Advertisement
০৬ জুলাই ২০২৪
Bardhaman University

অবশেষে পরীক্ষা শুরু, বিতর্ক মূল্যায়ন পদ্ধতিতে

এ দিকে, দ্রুত ফল বার করার লক্ষ্যে খাতা দেখার নিয়মে পরিবর্তনের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। তা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়ে গিয়েছে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩১
Share: Save:

দ্বিতীয় সিমেস্টারের ক্লাস মাসখানেক আগে শুরু হয়েছে। কিন্তু, প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা হয়নি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ছ’মাস পরে, দ্বিতীয় সিমেস্টারের ক্লাস চলাকালীন বুধবার থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হল।

এ দিকে, দ্রুত ফল বার করার লক্ষ্যে খাতা দেখার নিয়মে পরিবর্তনের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। তা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকেরা নিয়ম পরিবর্তনে আপত্তি জানাতে শুরু করেছেন। সেই আঁচ পেয়ে আগামীকাল, শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সিমেস্টার পরীক্ষা সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও বীরভূমের ৭৩টি কলেজের প্রায় ৫৩ হাজার পড়ুয়া বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সিমেস্টার পরীক্ষা দিচ্ছে। জাতীয় শিক্ষা নীতির প্রয়োগ, নির্বাচন-সহ নানা কারণে প্রথম সিমেস্টার প্রায় ৬ মাস পিছিয়ে গিয়েছে। অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক করে কী ভাবে দ্রুত ফল বের করা যায়, সেই নিয়ে আলোচনা করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে অনেক অধ্যক্ষের আপত্তি থাকার পরেও ঠিক হয়, যে কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্র পড়বে, সেই কলেজের শিক্ষকরাই সংশ্লিষ্ট কলেজের পরীক্ষার্থীদের মূল বিষয় (মেজর)-র খাতা দেখে নম্বর নির্দিষ্ট পোর্টালে ‘আপলোড’ করে দেবেন। তবে কোনও বিষয়ের শিক্ষক না থাকলে পরীক্ষা-কমিটি সেই খাতাগুলি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেবে। আর ‘মাইনর’ বিষয়ের পরীক্ষা ‘ওএমআর’ শিটে হবে। সেগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে।

শিক্ষকদের বড় অংশের দাবি, খাতা যদি পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকরা দেখেন, তা হলে কোনও গোপনীয়তা থাকবে না। পরীক্ষকদের উপরে ‘চাপ’ বাড়বে। ছাত্র-দৌরাত্ম্য, গৃহ-শিক্ষকদের থেকেও নানা সমস্যা আসতে পারে। আর যে সব কলেজে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এক বা দু’জন শিক্ষক রয়েছেন, সেই সব শিক্ষকরা আরও ‘ফাঁপড়ে’ পড়বেন। রায়নার শ্যামসুন্দর কলেজের অধ্যক্ষ গৌরীশঙ্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। এখন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকরাও আপত্তি জানাচ্ছেন।” কলেজ-শিক্ষকদের অন্যতম বামপন্থী সংগঠন ‘ওয়েবকুটার’ নেতা প্রদ্যুৎ মাইতি বলেন, “আমরা তীব্র আপত্তি জানিয়েছি। এর ফলে যোগ্যদের মূল্যায়ন হবে না। যারা পেশিশক্তির আস্ফালন দেখাবে, তাদের বেশি নম্বর উঠবে। শিক্ষকদের এমন সুরক্ষাহীন অবস্থায় ফেলে দেওয়ার অধিকার কারও আছে কী?”

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা-সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির সদস্য তথা জেলা ‘ওয়েবকুপা’র সম্পাদক শ্রীধর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরীক্ষার ফল দ্রুত বের করতে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এখন শিক্ষকদের মধ্যে থেকে আপত্তি আসছে। তিনটে জেলার শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতার কথা বললে ভেবে দেখার দরকার আছে। শুক্রবার বৈঠক ডাকতে বলা হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক অনিন্দ্যজ্যোতি পালের মন্তব্য, “আগেও এমন পদ্ধতিতে খাতা দেখা হয়েছে। এখন আপত্তি থাকলে সাধারণ পদ্ধতিতেই ফিরে যেতে হবে। তাতে ফল বের হতে সময় লাগতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman universiy Semester Exam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE