টি মেয়ে হনুমান ছিল। জানা গিয়েছে, বন্যপ্রাণী হত্যাকান্ড আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তির দোষ প্রমাণিত হলে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানার পাশাপাশি ৫ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ বর্ধমানের বন বিভাগের এক আধিকারিক সৌগত মুখ্যোপাধ্যায় শাঁখাই গ্রামে যান। ছিলেন বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জের আধিকারিক শিবপ্রসাদ সিংহ। প্রথমেই তাঁরা অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্ষের জমিতে গিয়ে তদন্ত করেন। সেখানেই অভিযুক্ত সাগর দাসের বক্তব্য শোনা হয়। পরে গ্রামের নানা দিক ঘুরে ঘুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। কোনও হনুমান পাগলের মতো আচরণ করে কি না বা কারও উপরে হামলা করেছে কি না তা জানতে চাওয়া হয়। গ্রামবাসী জানান, কোনও দিনই হনুমান হামলা করেনি। প্রতিদিনই খাবারের খোঁজে জমিতে আসত ওরা। চলেও যেত। তবে গত দু’দিনে বেঁচে থাকা কয়েকটি হনুমান ও শাবককে গাছে গাছে ঘুরতে দেখা গেলেও নীচে নামতে দেখা যায়নি।
শাঁখাই গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথ বৈদ্য বলেন, “আমাদের ধারণা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি হনুমানকে কলার সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। বন দফতর ও পুলিশ সক্রিয় হয়ে দোষীর উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক।” প্রাণীর অধিকার নিয়ে কাজ করা দেবশ্রী রায় বলেন, “এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার সকলের। রীতিমতো পরিকল্পনা করে হনুমান দলকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দোষীর শাস্তি হোক।”
বন দফতরের বর্ধমান বিভাগের ওই আধিকারিক সৌগত মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, “হনুমানগুলিকে খাবারের সঙ্গে জোরালো বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়েছে বলেই মনে করছি আমরা। ওই দলে একটি গর্ভবতী হনুমানও ছিল। এই অপরাধমূলক কাজের জন্য জেল ও জরিমানা দুই হবে। আমরা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তদন্তের স্বার্থে এলাকা ছেড়ে যেতে নিষেধ করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy