Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
controversy

রেলের উচ্ছেদ নোটিস ঘিরে তরজা বরাকরে

বরাকর নদের পাড়ে, রেলসেতু লাগোয়া আসানসোল পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় প্রায় ৪০ বছর আগে বস্তিটি তৈরি হয়েছিল। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই দিনমজুরি করেন।

এই এলাকা থেকেই উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছে।

এই এলাকা থেকেই উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:৩১
Share: Save:

ফ্রেট করিডর তৈরি করতে সংস্থার জমিতে থাকা বরাকর মাদ্রাসিপাড়ার ৮০টি পরিবারকে উঠে যাওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে রেল। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থানীয়দের উঠে যাওয়ার সময়সীমা ছিল। কিন্তু শনিবার পর্যন্তও কেউ এলাকা ছেড়ে ওঠেননি বলেই দেখা গিয়েছে। এ দিকে, ওই এলাকার বাসিন্দারা রেলের কাছে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন। সে সঙ্গে, আসানসোল পুরসভার কাছে প্রাধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়িও চেয়েছেন।

বরাকর নদের পাড়ে, রেলসেতু লাগোয়া আসানসোল পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় প্রায় ৪০ বছর আগে বস্তিটি তৈরি হয়েছিল। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই দিনমজুরি করেন। একদা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত কয়েক জনও রয়েছেন এখানে। যদিও তাঁরা পুরোপুরি রোগমুক্ত বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এই সব পরিবারগুলিকেই রেল উঠে যাওয়ার নোটিস দিয়েছে।

কেন এমন নোটিস? রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শুধুমাত্র পণ্যবাহী ট্রেন চলাতে পৃথক রেললাইন পাততে হবে। তাই এই ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর তৈরি করা হচ্ছে। বরাকরের রেল সেতুর পাশে আরও একটি সেতু তৈরি দরকার। সে জন্য জমি প্রয়োজন। তাই রেলের জমি দখল করে গড়ে ওঠা ওই বস্তি খালি করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।

এ দিকে, উচ্ছেদের নোটিস পাওয়া বীরু জৈন, বঙ্গারু তাঁতি, কান্তারাম কোনারদের মতো কয়েক জন বলেন, “এমন শীতের দিনে আচমকা উঠে যেতে বলেছে। কোথায় যাব আমরা।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনের প্রতিক্রিয়া, “ভিক্ষাবৃত্তি করে বেঁচে আছি। সরকারি খাস জমি ভেবে এখানে ঝুপড়ি বানিয়ে থাকি। কিন্তু রেল নিজের জমি বলছে। জানি না,কী হবে।”

এ দিকে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। সিপিএম প্রভাবিত ‘বস্তি উন্নয়ন কমিটি’র নেতা সুজিত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বস্তিবাসীরা সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছেন। রেলের দাবি ঠিক নয়। জোর করে উচ্ছেদের চেষ্টা হলে প্রতিরোধ হবে।” তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়েরও প্রতিক্রিয়া, “গরিব মানুষকে গৃহহীণ করার প্রক্রিয়া রোখা হবে।” যদিও,বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সুব্রত মিশ্রের তোপ, “রাজ্যের উন্নয়ন করতে চাইছে কেন্দ্র। কিন্তু বিরোধীরা ক্ষুদ্র রাজনীতি করে তাতে বাধা দিচ্ছেন। বস্তিবাসীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি বানিয়ে দিকআসানসোল পুরসভা।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদ্রাসিপাড়ার বস্তিতে বসবাসকারী ৮০টি পরিবারের জন্য ২০১৯-এ জলের পাইপলাইন পেতে গৃহ-সংযোগ দিয়েছে আসানসোল পুরসভা। পুরসভা বিদ্যুৎ সংযোগেরও ব্যবস্থা করেছে। কাউন্সিলর রাধা সিংহ বলেন, “যে জমিতে বস্তি গড়ে উঠেছে, সেটি রাজ্য সরকারের জমি। সে জন্য সেখানে জলের পাইপ পাতা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। রেলের দাবি ঠিক নয়।” তাঁর দাবি, বস্তির বাসিন্দাদের জন্য ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পের অধীনে বাড়ি তৈরির জন্য গত বোর্ড বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্টও তৈরি করা হয়েছে। যদিও, বস্তিটি যে জমিতে সেটি রাজ্য সরকারের খাসজমি বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সে দাবির সঙ্গে সহমত নন রেল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, জমিটি রেলেরই।

অন্য বিষয়গুলি:

controversy Notice Eviction Barakar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy